Woodland Tree Peel and Stick Giant Wall Decals

 

RoomMates Patina Vie Woodland Tree Peel and Stick Giant Wall Decals

 
 

 
 
 
 
 

 

Product Description

Walls instantly come to life with patina vie woodland tree peel and stick giant wall Decals by RoomMates decor. Complete with 74 wall Decals, spread this decorative theme throughout an entire room in seconds. The application process is fast and easy. Simply peel and stick Decals to any smooth, flat surface. Remove, reposition, and reuse as often as needed while keeping walls and Decals completely safe. Recreate this look in your room today with RoomMates.

From the Manufacturer

Since 2006, RoomMates, the world’s largest manufacturer of peel and stick decorative products, has enabled consumers across the globe to transform their walls and other room accessories quickly, effortlessly and affordably.
RoomMates offers the largest, most varied (and we like to think “coolest”) selection of Wall Decals and Peel & Stick Wallpapers that install, reposition and remove in seconds without ever leaving any sticky residue or damage to the surface. Our Peel & Stick StickTiles™ enable you to create a backsplash in minutes giving you the opportunity for a fun, fast, easy and always great-looking room/accessory make-over. Just Peel, Stick… Done!
Turn an ordinary space, furniture or accessory into anything but ordinary with RoomMates

Story & Poem

ধুম্রজাল
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
তারপর সেই সীমাহীন পথ ,
দ্ব্যর্থহীন ভাবনা , ক্লান্তহীন ছুটে চলা ।
নৈঃশব্দের রাত্রি মাড়িয়ে আলোর মিছিল অভিমুখে ।
পুঞ্জিভূত বিষাদ আর অযুত অপ্রাপ্তিকে দূরে ঠেলে ,
এগিয়ে চলে মহাকালের পথিক , মহাজাগতিক ধুম্রজাল সরিয়ে ।
তার আঁখিপটে এক নান্দনিক মহাকাব্যিক জলছবি ।
মহাকালের গর্ভে দ্রবীভূত সময়কে ফ্রেমবন্দি করার নিগূঢ় প্রয়াস ।
তার উচ্চারণ , মনোহর চেতনার দ্যুতি বিস্তৃত
অণু হতে পরমাণুতে , শুন্য থেকে মহাশুন্যময় ।  
 
 
-------------------------------------------------------------------
 
 
শুদ্ধ আলোচনা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
একটা কবিতা লিখব বলে কাটিয়েছি কত নির্ঘুম রাত
গদ্যে পদ্যে ছন্দ লয়ে হয়ে যায় সব গোজামিল ,
শুরু হয় নতুন প্রভাত ।
একটা কবিতা লিখব বলে নানা চিন্তায় ডুব দেয় মন
মনে হয় কোন ভিন্নার্থের , অবাধ বিচরণ ।
হারিয়ে যায় অন্তর্নিহিত ভাব , ভুল সুরে ডেকে যায় বনের টিয়ে ।
বিস্তীর্ণ মাঠ ফসলের ক্ষেত বিকেলের সূর্যের লাল আভায়
কবিতা হয়ে ওঠে ভীত ।
কিন্তু কবি সবকিছুকে উপেক্ষা করে সাজাতে চায় পঙক্তিমালা
যেন সৃষ্টি হয় একটি অমর কাব্য , পরিহাসের বদলে যেন কবি
হয়ে ওঠে পাঠকের শুদ্ধ আলোচনা ।
 
 
------------------------------------------------- 
 
 
 
এই হাত
কবি : মতিন রায়হান
 
এই হাত শুধু শাখা -প্রশাখা নয়
ছুঁতে চায় মূল কাণ্ডসহ সমগ্র শরীর
শরীরের জন্যে কাঁদে শরীরের শিরা-উপশিরা
রহস্য আড়ালে থাকুক-
জীবনের গোপন ইচ্ছের মতো
সন্ধ্যাভাষার সমূহ পদাবলি
হে রাজ্ঞী, পাঠ করো বিনিদ্র রাতে
নিবিড় অধ্যয়ন ছাড়া সবকিছু রসাতলে !
 
নদীরও টান আছে গভীর গহিনে
সমুদ্রমন্থনে উত্থিত জীবনের বীজ
সম্পর্কের সুতোয় গেঁথে রাখে
অস্তিত্বের দিবস-রজনি
এই হাত শুশ্রূষার-
এই প্রেম প্রার্থনার নদী হয়ে দূরে বয়ে যায়
নৌকাবাইচের গল্প তোলা থাকুক আজ
নকশি শিকায়...
 
--------------------------------------------
 
 
 
একটি সোনালী সারসের খোঁজে
কবি : তারিফা হায়দার
 
শরতের আকাশে উড়ে যাওয়া পেঁজা তুলোর মত
আমিও মেঘ হয়ে উড়ে যাই অন্তহীন ।
পেছনে পড়ে থাকে আমার শৈশব-
অবুঝ মেয়ে বেলা, পুতুল খেলা, কানামাছি ।
বিষাদকে জেড়ে ফেলি-
ডানা ঝাপটানো ফিনিক্স পাখির মত,
বুকের খাঁজে লুকিয়ে রাখি-
ভুল ঠিকানার চিঠি, রক্তাক্ত গোলাপের পাঁপড়ি,
মিথ্যা আশ্বাসের মমি ।
একটি বিশ্বাসের কাঁধে মাথা রাখবো বলে
দুর্গম পথ পাড়ি দেই-
ঠিকানা জানা নেই, তবুও
একটি সোনালী সারসের খোঁজে ছুটে বেড়াই অনন্তকাল
 পূর্ব থেকে পশ্চিম, ক্লান্তিহীন...
 
 
--------------------------------------------------------
 
 
বেদনার আর্দ্রতা
কবি : ইফতেখার হালিম
 
ইচ্ছে করে সবুজ ঘাসের মমতা পায়ে জড়িয়ে
কলমির ঘ্রাণ নাকে শুঁকে
ক্ষেতের আইলে মিটাই গোধূলি আনন্দ ।
মেখে ভাঙি শহরের অহংকার
আঙুলের স্পর্শে উপভোগ করি
                            ফসলের যৌবন-
                            ফড়িংয়ের উল্লাস-
ঔষধী বায়ু টেনে নেই নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে
প্রকৃতির ভালোবাসায় শুকাই বেদনার আর্দ্রতা ।
 
শিশিরের জল-
আরেক দল কলসের ফুলের মধু পানে
তৃষ্ণা ভুলি-
শিশু ভুলি-
শিশু হাসি ঠোঁটে মেখে ।
 
 
------------------------------------------------------------------------- 
 
 
পলাশপ্রিয়া
কবি : সুজাতা চক্রবর্তী
 
শাড়ির ভাঁজে বেলোয়ারি ফাগুন, ঠোঁটের কোনে নিখাঁদ কিশোরী বোল
সেবার যখন শান্তিনিকেতনে, পৌষ পেরিয়ে রবিঠাকুরের দোল...
 
কোপাই -অজয় কৃষ্ণচূড়ার বাঁকে, ধামসা-মাদল সোনাঝুরির হাট
সবুজ টিলার অভিমানী বুকে, দিগন্তজোড়া লাল ফাগুয়ার মাঠ...
 
সাতকাহনে প্রেমিক বাজায় বাঁশি, ঘুম ঘুম চোখে কৃষ্ণকলির নাম
কোমর চুঁইয়ে উথলে ওঠে ঢেউ
জীবন জোড়া সুখের অভিযান...
 
বছর ঘুরে সেই ফাগুয়ার দেশ, বাঁকের বাঁশি একাই বাজে গোঠে
ঘুম ভাঙেনি কৃষ্ণকলির আর
রঙিন নেশায় বোল ধরেনি ঠোঁটে...

জগৎ জোড়া তোমার আসন পাতা,
বিদেহী প্রেমেই আকুল কর হিয়া
নষ্ট চাঁদের রঙ মেখেছি গায়ে-
মাদল তালে দুলছে পলাশপ্রিয়া...
 
 
----------------------------------------------
 
 
নদী তো নারী
কবি : তাহমিনা বেগম 
 
বিভ্রমের ঘোরে
নদী হারায় নদের বুকে
নদ কৃত্রিমতার মোড়কে
নদী তো নারী..
বুঝে না কোথায় উর্বরপলি
নির্ভার হয় ভেবে..
 
খোয়াবে-
 
কোথায় পলি !
বিভ্রম কাটে চারদিকে শূন্যতার থলি
ক্রন্দসী নদী , যেন নারীরই রূপ
কান্নারা মেঘ হয় আকাশও নিশ্চুপ
ক্রমে বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে ঝরঝর ঝরে
বাজখাই শব্দে নদ উপহাসে হাসে ।
 
 
----------------------------------------- 
 
 
চলো, কোথাও পালিয়ে যাই
কবি : খালেদ হোসাইন
 
তুমি এখন কী করছো ?
-অপেক্ষা ।
 
মধ্যরাত । দূর থেকে কি
ভেসে আসবে বাঁশির সুর ?
 
দূর কিন্তু অনেক দূর !
 
আজব জীবন । ফুরিয়ে যায়
এক পলকে ।
 
কিন্তু জীবন হিজিবিজি
অনেক পাহাড় , অনেক সাগর
পেরুতে হয় , বেরুতে হয় শেকল ছিঁড়ে-
সিদ্ধাচার্য হতে হলেও
বিদ্ধ হবে নানান তিরে
 
বিষমাখা তির বিষমাখা তির
রক্তক্ষরণ জ্যান্তে মরণ
 
ভাল্লাগে না বন-বনানি
নদীর পানি বাজ-বিজুলি
চলো , কোথাও পালিয়ে যাই
নতুন দ্বীপে
 
একটা নতুন মশাল জ্বালি-
নতুন আলো
তোমাকে খুব বাসবো ভালো
নতুন জীবন ছড়িয়ে দেবো
দিক-দিগন্তে-

এসো , আমরা মিলিত হই
সে অনন্তে !
 
 
----------------------------------------
 
 
এসো অন্দরে যাই
কবি : রীনা তালুকদার
 
শীতালী লাওয়ের ডেগা ডগার কুঁড়ি থেকে
বাসন্তিক ডালিম গাছে ফুল ফুটলে
এক চিরন্তন আজব ফুল
এই মায়াবী ফুল নিয়ে চৌদ্দ উত্তরাধিকারীর
জীবনযুদ্ধ জীবনভর পৃথিবীর গ্রহে
কেউ গাছ সামলায় কেউ আন্তরিকতার ফুল
ফুল ঝরলে গাছ বায় অন্য কুঁড়িতে
টেস্টোস্টেরণের তড়িৎ তাড়না-
লোকে বলে বয়সের বড় বেশী বাড়াবাড়ি
কুলবধূ কুল রাখে না শ্যাম রাখে
গভীর থেকে গভীরতম মারিয়ানা বিন্দুতে
জলছাপের জলে জলে জলের দাপাদাপি
ফোর ফর্ট্রি ভোল্টেজ
উত্তাল যমুনার জলস্রোত ডাকে
অন্দরে যাই এসো...
 
 
----------------------------------------
 
 
শাহাবাগ স্কয়ার
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
লাখো মানুষের স্রোত আজ
যেন সব মিলে মিশে একাকার ,
ছিনিয়ে আনবো সবাই আমরা
আমাদের ন্যায্য অধিকার ।
 
রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমে আছে যত
অন্যায় আর অবিচার
আমাদের এই স্বীয় ভূখণ্ডে
হতে হবে তার সুবিচার ।
 
যতই তোমাদের ছাড় দিয়েছি
ততই গিয়েছো বেড়ে
ভুলে গিয়েছো প্রজন্ম আজ
মানবিকতার তরে ।
 
বঞ্চনা আর গঞ্জনা যত
দিয়েছো আমাদের চাপিয়ে
মৌলিক সব অধিকার আদায়ে
আমরা পড়েছি ঝাঁপিয়ে ।
 
বিপ্লব আমরা আগেও ঘটিয়েছি
এখনো যথারীতি ,
সবার জন্য দেশ মাতৃকা
চাই বিশুদ্ধ রাজনীতি ।

-------------------------------- 
 
 
সুন্দর
কবি : অমর চক্রবর্তী 
 
বাসমতী চাল দেখলে আমার প্রিয়াঙ্কার কথা মনে পড়ে,
সেও এমন ফর্সা তন্বী সুগন্ধময়ী

খাদ্যবস্তুর সাথে নারীর তুলনা
শুনলে রেগে যাবেন তসলিমারা
নির্মলেন্দু গুণ যদিও লিখেছেন
চালের আড়ত দেখলে আমার নগ্ন নারী ভ্রম হয়'
 
নির্মলেন্দু ঠিকই লিখেছেন
সুন্দরের সাথে সুন্দরের তুলনা হয়
যে না খেয়ে আছে তাকে জিজ্ঞেস করো
সে বলবে যশোয়া ধানের চাল আমার কাছে
পারস্য উপন্যাসের হূরী পরী শ্রেষ্ঠ সুন্দরী । 
 
 
 --------------------------------------------
 
গোপন মাধুরী
কবি : ফালগুণী ভট্টাচার্য
 
রচনা দুর্বল হলে
কেউ কেউ দিতে চায় সাজ
কবিতা দুর্বল বলে-
ঢেকে দিতে চায় কারুকাজ ।
আবৃত্তির সাজানো আসরে
কবিতার নাম দিয়ে-
আজকাল গল্প ভালো চলে
কিংবা নাটক
কবিও কৌশল করে পাঠ করে,
সেটা তার হক ।
পেনড্রাইভ ভরে আসে বেহালার সুর,
দু'ছত্র রোমান্টিক গান-
সারাটা সংসারে বেজে যায়
ধার করা আবহসঙ্গীত ।
 
কবিতা কাহাকে বলে ? খুলে সাজ কারুকাজ
যাবতীয় ছলনা চাতুরী,
আমিও জানার প্রত্যাশী
কোথায় লুকোনো থাকে অনন্ত ব্যঞ্জনা ?
কবিতার গোপন মাধুরী !
অথচ হয় না জানা
সকাল বিকাল সব যায় যে বিফলে ।
দেখি, আমাকে অচ্ছুৎ ভেবে ওই সর্বনাশী
সরে গেছে দূরে বহুদূরে...
আর আমি পড়ে আছি
অন্ধকার অন্ধকূপে স্বখাতসলিলে ।

 
------------------------------------
 
 
সম্পর্কহীন
কবি : সোহেল বীর
  
একদিন হয়তো সব ভুলে যাবে
চেনা সন্ধ্যা , হাঁটা-পথ , পরিচিত মুখ
ভুলে যাবে হুডবিহীন রিক্সার পথচলা
কারণে-অকারণে অভিমান-
সম্পর্কহীন ভালোলাগা , একচিলতে হাসি
ভুলে যাবে যৎকিঞ্চিত ভালবাসাটাও
ভুলে যাবে নতুন ম্যাগাজিনের কবিতা-
হয়তো ভুলে যাবে পুরনো বইয়ের ঘ্রাণটাও

সব ভুলে গিয়ে চিনে নিও নতুন কিছু
শিখে নিও ঘর গোছানো , নতুন করে প্রাণটাও !

 
--------------------------------------------- 
 
 
তুমিহীন আমি
কবি : হোসনেয়ারা বেগম
 
এ শহর এখন জনহীন শূন্য মরুভূমি
কোলাহল যতই থাক
তুমি না থাকলে খা খা বিরাণভূমি,
তুমিহীন আমি-
মৃত্যুকে বুকে চেপে পথ চলি;
আমার এ পথযাত্রা একান্তই
একা-
     অন্তহীন
পদভারে পথে পথে
শুধু নিঃসঙ্গ জীবনের জলছবি আঁকা ।
 
এ শহর এখন আলোহীন বীভৎস
অন্ধকারে নিয়নবাতি, সূর্যের আলো সবই নিষ্প্রভ;
দীর্ঘশ্বাসে বাতাস ভারি অবরুদ্ধ চারিধার ।
সুর ভুলে গান ভুলে পাখিরাও ঘুমায় অনন্তকাল ।
তুমিহীন এ শহর এখন রক্তাক্ত বধ্যভূমি-
অট্টালিকার দেয়ালে ঝুলে থাকে ভালোবাসা
হৃদয় বিদীর্ণ করে অবিশ্বাসের তির ।
 
তুমিহীন আমি এক নির্বাসিত অভিবাসী ।  
 
 
 -----------------------------------------
 
 
 
নিসর্গ প্রেমিক
কবি : সামসুন্নাহার ফারুক
 
দুরন্ত আবেগে ভেসে অনিন্দিত ভোরে
শিশিরের সুধা মেখে নিটোল শরীরে
শিউলিরা হয়ে গেল নিসর্গ প্রেমিক-
 
চঞ্চল বাতাসেরা মেলে দিয়ে গন্ধবতী ডানা
কুয়াশার লীলাবতী বুকে-
মরালী উড়াল উড়ছিল সুখে
 
পরিশুদ্ধ কামনার জলে
আমাদের ভিজতে দেখে
লালিত্যে ঝলোমলো
ঝরে পড়া শিউলিরা-
হসন্তি অঙ্গনে যেন ডাঙর কুসুম ।
 
দিগঙ্গনার রূপের বাহারে
ঐন্দ্রজালিক আয়নায়
স্নান সেরে অমৃত নগরে
উচ্ছ্ব্বাসের তীব্রতায় ডুবে গেল
উষ্ণ আলিঙ্গনে-
 
রোদ বৃষ্টির শরাবে নিজেকে চুবাবো বলে
অন্তর্লীন আলাপনে সুখময় সন্কীর্তনে
বন্য অনুভূতিগুলো পুরোপুরিই এলোমেলো

প্রণয় বিলসণে দুজনেই শুষে নিলাম
ইলেক্ট্রণ প্রোটন মাখা ভালোবাসার
চুম্বকীয় নির্যাস-
মাধুকরী বাসনার জীবন্ত উল্লাসে ।
 
---------------------------------------- 
 
 
কৃষ্টি কালচার
কবি : আবদুল্লাহ মজুমদার
 
মেঘের সাথে আকাশের সম্পর্কে নামে বৃষ্টি
জলের সাথে চালের সম্পর্কে ভাতের সৃষ্টি
আমার হৃদয়ের সাথে সম্পর্ক তোমার বহুকাল
তবুও তুমি খুঁজে বেড়াও কালচার -কৃষ্টি
 
সভ্যতা শিখে জন্মায় না কেউ, শিখে ধরনীতে
কৃষ্টি-কালচার শিখে মানুষ গ্রীষ্ম- বর্ষা, শীতে
রৌদ্রে শুকায়, ভিজে বৃষ্টিতে । শীতে ঠোঁটের ধ্বস
দেহকে নয় মনকে বল, কিছু শিখ বসস্ ।
 
শিখতে শিখতে প্রান্তে জীবন কৃষ্ট হয় না শেখা
যত দোষ নন্দঘোস, কপালে যে আছে লেখা
মেঘ আকাশের নিষ্পাপ সম্পর্ক বৃষ্টির মতো
ধরনীতে নেমে আসুক প্রেমের জোয়ারের দেখা । 
  
 
----------------------------------------------
 
 
প্রতিউত্তর
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
তারপর একদিন হয়তো এই প্রকৃতির বাতাসে
থাকবে না আর শীতল আশ্বাস ,
যান্ত্রিকতার ভিড়ে গুলিয়ে যাবে সব
কৃত্রিমতার কাছে হার মানবে প্রকৃতি ,
মানবকূল তখন আকাশপানে চেয়ে
ঈশ্বর অভিমুখে প্রশ্ন রাখবে-
"ঈশ্বর তবে কি তোমার পৃথিবীর বাতাস
আজ শুধু অসভ্য সভ্যতা কেন্দ্রিক"
ঈশ্বর মৃদু হেসে উত্তর দেবেন
"এই শীতল পৃথিবীকে তোমরাই উত্তপ্ত করে তুলেছো
আর উৎক্ষিপ্ত লাভায় নিজেরাই পুড়ে মরছো ।"
 
 
-----------------------------------------------
 
 
জীবন জলরাশি
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
কেউ জানলো না কতটা দহনে দগ্ধ হলো হৃদয় ,
কেউ বুঝলো না মনের অসহায় আকুতি , সংজ্ঞাহীন বিদায় ।
বাহ্যিক প্রাণচাঞ্চল্য আর কৃত্রিম হাসি দেখে , সে বুঝে নিয়েছে ভালো থাকার
সীমারেখা তাকে কখনো
বলাই  হলো না অন্তরালে ডুবে থাকা বিষাদের কাব্য ।
অতিকায় ও ক্ষুদ্রকায় সংঘটিত দুর্ঘটনায় সমন্বিত
যাপিত জীবনের গল্প ।
দূর থেকে শুধু সাধুবাদ আর ব্যাখাহীন হাসি
বিবর্ণ করে তোলে জীবন জলরাশি ।
 
------------------------------------
 
 
ফাল্গুনী শুভেচ্ছা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
ফাগুনের এই আগুন ঝরা দিনে
এক প্রকার ভালো আছি বন্ধু তুমি বিনে ।
বাসন্তী রঙ ভালোবাসায় যারা দিয়েছে ডুব
কেটে যাক সব বিষাদ বেদনা , মনের অসুখ ।
ছুঁয়ে যাক সব প্রেমিক হৃদয়ে পল্লবিত কলি
অনুভবের আদ্যেপান্ত কি করে কাকে বলি...
 
----------------------------------------
 
 
অবস্থান
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
তোমার বিপরীতে আমার স্ব-বিরোধী অবস্থান
আমার মননশীলতার প্রতিটি কোষে
তোমার অব্যক্ত পদচারণা ।
 
আমার ভুলের প্রতিচ্ছবি যদি তুমি হও
তবে তোমাকে আর নীল আকাশ দেখাতে চাইবো না ।
তোমার ভেতরে যে আদিমতা
তার আদ্রতায় নিমগ্ন থাকবো না আর ।  
 
-------------------------------------- 
 
আকুতি
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

শুকনো বটপাতার মতো ঝরে যাবো একদিন
এ পৃথিবীর আলো-বাতাস-ভূমি ছেড়ে
অদৃশ্য কোন নিশ্চিত গন্তব্য-হয়তো
স্থান পাবে আমার অতৃপ্ত আত্না ।
 
পৃথিবীর এই বিরান ভূমিতে
মিথ্যেই স্বপ্নের আবাদ করছো তোমরা
সেই শতাব্দী প্রাচীন কাল থেকে আজ অবধি ।
 
নিশ্চিত আঁধারকে সামনে রেখেও
কত প্রফুল্লতায় মগ্ন তোমাদের মানব আত্না ,
তাহলে কি আমরা শুধুই বেঁচে থাকি
সীমাহীন যন্ত্রণা আর বিষণ্ণ বোধের অন্তিম ছায়ায় ?
আমরা শুধুই ক্ষয়ে যাওয়া প্রাণের আস্বাদ । 
 
 
-------------------------------------

 
প্রতিক্ষণ
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
যদি ভুলে যাই
তবে তা হবে ,
বিবর্তনের বাতাসে
হারিয়ে যাওয়া দুঃস্বপ্নের মত ।
 
এমনটা কখনো চাই না আমি ।
তুমি দুঃস্বপ্নের যে চিত্র আঁকো
আমার মানসপটে ,
তার ব্যাখ্যা খুঁজতে খুঁজতে
পরিশ্রান্ত আমার হতদরিদ্র হৃদয় ।

অনাদিকাল ধরে যে ভাবনার
বুক চিরে
হাঁটতে শিখেছি আমি ,
তাকে তুমি দোলিত মথিত
কর প্রতিক্ষণ ।
 
 
 ------------------------------
 
 
প্রাপ্তির অতৃপ্তি
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
কত প্রিয় মুখ হারিয়ে গিয়েছে সুজল দীঘির পাড়ে
কত আশাবাদ হয়েছে ব্যর্থ অজানা অচেনা ঝড়ে ।
কত স্বপ্নের মৃত্যু দেখেছি জীবনের চারপাশে ;
কত চেতনা ফিকে হয় রোজ দলিত বুনো ঘাসে ।
কত ভাবনায় ডুবে থাকে মন ঘন ঘোরে নিশিদিন ;
কত প্রত্যয় বিবর্ণ রূপে হয়ে যায় বেদুঈন ।
কত আদরের সোনামুখ খানি মেঘের ঘনঘটা ;
কত চেষ্টায় আসে না ফিরে হৃদয়ে আলোকচ্ছটা ।
কত বিষাদের তিক্ত জ্বালা সয়ে ওঠে না আত্না ;
কত প্রাপ্তির অতৃপ্ত বোধে কলুষিত হয় সত্তা ।
 
 
------------------------------------------ 
 
 
উপেক্ষা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
যে আমাকে উপেক্ষা করেছে , করেছে অবহেলা
তার প্রতি কোন ক্ষোভ নেই , ভালোবাসা সারাবেলা ।
যে আমাকে যাপিত জীবনে , রেখেছে বাহুডোরে
তার সাথেই হেঁটে যাই পথ , শুভ্র শ্রান্ত ভোরে ।
মানব জনম ক্ষীণ সময়ের , পিছে ফেলে আসা স্মৃতি
হারিয়ে যায় কালের গর্ভে জাগতিক স্তুতি ।
এত ছুটে চলার বিন্দু বিসর্গ , কে বা কতটুকু জানি
কেউ কেউ থাকে প্রাসাদে বন্দী , কেউ টানে বিস্তর ঘানি ।
যে শুনিয়েছে প্রেরণার বাণী , নির্মোহ বারতা
তার কাছে থাকি আজন্ম ঋণী, অবনত সর্বদা ।
 
------------------------------------------------------- 
 
 
জারণ বিজারণ
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
মন ভেসে যায় সোনালী আবেশে
যুগ ভেসে যায় প্লাবনে ,
হৃদয় ভেজে বৃষ্টির ছোঁয়ায়
ফিরে আসো তুমি যেই ক্ষণে ।

যে পথে দেখেছো ধোঁয়ার কুণ্ডলী
সে পথ যে চিরচেনা ,
যে মৌনতায় নিমগ্ন তুমি
আজও হয়নি তা জানা ।

যে স্বপ্ন তোমার দু'আঁখি পটে
আমি যে সেথায় অন্ধ
যে ভাবনায় তুমি স্বরলিপি আঁকো
আমি তার মিথ্যে ছন্দ ।

যে বাসনায় তুমি আদৌ ডুবে থাকো
আমি তার নগণ্য আবরণ ,
যে চেতনায় তুমি আজন্ম গতিশীল
আমি তারই জারণ-বিজারণ ।


-------------------------------------
 
 
ক্ষণকাল অভিমান
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
দূরেই থাকলে সারাটা জীবন
ক্ষণকাল করে অভিমান ,
হৃদয়ের আবেগ যায়নি হারিয়ে
ভালোবাসা হয়নি ম্লান ।
 
বাস্তবতা দিয়েছে তোমায়
অচেনা অযুত সুখ ,
হারিয়ে ফেলেছো ঝরা পাতার মত
খুব চেনা সেই মুখ ।
 
কত যে তুমি দিয়েছো আশ্বাস
কত যে প্রতিশ্রুতি
সবই তো করেছো নিজের হাতে
মূল্যহীন প্রতিকৃতি ।
 
বিলাসী জীবনের স্বপ্ন তোমায়
প্রতিনিয়তই খোঁজে
আবেগের ঘোরে সেই ভাবনা
আসেনি আমার মাঝে । 
 
 
-----------------------------------
 
 
ভোরের কুয়াশা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
ফেলে আসা দিন , নিশুতি রাতে
যত জমেছিল কথা , ছুড়ে ফেলে দিও
হৃদয় নিংড়ে বিদগ্ধ বারতা ।
তুমি আঁকো যে জীবনের ছবি
আমি তা দেখি ধোঁয়াশা ,
সূর্যের চেয়েও বেশি ভালোবাসা
চাঁদের আলো , ভোরের কুয়াশা
 
 -----------------------------------
 
জীবনের কথা বলা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
একটা কাব্য , একটি কবিতা
একটি শব্দ চয়ন
কখনো কখনো ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ে
দহনের অবসায়ন ।
 
একটা ভাবনা , একটি চেতনা
অফুরান জীবনবোধ
ঘনীভূত হয় মনোজগতে
বয়ে যায় মৃদু স্রোত ।
 
একটা গল্প , একটা গান
একটি চিত্রকলা
ফিরে এনে দেয় প্রশান্ত বিকেল
স্নিগ্ধ ভোরবেলা ।
 
একটা জীবন , শত আয়োজন
অবিরত ছুটে চলা
জনে জনে ফিরি , দুর্গমগিরি
জীবনের কথা বলা ।
 
---------------------------------------
 
 
জীবন থেকে শেখা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
কবি কখনো খুঁজে ফেরে না, শান-শওকত প্রাচুর্য
কবি থিতু হয় কাব্য বোধে উদায়াস্ত সূর্য ।
কবি ফেরি করে আগামীর কথা , নতুন কোনো সকাল
কবি বেঁচে থাকে যাপিত জীবনে , ভাবনায় তার মহাকাল ।
কবি মানে না কোন বৈষম্য , জাত বর্ণ শ্রেণিতে
কবি ভালোবাসে শুভ্র সম্প্রীতি , মানবিকতার ধ্বনিতে ।
কবি আহত চারপাশে যত হিংস্রতা আর অন্যায়
কবি দেখিয়ে দেয় আসবে সুদিন , ভেসে ভালোবাসার বন্যায় ।
কবির কবিতা প্রজন্মকে দেখায় আলোর রেখা
কবি যা কিছু ধারণ করে , নিয়তই তা জীবন থেকে শেখা ।
 
-------------------------------------
 
 
অবহেলা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
যতটা অবহেলা করবে তুমি আমাকে
ততটাই ভোরের রোদ্দুর হয়ে
জড়াব তোমার গায়ে ,
দুপুরের ব্যস্ততা হয়ে থাকব
তোমার পাশে ।
 
অপরাহ্নের ক্লান্তিতে হয়ে র'ব
শীতল ছায়া ,
রাতের তন্দ্রায় অবাধ্য স্বপ্ন হয়ে
করব বিচরণ ।
ঠিক কতটা অবহেলা করবে তুমি আমাকে ?
 
-----------------------------------------
 
 
নিন্দিত
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
যদি নিন্দিত কর আমায়
তবে আলোকিত হওয়ার স্বপ্ন দেখি না আর ,
নিজেকে প্রকাশ করতে চাই না
দ্বীপশিখার মত ।

জীবনের সীমাহীন গতি পথে
যে আঁচড় কাটো তুমি
তা আমার মাঝে জন্ম দেয়
তীক্ষ্ণ বাস্তবতা বোধ ।

আমি অবিরত স্বপ্ন বুনে যাই
ভূমিহীন কোন ভূপৃষ্ঠে
ভোরের আশায় কাটাই নির্ঘুম রাত ।

সেই কৈশোরে যে ক্লান্তিহীন
সুখ অনুভূতি ছিল মস্তিষ্কের মাঝে ,
এখন তার প্রতিটি কোষই
হতাশা-অপূর্ণতার দাসত্বে মগ্ন ।
 
ইচ্ছা করলেই জেগে উঠতে পারি না
পূর্ণ উদ্যমে ।
স্নায়ু দুর্বলতার বিষাক্ত টানে
আবার ফিরে যেতে হয়
সেই স্বপ্ন গাঁথার উঠোনে ।

---------------------------------
 
 
প্রশ্ন
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
আমি কতিপয় মানুষের কথা বলছি ,
পদে-পদে যারা ভাগ্য বঞ্চনার শিকার ,
যাদের অমিত সম্ভবনা নিয়ে
উন্মদনায় মেতে উঠেছে রাষ্ট্রপক্ষ ।
 
এতটা পথ অতিক্রম করেও আমরা পরাধীন ,
আমাদের স্বীয় ভূখন্ডে ,
আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা আমাদের দিকে
ঘৃণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে ,
দেশাত্নবোধের ক্ষয়িষ্ণু প্রভাব
পড়েছে আমাদের মানবিক দৃশ্যপটে ।
 
দিনে দিনে আমরা তলিয়ে যাচ্ছি
বিকৃত ইতিহাসের পাতায় ।
প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে আমাদের সকল সাফল্য গাঁথা ।
 
এতগুলো বিপ্লব দিয়েও
আমরা সম্ভাবনার কাম্য স্তরে পৌঁছাতে পারিনি কেন ?
কিসের অপূর্ণতায় নিমজ্জিত আমরা এতটা কাল ? 
 
 
------------------------------------------
 
পুনর্জন্ম
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
যদি পুনর্জন্ম হয় তোমার ও আমার
অতীত যুগের কোন মানব মানবী রূপে
তবে বিস্তীর্ণ সমতলে দাঁড়িয়ে
প্রকৃতির একাত্নতায় মিশে যাব ।
আকাশের বিশালতার মাঝে
মেঘ হয়ে ভেসে বেড়াব অনন্তকাল ।
হয়তো পৃথিবীতে থাকবে না
জঞ্জাল স্বার্থবাদিতা ,
এই সামাজিকতা , এই সংসার বাস্তবতা
থাকবে আমাদের ভাবনার অনেক দূরে ।
শুধু তুমি আর আমি
বিশাল সমুদ্রের নীল জলরাশি হয়ে বইবো ।
সু-উচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় হবে
আমাদের আদিবাস ।
ভাবতে পারো , হাত বাড়ালেই
মেঘদের ছুঁয়ে দিতে পারবে তুমি
যদি পুনর্জন্ম হয় তোমার ও আমার ।
 
 ---------------------------------------
 
 
সীমাবদ্ধতা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
মাগো সেই শৈশবে প্রতিবেশী ছেলেদের হাতে
নতুন নতুন খেলনা দেখে ,
যখন আমার ভেতরে সৃষ্টি হতো
অবুঝ আকাঙ্ক্ষা ,
আচল ধরে তোমার পিছু-পিছু হাঁটতাম
আর ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কাঁদতাম ।

কত সান্তনার কথাইনা তুমি বলতে ,
কিন্তু আমার অবুঝ মন কিছুই বুঝতে চাইতোনা
তোমার উপর সৃষ্টি হতো একটা অদৃশ্য ক্ষোভ আর রাগ ।

আমি এখন বুঝতে শিখেছি মা ,
আমাদের সাধ্যের সীমাবদ্ধতা কতটুকু ছিলো ।
 
 ---------------------------------------
  
সচেতন সমাজ এগিয়ে আসুন
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
মেধা পদদলিত হচ্ছে কলার খোসার মতো
প্রতিভার অপমৃত্যু হচ্ছে পদে পদে
তারুণ্যের রঙিন স্বপ্ন
ঢাকা পড়ে যাচ্ছে নর্দমার ময়লায় ।
মাতৃগর্ভে থেকে শিশুকে হিসেব করতে হয়
বিদেশি ঋণের মাথাপিছু হার ।

আর কত দিন আমাদের এই অনিশ্চিত যাত্রা ?
সকল সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে,
রাজনীতির নামে এই মধ্যযুগীয় বর্বরতার কাছে ।

শকুনদের বিষাক্ত থাবায় ভাগ্য বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের আগামী প্রজন্ম্য ।
সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখা এখন ঘোরতর অপরাধ,
আমাদের এই স্বীয় ভূখন্ডে আগলে রাখা সম্পদ
ভাগ বাটোয়ারার মহাউৎসব চলছে কতিপয় মহলে ।
শিক্ষিত সুধী সমাজ , অশিক্ষিত ধর্মান্ধদের দাসত্বের শিকার ।
কবে হবে আমাদের মুক্তি এই পরাধীনতার শেকল থেকে ?

দেশ-সমাজ-মানবিকতা ও অধিকার হরণের
যে নীল নিশান উড়ছে বাঙলার আকাশে
তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে আমাদের স্বহস্তে ।

সচেতন-সমাজ এগিয়ে আসুন
স্বর্ণ সময় চলে যাচ্ছে-আর দেরি নয় ।
এদেশে শকুনদের স্বরূপ উম্মোচিত হয়ে গেছে ।
শকুনেরা আর আধিপত্য বিস্তার করতে পারছে না যত্রতত্র ।
সাধারণের মস্তিষ্ক এখন শকুন তাড়ানোর চেতনায় উদবুদ্ধ
আরেকটি গান লিখতে হবে , আর একটি কবিতা,
সৃষ্টি করতে হবে একটি অনবদ্য কাব্য
এই মহামারী থেকে বাঁচাতে হবে
ফুল , শিশু ও নারীদের ।


-------------------------------

রোদন
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
এখন আর বুক পকেটে
কবিতার চিরকুট থাকে না
থাকে কাঁচা বাজারের ফর্দ
চাল ডাল তেল নুনের খসড়া হিসাব ।
কারণ আমি সংসার ধর্মাবলম্বী মানুষ ।
 
এখন বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা হয় না
সাত সকালে মোবাইলের এলার্মে আঁতকে উঠি
সময় মত অফিস যেতে হবে বলে
তা না হলে উপস্থিতির খাতায় রায়হান
সাহেবের লাল কালির আঁচড় পড়ে যাবে ।
কারণ আমি অতিশয় চাকুরীজিবী মানুষ ।
 
কারো কাছে আবদার করে
কিছু চাওয়া হয় না আর
নিজের প্রয়োজন নিজেকেই মেটাতে হয়
উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হয়েছি তাই ।
কারণ আমি তথাকথি সাবলম্বী ।
 
অথচ সেই ছোট বেলায় স্কুলে গিয়ে
তিন টাকা দিয়ে লুতফরের আলুর দাম
আর জামালের চটপটির স্বাদ
মুখ থেকে কোনদিন যাবে না ।
কারণ আমি স্মৃতিকাতর ।
 
ইচ্ছে হলেও সেই পড়ার টেবিলে বসে
ঘুমের ঝিমুনি এখন আর আসে না,
সারা বিকেল অক্লান্ত ফুটবল খেলে
ক্লান্ত শরীরে , বাবার রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করা ঘুম ।

এখন স্লিপিং পিল খেয়েও ঘুম আসে না
কারণ অন্তর্গত রোদনকে কখনো
ঘুম পাড়াতে পারি না তাই ।
 
----------------------------------
 
তোমাতে আমি
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
আমার দিকে তুমি একবার অপলক দৃষ্টিতে তাকাও ,
আমি আজীবন তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবো ।
আমাকে তুমি একটু আশ্বাস দাও ,
আমি সজীব প্রাণবন্ত হয়ে উঠবো ।
আমাকে তুমি তোমার হৃদয়ে একটু জায়গা দাও ,
আমি সমস্ত ব্যস্ততার অবসান ঘটিয়ে দেবো ।
আমাকে তুমি একটু ছুঁয়ে দেখো ,
আমি রক্তের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভালোবাসা পৌচ্ছে দেবো ।
আমাকে নিয়ে তুমি একটু ভাবো ,
আমি অনন্তকাল ধরে পথ চলবো ।
যদি তুমি বিস্তৃত আকাশ হও ,
আমি তোমার বুকে রংধনু সাত রং এঁকে দেবো ।
যদি তুমি সবুজ বৃক্ষ হও ,
তবে প্রশান্তির বাতাস হয়ে বইবো ।
যদি হও মহাদেশ ,
আমি হবো আবিষ্কার পিয়াসু নাবিক ।
যদি হও সবুজ মাঠ ,
আমি তোমার বুকে ফসল হয়ে জন্মাবো ।
যদি হও নদীর জলধারা ,
স্রোত হয়ে তোমাকে নিয়ে যাব সমুদ্রের পানে ।
যদি হও ধূসর গোধূলি ,
আমি হব আগ্রাসী বাতাস ।
তোমার অলক গুচ্ছে বিঁধে যাবে ,
ভালোবাসার অসংখ্য বাঁশপাতা ।  
 
 -------------------------------
 
মিথ্যের শ্বেত কপোত
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
 
একটা সমৃদ্ধ স্বপ্নের কথা বলি
যার গায়ে আঘাত করে
পুঁজিবাদী এই সমাজ ।
 
একটা সুগভীর দৈন্যতার কথা বলি
যার গর্ভে লুকিয়ে আছে
অপূর্ণতার আঁচ ।

একটা ভাবনার কথা বলি
ভাবতে ভাবতে পেরিয়ে গেছে
শতাব্দী প্রাচীনকাল ।

একটা হতাশার কথা বলি
হয়নি দেখা আজও আমাদের
সোনালি সেই সকাল ।

আমরা শুধুই স্বপ্ন দেখেছি
নতুনের আহ্বানে
ব্যর্থ হয়ে বার বার ফিরি-ঈশ্বর ভগবানে ।

আমরা শুধুই চেষ্টা করেছি
গড়েছি নতুন শপথ,
সম্মুখে শুধুই দৃশ্যমান হয়
মিথ্যের শ্বেত কপোত ।
 
 
 ------------------------------
 
 
পুরোনো ছন্দ
কবি : মারূফূল  ইসলাম
 
গোধুলিতে ওড়ে না ধুলো আর
চোখে পড়ে না গরুর পাল
ওলানে দুধের ধারা নিয়ে ঝিমোয় খামার
রাখাল কাকে বলে জানে না মাঠের দুপুর
কপাট বন্ধ করে ঘুমোয় যুবতীরা
আজকাল পুকুরঘাট স্মৃতির জলে ভাসে
জলে ভাসা সাবানের ঘ্রাণে অনিদ্রায় ভোগে না রাত্রি
 
কথা আছে, কবিতাও
তবু কেউ কেউ একা ঘরে
খিল তুলে দিয়ে মিশে যায় শেষ কুয়াশায়
অথবা বৃষ্টিতে ফুটে থাকে কদমগুচ্ছে-

আজব জন্তুরা এসে ঘিরে ধরে সময়ের চৌহদ্দি
গন্ধের পিছু তাড়া করে স্বাদ
আগরের ধোঁয়ায় চেনা মুখ অচেনা হয়ে যায়
তবু হঠাৎ মাঝরাতে ফিরে আসে পুরোনো ছন্দ

সঙ্গীতের কনিষ্ঠ আঙুল ধরে
হয়তো পৃথিবী নিজেকে খুঁজে পায়
হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে
 
 -----------------------------
 
 
তবু অপেক্ষা
কবি : দেলোয়ারা বেগম
 
অভিমানিরা অভিমান করে রয়,
রুদ্ধ দ্বার খোলে আভিমান পালাতে
আভিমানে ভরা অভিমানি মন,
তার অপেক্ষায় দিন গুনে যায় !
 
ভালোবাসা পাওয়ার সে কী আকুলতা
সকাল, দুপুর, রাত
সব তার কাছে সমান,
জেগে জেগে অপেক্ষা ।
কখন আসবে-
হাত বাড়িয়ে বলবে ভালোবাসি ।

দিন যায়, রাত আসে,
রাত যায় দিন আসে,
তবু সে আসে না,
তবু ফোটে ফুল, তুমুল সুবাস
সে অপেক্ষায় দ্বার খোলে রাখে,
অবুঝ মন পথ চেয়ে আছে-

যদি সে এসে যায়... যদি কভু ।
 
 ------------------------------
 
 
যে তুমি আমার
কবি : মোসলিমা খাতুন
 
আমার জগতে কখনো নিঃসঙ্গ
মনে হলেও একা নই আমি
এখানেও আছে দুঃখ- জ্বরা ব্যাপ্ত ব্যাধি
তাই বলে বাতাসের গতি থেমে নেই ।
আমার কেউ নেই - কোন 'তুমি' নেই
আছি আমার ভেতরের 'আমি' ।
স্বরূপ নেই অরূপেরও আছে দ্যুতি
তবু অন্ধকার সুড়ঙ্গে সংকট দ্বিধা,
যে পথে ফুল নেই আছে কাঁটা
যে পথে তুমি নেই নাই নির্ভরতা
যে পথে চলতে গেলে লাগে দৃঢ়তা,
ভুল করে হলেও নিজেকে ভাবি
উত্তুঙ্গ শক্তির অসীমতা;
চারিদিকে জমে আছে ধুলোর আস্তরণ
বিবর্ণ স্বপ্ন আশাহত কৃষ্ণচূড়া জীবন
কোন্ ঘোরপথে বসে বাজাও বিউগল,
ক্ষরণের উত্তাপে বারবার এই আমি
অস্বীকার করি সবকিছু প্রাণপণ,
অনুভবে পাই ফুটন্ত গোলাপের ঘ্রাণ
আবছায়ার মতো একটি বিশ্বাস
সামনে এসে দাঁড়াও নির্লিপ্ত...
 
 ----------------------------
 
আক্ষেপ
কবি : মুহম্মদ আশরাফুল ইসলাম
 
মোহময় আলিঙ্গনের অপার্থিব সুখ,
খেলাচ্ছলে এড়িয়ে যেতে আমার মরণ কষ্ট হয়,
অথচ তুমি ভাবো অহংকারে ছেয়ে গেছে আমার বুকের চাতাল
 
জলাধার পেরোই, পাহাড় ডিঙোই, ফেলে আসি প্রান্তর
তবু মৃত্যু নামের সহচরী আমার সঙ্গ ছাড়ে না কেবল,
আমার সাথেই ঘুমুতে যায় আবার আমার সাথেই জেগে
ওঠে প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মায়ায় !
অথচ তুমি ভাবো, কী তুমুল জীবনই না আমি যাপন করছি সুখের সাথে-
 
চিরহরিৎ মনের অরণ্যে গচ্ছিত সবুজ ভালোবাসা এড়িয়ে,
তুমি মাথা গুঁজে দাও পর্ণমোচী শরীরের ভাজে,
 
কখনো কী ভেবেছো ?
আমাদের সময়গুলো কেমন বিপরীত পথে ছুটছে ক্রমশ !
বিপরীতমুখী যাত্রায় তাই আমরা কেউ কাউকে
আর বয়ে বেড়াই না প্রেমের অসীম দায়ে,
আমরা আমাদের যাবতীয় অভিযোগের বোঝা ব্যস্ততার কাঁধে তুলে দিয়ে,
হিরণ্ময় সন্ধ্যা স্মৃতি আগলে চলো প্রেমহীন হৃদয় নিয়ে আর ক'টা দিন বাঁচি- 
 
 ------------------------------
 
বিনীত সরীসৃপ
কবি : মুহম্মদ আশরাফুল ইসলাম
 
যে শুধু তোমার দিকেই ঝরছ,
হয়ো তার অঢেল অবসর;
থেকো সবজির মতন প্রণয়ে অথবা স্মৃতিতে ।

যেভাবে আছড়ে পড়ছে ঠোঁট,
যেন আরেকটু এগোলেই পেয়ে যাব ত্বকের সুদিন ।
আরেকটু এগোলেই হাড়জুড়ে ফুঁসে ওঠবে তুমি !

হননের শোভায় না হোক
সুরম্য বেহালায় নত রাখো সবকিছু ।
অন্তত একজন তোমাকে ভাবুক বিনীত সরীসৃপ ।
অন্তত কেউ একজন নৃশংসের মতো তোমাতে বাজুক ।
যে কখনওই পড়েনি স্বরবিতান,
যে কোনওদিনও হয়নি নিজের নিকটবর্তী,
সে-ও হোক তোমাকে রঙিন করার অফুরন্ত কারণ ।

ঘাসেদের দফতরে যে থাকে সুনসান,
নৈশ্যভান্ডার থেকে তাকে দিও দ্বিধার সুষমা ।
হাতের তালুতে এঁকে দিও অনন্ত নৌকাবাহার ।
 
মূলত তুমিই প্রাসঙ্গিক প্রতিটি ভাঙনে আমার !
বাঁধের বিপত্তি তবুও আগলে রাখি নিভৃতে;
যেভাবে আগলে রাখি ঘড়ি ও ঘুড়িবাসনা ।
 
----------------------------
 

সমতা
কবি : লুুুৎফুন নাহার
 
মানুষ যতোটা পতিত হয় প্রেমে অপ্রেমে
ভাবনার বিভ্রমে, ততোটা উঠে দাঁড়াতে না পারলে
সমতা হারায় যাপন; তখন হাসি আর কান্না কেবলই
বেঁচে থাকার বিপণি ছাড়া আর কিছুই নয় ।
 
কারও সাথে হাসতে-হাসতে ঝরে গেলো যে ফুল
সে ফুলের বেদনা তোমাকে স্পর্শ করার কথা নয় ।
 
একটুখানি নিশ্বাস ভিক্ষা চেয়ে জীবনের আশে
মরে যায় যে পাখি হাওয়া ভুলে, তার দাওয়া-পত্র
লেখা হয় কার কলমের কালিতে, তা তোমার 
জানার কথা নয় প্রিয় ।
কিংবা রুচি নেই তাতেও কে কতোটা হলো আহত
কথার খঞ্জরে কেটে গেলো
কোন টগবগে জীবনের দৌড়, কোন বাউলের সুর-
সমাহিত হলো সভ্যতার শৌ্চাগারে শরমে বরমে ।
পেটের দায়ে কোন অসহায় মলিন মুখ
পরপারে চলে গেলো পেটিকোট বিকিয়ে !
এপাড়ের লেনা-দেনা চুকিয়ে ।
 
তুমি বরং নিশান উড়াও কৌ্লিন্যের ; উবে যাক
উচ্ছিষ্ট প্রাণ, জীবন থেকে উৎখাত হওয়া জীবন ।
 
 -----------------------------
 
 
লেইসফিতার বৃত্তান্ত
কবি : রোকসানা পারভীন সাথী
 
লাল টিপটি হারিয়ে গেছে উদাস দুপুর ভালে
সিঁথির সিঁদুর ভেসে গেল অথৈ কালিগঙ্গার জলে
কাজলদিঘির শ্যামল বনে সফেদ রাঙা হাঁস
নুনের টেকের খাসজমিতে দুঃখ বারো মাস ।
কেউ মরে বিল সেঁচে কেউ খায় কৈ
কালেভদ্রে জোটে পাতে বিন্নিধানের খৈ
মাথার ঘাম পায়ে হেঁটে নিত্য চাষাবাদ
রাঘববোয়াল ছিপ ফেলেছে লাগামহীন চাতুর্যের ফাঁদ
গরম ভাতে একফালি ঘি আঁতকে ওঠে চাঁদ
বৃষ্টিচাতক উষর মোহে ভাঙে বালির বাঁধ ।
চোখের কাজল মুছে ফেলে নোনাধরা আঁচলে
পায়ের নুপুর ডুব দিয়েছে মনখারাপের ছলে
আলতাবানুর দুধে-আলতা রঙে বহে শনির গ্রাস
পদ্নবনে উলুখাগড়া ছড়ায় তপ্ত রবির হাহুতাশ
রঙধনুর সাত রঙেতে তিমিরস্রো্তের দহন
আষাঢ়-শ্রাবণ বকুলবনে রাঙে প্রজাপতি মন ।

নাকচাবিটা হারিয়ে গেছে লাউ-কুমড়োর বাঁকে
রেশমি চুড়ি ! লেইসফিতার কে আর খবর রাখে ?
 
----------------------------
 
তেলাপিয়া
রাখী সরদার
 
চিকচিকে রোদ্দুর । শিতের পুকুর
গা এলিয়ে শুয়ে আছে
মা-তেলাপিয়া ছানাপোনা নিয়ে
বেশ ঘুরছে । চার গাঁথা এক বড়শির
জল ডুব নাচানাচি ।
 
তেলাপিয়া বোধহয় ভুলে গেছে
শিকার আজকাল মাগনা নয়...
 
দুপুর গড়িয়ে গড়িয়ে শ্রান্ত বিকেল ।
মা-হারা ক্ষুধার্ত বাচ্চারা জলে
ঘাই মেরে মেরে মাকে ডাকে...
 
গৃহস্থ মেয়েটি এঁটো থালাবাটি ধুতে
নামে জলে, থালায় থালায়
তেলাপিয়া ঝোল গন্ধ । ছুটে আসে
ঝাঁক ঝাঁক ছানা
 
সেয়ানা মেয়েটি তার বাবার থেকেও
দূর্ধষ মৎস্য শিকারি ।
 
----------------------------
 
 
যমুনা সকাশে ত্রিজাতির পিতা   
 কবি : সালেম সুলের
 
তিন জাতি পিতা বিংশ শতকে যমুনা অতট তীরে,
বৃটিশ বিরোধী গান্ধী-জিন্নাহ, মুজিবের পদরেখা
ভারত-পাক ও বাংলাদেশের তিন প্রধানের দেখা-
সিরাজগঞ্জে মাটি-মানুষের স্মৃতি পোড়ে ধীরে ধীরে ।

কংগ্রেস শেষে মুসলিম লীগ, স্বরাজ পার্টি, দোলা
এলেন নেতাজি, দেশবন্ধুও, জমিদারী নিয়ে রবি,
আব্বাসসহ যুব নজরুল- সানবাঁধা গান-কবি
বানিজ্য-বর বিড়ালও এসে বন্দরে পাল তোলা

'অনল প্রবাহে' চেতক সিরাজী, অবিচল বিদ্রোহে
ভাসানী জনম, তর্কবাগীশ, ভাষা মতিনের নূর-
গনিতে যাদব, শোণিতে হিলালী, ক্যাপ্টেন মনসুর
সালঙ্গা মায় দেশ-মাটি-জয়- ছবি উঠে আছে গ্রহে
সেতু বিশালতা, শিল্পে লোহানী, সুচিত্রা সেন, গাঁথা
যমুনা ভাঙন; ঢাকে ইতিহাস অথান্তরের কাঁথা !

 ----------------------------

 গল্প ( ছানা )

ঘুমের ভেতর ফোন বেজে ওঠায় ধড়ফড় করা বুকে কলটা রিসিভ করলেন পঞ্চাশ ছোঁয়া তাবাচ্ছুম । তিনি  ভাবেন, দুঃসংবাদ ছাড়া সুসংবাদ কেউ তাদের এই পঞ্চাশ পেরোনো বয়সে  এমন মাঝরাতে দেয় না । চশমা না পরেই তিনি ফোনটা রিসিভ করেছিলেন । তারপর নিজের একমাত্র মেয়ে শেফার হাউমাউ করে কান্নার শব্দে তার তখন দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম । তাবাচ্ছুম উঠে বসেন এবং দৃঢ়কন্ঠে মেয়েকে বলেন, শেফা, কী হয়েছে তাই বলো ? 
কিন্তু কে শোনে কার কথা ! শেফা কেঁদেই যায় । আর ওদিকে তিনি চেঁচিয়ে বলতে থাকেন সৌরভ ভালো আছে ? রণি ? মিমি ?
তাবাচ্ছুম ভাবতে থাকেন, সবাই যদি ভালো থাকে তারপর আর শেফা এমন কান্নার কারণ কী হতে পারে !  একসময় শেফা কান্না থিতিয়ে আসে । তাবাচ্ছুম বলেন, এবার তো বলো কী হয়েছে । তিনি এতক্ষন অনুমান করতে পারেননি তার একমাত্র কেন এভাবে কাঁদছে । জামাই সৌ্রভের সাথে মেয়ে শেফার একটু খিটিমিটি ভাব থাকলেও তা মেয়ের তা মেয়ের এইরকম কান্নারহ পর্যায়ে এসে পৌছুবে না, যাতে তার মেয়েকে এভাবে কাঁদতে হবে !
 
শেফা কান্না থামছে না দেখে তাবাচ্ছুম আবার বললেন, বিধবা মানুষ আমি । তুমি কি মাঝরাতে ফোন করেছো, আমাকে হার্ট অ্যাটাকে মারতে ?
 
শেফা কান্নারত অবস্থায় বললো, এ জন্যই তোমাকে এ ক'দিন ফোন দিইনি !
* ক'দিন ধরে কী হয়েছে, বলো !
* সৌ্রভ বাসা ছেড়ে চলে গেছে !
 মেয়ের এই কথা শোনার পর আকাশ  ভেঙে পড়লো যেন তাবাচ্ছুমের মাথায় । কারো মৃত্যু সংবাদও তাকে এর চেয়ে বিচলিত করতো না ! তিনি জানতে চাইলেন, কেন গেছে ? ক'দিন গেছে ?
* আজ সাতদিন ।
* কোথায় গেছে ? 
* আজই জানতে পারলাম সে নোভার বাসায় উঠেছে ! সাতদিন হয়ে গেছে, আর তুমি আজ বলছো আমাকে?  * তুমি চিন্তা করবে তাই বলিনি ! আর ভাবছিলাম ও এমনিই  ফিরে আসবে !
* সৌরভ তো এমনি বাসা ছাড়ার ছেলে নয় । তুমি কী বলেছিলে তাকে ?
* ইদানীং ও ইনফিরিউটি কমপ্লেক্সে  ভোগে । 
* তা না ভুগে উপায় আছে ? তুমি ওকে সবসময় হেয় করে কথা বলো । আমি তোমাকে বলেছি পুরুষ মানুষকে এমনি যা বলবে, বলবে । কিন্তু সে যখন বেকার থাকবে তখন তাকে আগের থেকে বেশি সম্মান দিয়ে কথা বলবে ! পুরুষকে আল্লাহ তৈ্রিই করেছে ওভাবে, বোহেমিয়ান স্বভাব দিয়ে ওদেরকে ভালবেসে সম্মান দিয়ে বশে রাখতে হয় !
* কেন, পুরুষ মানুষ কি রাজার ঘোড়া ?
* ধরে নাও তাই ! আমি তোমাকে একথা বোঝানোর পর তুমি আমার সাথেও ঝাঁ ঝাঁ করে ঝগড়া করছিলে । তাই আমি নিজেও তোমাদের কাছ থেকে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ফিরে এসেছি !
* তুমি খালি আমার দোষটা দেখো । আমি অফিস থেকে আসি, তারপর এসে দেখি আমার জন্য অনেক কাজ পড়ে আছে । 
* যে কাজ পড়ে থাকতে দেখো তা ফেলে রাখো ! আমি যখন গিয়েছি, তখন দেখেছি না সৌরভ বাচ্চা দুটোকে দুই স্কুলে দিয়ে আসছে, আবার সময় মতো নিয়ে আসছে । সেই গোসল করাচ্ছে, খাওয়াচ্ছে । এভাবেই দিন পার হয়েছে তার ! সৌরভ যখন চাকরি করতো, তখন তুমি এইসব কাজ নিখুতভাবে করতে । কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, পুরুষ করুক, আর নারী করুক, ঘরের কাজ একজন করলে আরেক জনের কাছে তার কোনো মুল্য নেই ! এবার সৌরভ যে কাজগুলো করতো, বাজার করা, বাচ্চাদের স্কুল থেকে আনা, তোমাকে অফিস থেকে আনা-নেয়া, সব মিলিয়ে তার কাজের মূল্য কত হয় ?
আমি যখন করতাম, তখন ?
* ওই তো মূল্য একই হতো । কিন্তু আমি আগেও বলেছি, ঘরটা মেয়েদের জন্যই দরকার । পুরুষকে তাড়িয়ে দিলে, সে পৃথিবীর সব দেশেই স্টেশনে গিয়েও থাকতে পারে । কিন্তু সব দেশের মেয়েদের প্রথমত ঘর তাদের জন্যই লাগে ! তোমাকে বের হতে হলে আজ তুমি কোথায় যেতে ?
* তুমি সৌরভের পক্ষ নিচ্ছো, মা !
* আমি কারো পক্ষ নিচ্ছি না । এখন মনে করো যার বাসায় গেছে, তারও দুটো বাচ্চা আছে । বহুদিন ধরে তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে । ঠিক তারই মতো ভুল তুমিও তোমার স্বামীর বেলায় করেছো । সৌরভ নোভার কাছে গিয়ে বসে নেই । নিশ্চয় এবার ওই মেয়ে ওর কাজের মূল্যটা ভাল করেই বুঝবে । সে যদি ভাব-ভালোবাসা দিয়ে ওকে ভুলিয়ে রাখে, পুরুষের নাড়ির টান কমই হয় । ঘর পোড়া গরুর মতো ওই মেয়ের ফাঁদে আটকে সৌরভ যদি বাচ্চাদের টানে ফিরে না আসে, কেমন হবে তখন ?
* পুরুষের টান হবে কেন ? সেকি রণি-মিমির বাবা নয় ?
* তোমার বাবাও তোমারি ছিলো !
* তো ?
 
" দুধ ফেটে গেলে তার ছানা দিয়ে অনেক কিছু করতে পারবে । কিন্তু সে দুধকে আর আগের অবস্হায় ফেরাতে পারবে না ! মানে দুধ আর বানাতে পারবে না ! সম্পর্কটাও সেরকম "
 
* রিটায়ার করার পর তিনি ভাবলেন তোমার কথা ? আমার কথা বাদ দাও । তিনি সব টাকা এদিক-ওদিক দান করে দিলেন ! এটা মহত্ত ছিলো না, বুঝলে ? এটা ছিলো তার অ্যাবনর্মালিটি ! একটা পাগল নিয়ে রয়েসয়ে সংসার করেছি আমি । সাবধানে থেকেছি যেন তোমার মনে কোনো বেদনার ছাপ না পড়ে ! সৌরভ, তুমি একসাথে একই ইউনিভার্সিটিতে পড়েছো । একই সাথে চেষ্টা করে কানাডা গিয়েছো । পছন্দের বিয়ে তোমাদের । না হলে পাঁচ-দশলাখ টাকা তোমার বিয়েতে খরচ করতে হলে কী হতো আমার ? আজ আমি বাপের বাড়ির কোনায় পড়ে আছি । সামান্য একটা চাকরি করছি বলে কারো কাছে হাত পাততে হচ্ছে না, তাই কেউ-ই আসল অবস্থা জানছে না ।
* বাবা বেঁচে থাকলে তিনি নিজে কী করে চলতেন ?
* ভাবো এবার ! বলতো, গ্রামে গিয়ে জমিজমা দেখবো । মাটির সাথে জীবন কাটাবো । স-ব ভালো ভালো নয়, বুঝলে ! এখন সৌরভ ফেরাও !
শেফা আবার কান্না জোড়ে । বলে, না মা, ও নিশ্চয় নোভার সাথে রাতে একঘরে থেকেছে ।
* রাত আর দিন কি ? একঘরে থাকতে হলে রাত লাগে নাকি ? আর এটা তো অসম্ভব কিছু না । তুমি ওকে যেতে দিলে কেন ?
* ঝগড়া করে বেরিয়ে গেলে আমি আটকাবো কী করে ?
* শোনো, দুধ ফেটে গেলে তার ছানা দিয়ে অনেক কিছু করতে পারবে । কিন্তু সে দুধকে আর আগের অবস্হায় ফেরাতে পারবে না ! মানে দুধ আর বানাতে পারবে না ! সম্পর্কটাও সেরকম । কিন্তু সৌরভকে ছেড়ে দিলে তার থেকে তোমারই লোকসান । আবার যদি কাউকে বিয়ে করতে হয়, কোনো অবিবাহিত তরুণ নিশ্চয় দুই বাচ্চার মাকে বিয়ে করতে আসবে না । আসতো, তোমার যদি বিরাট অংকের ব্যাঙ্ক ব্যালান্স থাকতো !
* মা তুমি আমাকে ভয় দেখাচ্ছো । তাই শত্রুর মতো কথা বলছো ।
* কী বললে মায়ের মতো কথা হবে শিখিয়ে দাও তাহলে ? তুমিও সন্তানের মা হয়েছো । আমার জায়গায় নিজেকে রেখে তুমি তোমার জায়গায় তোমার মেয়েকে রেখে ভেবে দেখো, আমি এখন কেমন আছি ! চাকরির এখণ মন্দাভাব পৃথিবীজুড়ে । ছেলেটার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে, সে তো ট্রাই করছে, আমি দেখে এসেছি । মা-বাবা দু'জনের একজনের কেয়ারে সারাদিন বাচ্চারা থাকলে তাতে দু'জনেরই কত শান্তি ! সেই শান্তিটাই না হয় দু'জন ক'দিন উপভোগ করতে !
* মা তুমি একপেশেভাবে বলেই যাচ্ছো ! সমস্যা কি শুধু সেটাই ?
* শোনো আমারও অন্ধকার সময়ে জন্ম হয়নি । তাই দেখেছি মেয়েরা যতই প্রগতির কথা বলুক, তবু স্বামী বেকার থাকলে তাকে তাদের সম্মান করতে বাঁধে । কিন্তু তোমাদের সময়ে এই অন্ধ ইগো বিলুপ্ত হওয়া উচিত ছিলো । আরেকটি বিষয় এই সমবয়সীদের ভেতর বিয়ের প্রচলন হয়ে একদিকে খারাপও হয়েছে । কেউ কাউকে ছাড় দিতে চাও না । কিন্তু এই যে আমি, তোমার মা, তোমার বাবার অনেক অসঙ্গতি মেনে নিয়েছি, মানে মানতে বাধ্য হয়েছি, সেটা বোধহয় ওই বয়সের কারণে । বয়সে বড় । শিক্ষায়-দীক্ষায় বড় । তাই বলে সব কাজ ঠিক করেছেন, তা তো নয় !
যা-ই ঘটুক সৌ্রভ এভাবে চলে যেতে পারে না মা ! এর জন্য আমি আইনি লড়াই লড়বো ! তোমাকে জানিয়ে রাখলাম !
* এখানেই বড় ভুল করবে ! আর ও চলে যেতে পারে না মানে, এই তো গিয়ে দেখিয়ে দিলো, পারে কি না ! এরকম যাওয়া সৌ্রভই প্রথম যায়নি ! আইনি লড়াই লড়লে বিষয়টা তেতো ছাড়া আর কী হবে ?
* ঠিকাছে আমি রাখি ! তুমি আমার দুঃখ বুঝবে না মা ! শত হোক, বাবা তোমাকে প্রতিপক্ষ ভাবতেন না !
* প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছো কেন ? মেয়েদের বাড়তি কিছু ক্ষমতা আছে । তারা বুঝতে পারে অবস্থা কোনদিকে যাচ্ছে । ধীরে ধীরে ভালোবেস সহাবস্থান তৈ্রি করে নিতে পারতে । তা যদি পারতে সেটাই তোমার বড় ক্রেডিট হতো !
* এত মানিয়ে চলার আমারই একলা দায় পড়ছে !
* দায় পড়ছে, তোমার কাছেই জরায়ু । তোমার কাছেই বাচ্চার বিকল্পহীন খাদ্যভান্ডার ! তাই বাচ্চাকে ছেড়ে যখন তুমি সরতে পারবে না, তাই তাদের তাদের কাছে টেনে রাখার দায়িত্ব তোমাকেই বর্তাই । এ নিয়ে তর্ক তুলে সারা পৃথিবী লণ্ডভণ্ড করতে পারবে । কিন্তু ওই মা ক্যাঙারুর তলপেটেই সমাধান, দেখো । পুরুষ ক্যাঙারুকে কিন্তু সৃষ্টিকর্তা থলি দেননি । সৃষ্টিকর্তা ভাবেননি বাবার একটা থলি দিই, মায়ের আসান হবে !

" একাকিত্বের কী যন্ত্রণা এই ক'দিনে সেটা বুঝেছো নিশ্চয় ? এই যন্ত্রণা দীর্ঘ হলে তুমিও ভুলে যাবে, কে নষ্ট আর কে শুদ্ধ ! শেষে ওই নোভার মতো অন্যের পুরুষকে আটকে রাখার পাঁয়তারা করতে হবে ! "
 
* রাখি মা ! তোমার ছেলে নেই তো । তাই ওই পরের ছেলের ওপর তোমা টান বেঁধেছে ।
* রাখি মানে ? এখন ওকে ফেরাবে কী করে তাই আমাকে বলো !
* মাথা নত করে একটা নষ্ট হয়ে যাওয়া মানুষকে আমি ফিরিয়ে আনবো, ভাবছো ?
* এভাবে বলো না । একাকিত্বের কী যন্ত্রণা এই ক'দিনে সেটা বুঝেছো নিশ্চয় ? এই যন্ত্রণা দীর্ঘ হলে তুমিও ভুলে যাবে, কে নষ্ট আর কে শুদ্ধ ! শেষে ওই নোভার মতো অন্যের পুরুষকে আটকে রাখার পাঁয়তারা করতে হব!
প্রথম জীবনে একটা সম্পর্ক যেভাবে তৈ্রি হয়, পরে আর তা হলে তোমার এই মাও বৈচিত্রহীন, একঘেয়ে একাকী সময় পার ক্রতো না ! রুঢ় শোনালেও এই কথাটি জেনে রাখো । তোমার মতো গায়ের জোরে অনেকে এমন ভুল করে শেষে আবার একজনকে ধরতে টোপ গাঁথা আর চার ফেলতে ফেলতে সোসাইটিতে হাস্যস্পদ হয়ে ওঠে !
* মা, তুমি কিন্তু আমাকে যা তা বলছো !
* বলছি, যেন তোমার জীবনেও ওরকম অবস্থা অনিবার্য না হয়ে ওঠে । মা তো আমি, মায়ের মনে খারাপ দিকটিই আগে ভাসে । শোনো পথ চলতে গেলে যেমন কখনো পথিক হোঁচট খায়, তেমনি জীবনে চলতে গেলে এটাকেও ওই হোঁচট ভেবে দু'জনকেই দু'জন কঠিনভাবে শুধরে নিতে হবে । তবে নোভার উচিত ছিলো সৌ্রভকে বুঝিয়ে তোমার কাছে নিয়ে আসা ! বিদেশে তোমরা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় বাস করলেও আমরা তো দেশে তো সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করি । তোমাদের সব ঘটনা আমাদের কানে এসে আমাদের সমাজের কাছে ঠিকই জবাবদিহিতার মখোমুখি করে । নোভার মা-ও তার আত্নীয়ের ভেতর আরেকজনকে তাড়িয়ে, তার ভরা সংসার নষ্ট করেছে । তাই নোভা আর কী শিখবে !
  
মেয়ের সাথে কথা বলতে বলতে রাত শেষ হয়ে যায় । উদ্ভ্রান্ত তাবাচ্ছুম ভাবতে থাকেন, শেফা কী করে বাচ্চা দুটোকে স্কুলে দিয়ে আবার অফিসে যাবে । শেফার অফিস ছুটি পাঁচটায় । কিন্তু ওদের তো দুটোয় স্কুল ছুটি । এ ক'দিন ধরে সে এতো সব কী করে সামলাচ্ছে । এক সন্তানের মা হওয়ার কী জ্বালা তিনি এখন হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন । তার কাছে এতো টাকা নেই যে তিনি আবার ভিসার জন্য দাঁড়ান । টিকেট করেন, মেয়ের কাছে ছুটে যান । আর সেটা সম্ভব হলেও তো সময় সাপেক্ষ ।
 
একবার এখানকার বাঙালি কমিউনিটির একজনের বাড়িতে দাওয়াত রক্ষা করতে গিয়ে সেখানে আরেক আগন্তুকের সাথে তাবাচ্ছুমের সৌজন্য সাক্ষাত হয়েছিলো । ফোন নাম্বারও বিনিময় করেছিলেন । তাবাচ্ছুম সময়জ্ঞান ভুলে তখনি তাকে ফোন দিলেন । কিন্তু পরিচয় দেয়ার আগেই তিনি তার কাছে এমনভাবে কান্নায় ভেঙে পড়লেন, ঠিক যেভাবে শেফা মাঝরাতে কেঁদেছে তার কাছে ।

অক্ষম তাবাচ্ছুম কাঁদতে কাঁদতে বুঝতে পারছিলেন, ওপাশের ভদ্রলোক তাকে চিনতে পারেননি । কারণ তাকে তো তিনি কানাডার ফোন নাম্বার দিয়েছিলেন ! একসময় শান্ত হয়ে নিজের পরিচয়টি মনে করিয়ে দিয়ে, মেয়ে-জামাইয়ের পুরো ঘটনাটি তাকে বললেন । তিনি উত্তর দিলেন, আমাদের দেশ থেকে আসা ছেলেমেয়েগুলো ক'দিনেই এদেশের মানুষের থেকে ফার্স্ট হয়ে যায়, সমস্যা সেখানেই । এটা আপনার একার সমস্যা নয় । এটা অহরহ ঘটছে । তবু আমি দেখছি । আপনি শান্ত থাকুন । বয়স্ক মানুষটি তাকে আরো বললেন, আমি চেষ্টা করবো কিন্তু আপনি আল্লাহ'র অনুগ্রহ চান !
সন্ধ্যা নাগাদ মাকে শেফার ফোন, 'মা, সৌ্রভ ফিরে এসেছে !'

তাবাচ্ছুম হিমকন্ঠে বললেন, এরকম শিক্ষা যেন জীবনে আর দরকার না হয় । ফোন রেখে সৌ্রভের দিকে মনোযোগী হও । আমি প্রার্থনায় বসবো !
 
 
   ---------------------------
 
   ছলনাময়ী ভালোবাসা :
 
  মেয়ে : আছো ??
           দুই ঘণ্টার পর রিপ্লাই ...
  ছেলে : হুমম..
  মেয়ে : কেমন আছো ?
  ছেলে : ভালো..
  মেয়ে : কি করো ?
  ছেলে : বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট খেলছি..
  মেয়ে : খেয়েছো ?
  ছেলে : হ্যা ! কিছু বলবা ?
  মেয়ে : কেন তুমি কি খুব ব্যস্ত ?
  ছেলে : হ্যা, পরে বাসায় গিয়ে কথা বলি ?
  মেয়ে : আচ্ছা !
            দুই দিন পর...
  মেয়ে : বিকালে ফোন দিলাম ব্যাক করলে না যে ?
  ছেলে : ঘুমিয়ে ছিলাম টের পাইনি..
  মেয়ে : সেদিন যে বাসায় গিয়ে ফোন করার কথা ছিল..
  ছেলে : রাতে আসতে দেরি হয়ে গিয়েছিল..
  মেয়ে : টেক্সট করে বলতে পারতে..
  ছেলে : এ সব কথা ভাল লাগছে না রাখো, বাইরে যাবো..
  মেয়ে : এতো রুড কথা বলো কেন আজকাল ?
  ছেলে : আমি এমনভাবেই কথা বলি..
            আবার সাত দিন পর..
  মেয়ে : এতদিন একবারও মিস করলে না ?
  ছেলে : এসব আবেগ রাখো তো..
  মেয়ে : তোমার সাথে কথা বলা বলতে চাওয়া আবেগ ?
  ছেলে : হ্যা ! আবেগই !
  মেয়ে : তো কেমন চলছে দিনকাল ?
  ছেলে : ভালোই..
  মেয়ে : বিরক্ত হচ্ছো ?
  ছেলে : বন্ধুদের সাথে আছি পরে কথা বলছি..
  মেয়ে : আমার না শরীরটা ভিসণ খারাপ, একটা মিনিট কথা বলবে ? প্লিজ..
  ছেলে : আমার সাথে কথা বললে কি শরীর খারাপ ভাল হয়ে যাবে ? ওষুধ খাও ভাল হয়ে যাবে..
  মেয়ে : কি হয়েছে জানতে চাইবে না ?
  ছেলে : আমি কি ডাক্তার ?
  মেয়ে : মনটাও খুব খারাপ তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে..
  ছেলে : আমি এখন ঢাকা ছেড়ে তোমার কাছে যাবো ?
  মেয়ে : নাহ ! তা আসতে যাবে কেন ?
  ছেলে : আচ্ছা যা বলার তাড়াতাড়ি বলো..আমার বন্ধুরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে..
  মেয়ে : ঠিক আছে যাও..
  ছেলে : আচ্ছা..
 
           মেয়েটা কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজিয়ে তার আবেগগুলো বিসর্জন করতে থাকে । আর এদিকে ছেলেটি    বন্ধুদের সাথে আনন্দ করতে থাকে । ছেলেটার কাছে মেয়েটার সস্তা আবেগগুলো ঠুনকো । আর মেয়েটার কাছে ছেলেটার প্রায়োরিটি সবার উপরে ।  
 
 

         প্রায় এক মাস পর...
   
   মেয়ে : তুমি তো প্রায়ই অনলাইনে থাকো, কই একবারও তো আমাকে নক করোনা..
   ছেলে : আমি অনলাইনে কাজে ব্যস্ত থাকি তোমার মত কারণ ছাড়া পড়ে থাকিনা..
   মেয়ে : সেদিন যে দেখলাম আড্ডা দিচ্ছিলে তখন তো একবার মনে করতে পারতে..
   ছেলে : তোমার মন চাইলে তুমিও করতে পারো..
   মেয়ে : তুমি ব্যস্ত থাকো তাই !
   ছেলে : হুম তোমারে বলছে..
   মেয়ে : তুমি কি আমাকে এড়িয়ে যেতে চাইছো ?
   ছেলে : কিভাবে বুঝছো ?
   মেয়ে : তোমার ব্যবহারে..
   ছেলে : এটা তুমি ভাবতেই থাকো আমি গেলাম..
   
 
   ছেলেটা হয়তো চাইনা মেয়েটা তার সাথে কথা বলুক । তবুও মেয়েটা ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করে । এই   বুঝি ফোন বা টেক্সট এলো । ফোনের টুং শব্দ হলেই মেয়েটা দৌড়ে আসে । হয়তো ছেলেটা তাকে মনে করছে । কিন্তু তার মনের ভুল ছেলেটা তাকে মনেই করেনি । মেয়েটা কাঁদে খুব করে কাঁদে । খুব অসহায় হয়ে কাঁদে । কিন্তু সেই কান্না , সেই আত্নচিৎকার ছেলেটার কানে পৌছায় না । মেয়েটা নির্ঘুম রাত জাগতে জাগতে অসুস্থ হয়ে পড়ে । পুরো পৃথিবীটা দুর্বিষহ মনে হয় তার । মেয়েটার বান্ধবীরাও রিলেশন করে । মেয়েটার তার বান্ধবীদের দেখে । তারা কত কেয়ার, কত শেয়ার, প্রতিমুহূর্তে মনে করে, খাওয়ার আগে ফোন দিয়ে জানতে চায় সে খেয়েছে কিনা । মেয়েটা এসব দেখে কাঁদে । আফসোস করে । সেও চায় কেউ তাকে কেয়ার করুক, কেউ তাকে ভালবাসুকঅথচ মেয়েটিকে ছেলেটি " কেমন আছো " বলে একবারও টেক্সট করেনা । মেয়েটি আর অবহেলা পেতে চায় না । তাই সে সিদ্ধান্ত নিলো তার জীবন রাখতে চায় না । কিন্তু মরে যাওয়ার আগে ছেলেটিকে বললো..     
     
    মেয়ে : আমি তোমাকে ভীষণভাবে ভালবাসি..জানো আমার মত করে কেউ তোমাকে ভালবাসতে পারবে না..
    ছেলে : হুম! জানি..
    মেয়ে : ভাল থেকো..
    ছেলে : এমন কথা বলছো কেন ? কিছু খেয়েছো ?
    মেয়ে : হ্যা, ঘুমের ওষুধ খেয়েছি..
    ছেলে : কয়টা ?
    মেয়ে : আটটা..
    ছেলে : সমস্যা নাই, আটটা খেলে কেউ মরে না..
    মেয়ে : তুমি কি আমার মৃত্যু কামনা করছো ?
    ছেলে : নেশাখোরদের বেঁচে থাকার কোন মানে হয়না..
    মেয়ে : নেশাটা তোমার জন্য করেছি, তোমাকে ভালবাসি তাই নেশা করেছি..
    ছেলে : যে নিজেকেই ভালবাসতে জানেনা সে অপরকে কি ভালবাসবে.. আমি চাই আমাকে কোন সুস্থ মানুষ ভালবাসুক, কোন অসুস্থ, মেন্টাল নয়..
    মেয়ে : হুম আর কেউ ভালবাসি বলবে না..         
 
    মেয়েটা আবারও কাঁদে । হয়তো কিছু আশা করেছিল ছেলেটির থেকে । মন খারাপের সময় ছেলেটিকে পাশে পাবে, তাকে হাসাবে, তাকে একমিনিট হলে মনে করবে, সবার সামনে তাকে ভালবাসি বলবে কিন্তু না! ছেলেটা কখনও মেয়েটিকে কারও সামনে আনতে চায়নি । একমিনিটও সময় দিতে চায়নি । এভাবেই দিন চলে যেত দুজনের । আজকাল মেয়েটা আর ছেলেটার কথা ভেবে কাঁদেনা । তার থেকে কোন কিছু আশা করে না । বেশ মানিয়ে গুছিয়ে নিয়েছে নিজেকে । একদিন হঠাৎ ছেলেটাকে কেন্দ্র করে একটা মেয়েকে আবিষ্কার করে । কিছুদিন পর ঐ মেয়েটা তার সাথে কথা বলতে আসে । ছেলেটার ব্যাপারে জানতে চায় । মেয়েটি সেদিন বুঝতে পেরেছিল সবকিছুই । এতদিন ছেলেটা তাকে অপশনে রেখেছিল । তবুও মেয়েটা ছেলেটার কোন কথা বলেনি । কারণ ছেলেটা তাকে কখনও কারও সামনে ভালবাসার দাবি নিয়ে আসেনি । তবে ঐ মেয়েটা বলেছিল, " তারা দুজন দুজনকে খুব ভালবাসে " এপারের মেয়েটা একটা ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মুচকি হেসে নিজেকে বলেছিলো, " মানুষ কত যে বোকা হয়, সেটা নিজেকে না দেখলে বিশ্বাস হতো না" ।
এখানে একটা কথাই বলার আছে যে ভালোবাসতে পারবেন না তাহলে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ানোর দরকার নেই । ছলনা করে পবিত্র হৃদয় টাকে নষ্ট করার কি দরকার ? ভালোবাসুন ভালো থাকবেন । ছলনা করে বা কারো ভালোবাসা নিয়ে খেলা করে নিজেকে বড় ভাবার দরকার নেই । খুব শীঘ্রই এমন দিন আসবে সেদিন আপনিও কারো ছলনা পাত্র হবেন কেও আপনার ভালোবাসা নিয়ে খেলবে । তাই ভালবাসতে শিখুন ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা পাবেন আর কষ্টের বিনিময়ে কষ্ট ।
 
 ---------------------------------------
 
 
কেউ আপন না
 
যে তোমাকে বোঝেনা তাকে আর বিরক্ত করো না, কারণ যে তোমাকে বুঝবে না তাকে হাজার মিনতি  করলেও সে বুঝবে না আর যে তোমাকে বুঝবে সে তোমাকে তিনবারের মধ্যেই খুঁজবে মানুষ এখন এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে , যে বোঝেনা তাকেই বোঝানোর চেষ্টা করে মানুষ এটাও বোঝেনা সব চেষ্টাই জয় না । জীবনে সব চেষ্টাই জয় হয় কিন্তু একটা চেষ্টা কোনদিনও জয় হয় না, সেটা হলো ভালোবাসা । তার পিছনে ছোটছো শুধুমাত্র একটু ভালোবাসা পাওয়ার আশায়, কিন্তু সে তোমাকে বোঝেনা আর তুমি তাকে হাজার মিনতি করতে থাকো, সেই চেষ্টার কোনদিনও জয় হবে না । সারা জীবন যদি তার পেছনে ঘুরতে ঘুরতে শেষ করে দাও তবুও সে বোঝবে না কি তুমি তাকে ভালোবাসো, যে বোঝার মানুষ সে তিন বারের 
 
মধ্যে খোঁজার মানুষ । যে বুঝবে সেই তোমাকে খুজবে আর যে বুঝবে না তাকে হাজার মিনতি করল সে তোমাকে
খুজবে না । মানুষ এখন এটা বোঝেনা বেকার তার পেছনে শুধু সময়টাই নষ্ট করছে, আর সময়ের সাথে সাথে কিছু কষ্ট কুড়াচ্ছে । তার পেছনে সময় নষ্ট না করে একটু সময় নষ্ট করে খোদার কাছে দোয়া করে বল, কি তাকে যেন ভালো রাখে সে যেন যেখানেই থাকুক তাকে যেন ভালো রাখে, দেখবে আল্লাহ তোমাকে ভুলে যাওয়ার জন্য তৌফিক দান করবেন । কেননা খোদাও চায় না সে তোমাকে বুঝুক । 
 

    ---------------------------------------      

         সত্যিকারের ভালোবাসা 

যে সম্পর্কের মধ্যে বেশির ভাগ সময় ঝগড়া লেগে থাকে সেটাই হলো সত্যিকারের ভালোবাসা । অনেকেই বলে সম্পর্কের মধ্যে সন্দেহ থাকলে ভালোবাসা টিকে না । আমি বলি সন্দেহ না থাকলে সত্যিকারের ভালোবাসাও হয় না । সন্দেহ না থাকলে একে অপরকে হারানোর ভয় থাকেনা । আর যেই সম্পর্কে একে অপরকে হারানোর ভয় থাকে না - সেটা কখনো রিয়েল লাভ বা রিয়েল রিলেশানশীপ হতে পারে না । হারানোর ভয় থেকে সন্দেহ -আর এই সন্দেহ থেকে ঝগড়া - আর এই ঝগড়াই বলে দেবে তুমি সঠিক রিলেশানশীপ আছ । মনে রাখবে, যে এমন সন্দেহ করে আর যাই হোক সে কখনো তোমায় ছেড়ে যাবে না । প্রিয় মানুষকে হারিয়ে কিছু মানুষ বেঁচে থেকে মরে যায় । আর কিছু মানুষ মরে গিয়ে বেঁচে যায় । এই কঠিন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায় । যে বা যারা নিজের সত্তাকে ঝুলিয়ে আত্যহত্যার দিকে ঝুকে যায় । জীবনের কঠিন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চায় । সমাজ তাদের খারাপ 
 

চোখে দেখে । অথচ একবারও বুঝতে চায় না - ঐ মানুষগুলো জীবনে কতটা কষ্ট বুকে নিয়ে বেঁচে আছে । কষ্টের ভয়াবহতাটা ঠিক কতটা হলে নিজের অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা করে একজন মানুষও তা বুঝতে চায় না । তবে সুইসাইড লাইফ কোন সলিউয়েশান না । আজ মরলে কাল সবাই ভুলে যাবে । বরং এমন কিছু কর যাতে করে মানুষটা বার বার তোমার কথা মনে করে । আর আফসোস করে ভালো থাকুক নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে যাওয়া মানুষগুলো ।
 
 --------------------------------
 
 
প্রিয়জনকে ছাড়া হাজার চেষ্টা করলেও ভালো থাকা যায় না । চোখের জল সবাই দেখে কিন্তু হৃদয়ের কষ্ট কেও দেখেনা । কোনকিছু পাওয়ার আনন্দ হয়তো কিছুদিন থাকে কিন্তু কিছুইছু না পাওয়ার বেদনা থাকে সারাটা জীবন । তুমি যতোটা দুঃখ পেলে কাঁদো আমি তার থেকে বেশি দুঃখ নিয়েও হাসি । কলিজায় জায়গা দেওয়া মানুষগুলোই একসময় কলিজায় আঘাত করে চলে যায় এটাই বুঝি বাস্তবতা । অশ্রু হলো এমন ভাষা যা হৃদয়, মুখে প্রকাশ করতে পারেনা । আমি হাত দিয়ে যা ছুই তাই দুঃখ হয়ে যায় ।



------------------------------


আমি কখনো কারো প্রিয় হতে পারিনি । আমি রোমান্টিক কথা বলতে পারি না । পারিনা কথার হাজারো ফুলঝুরি ঝারাতে । পারিনা কাউকে মিথ্যা আশ্বাস দিতে । আমি খুবি অভিমান । তেমন কারো সাথে মিশতে পারিনা তবে একবার কারো সাথে মিশে গেলে তাকে সহজে ভুলতে পারিনা । কিন্তু আমি আমার রাগ আর অভিমানের জন্য কখনো কারো প্রিয় হতে পারিনি । তবে কারো প্রিয় হওয়ার জন্য নিজের রাগ অভিমানকে তাড়িয়ে দিব তাও কখনো করবো না । কারণ এখনকার মানুষ বরই স্বার্থপর ।
 
নিজের প্রয়োজনে কাছে আসবে প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে দূরে চলে যাবে । তাই আমি আমার মত থাকবো । হয়তো কখনও কেউ আমাকে বুঝবে নয়তো আমার মত আমি একাই থাকবো । নাইবা হলাম কারো প্রিয় ।

--------------------------------

মিথ্যা ভালোবাসা চেনার উপায় :

মিথ্যা ভালোবাসার চেনার ৫ টি উপায়, আশাকরি কাজে দিবে ঃ (১) অসম্মান করা- তোমার পার্টনার যদি তোমাকে তার বা তোমার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সামনে অসম্মান করে বা কথায় কথায় তোমাকে নীচু দেখানোর চেষ্টা করে, তাহলে বুঝে নিও সে তোমাকে ভালোবাসে না । কারণ যে সত্যিকারের ভালোবাসবে সে কখনো তোমাকে অসম্মান করবে না, অন্যের সামনে ছোট করবে না ।


 
তার জীবনে তোমার মর্যদা থাকবে অনেক ঊর্ধ্বে । (২) গুরুত্ব না দেওয়া- তোমার পার্টনার যদি তোমাকে গুরুত্ব না দেয়, তোমার যদি মনে হয় সে তোমার কথাগুলো মন দিয়ে শোনে না, তোমার সাথে কথা বললে বা পাশে থাকলে কেমন যেন অন্য মনস্ক ভাব দেখায়, তাহলে ভাববে সে তোমাকে ভালোবাসে না । হয়তো টাইমপাস করছে আর নয়তো বা বিশেষ কোনো স্বার্থে তোমার সাথে আছে । কেনকি যে সত্যিই ভালোবাসে সে অবশ্যই ভালোবাসার মানুষটাকে গুরুত্ব দেয় । (৩) কথা দিয়ে কথা না রাখা- তোমার পার্টনার তোমাকে কথা দিয়েও কথা রাখতে পারেনি, অথচ তার মধ্যে কোনো অনুশোচনাবোধ কাজ করছে না, তুমি কষ্ট পেয়েছো বুঝেও যদি তার তোমার কষ্ট পাওয়াতে হারাপ না লাগে বা তোমার কাছে যদি সে তার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে তোমাকে বোঝানোর চেষ্টা না করে, তাহলে তোমার প্রতি ভালোবাসা তার নেই । (৪) শরীরকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া । (৫) ভবিষ্যতের পরিকল্পনা না করা ।


-----------------------


বুদ্ধিমান মেয়েরা কখনো স্বামীর এটি করে না


জীবনে কিছু করতে হলে প্রথম নয় বেস্ট হতে হবে । কারণ প্রথম হলে পরবর্তীতে আপনাকে অবশ্যই কেউ না কেউ পাশ কাটিয়ে যাবেই, কিন্তু প্রথম হলে কারোর সাধ্য নেই আপনাকে অতিক্রম করার । প্রতিটি কাজ করার আগে একবার হলেও নিজেকে জিজ্ঞেস করুন কাজটি আপনে কেন করবেন ? অন্যকে দেখে নিজেকে কখনও ছোট ভাববেন না বা নিজেকে দুঃখী ভাববেন না , অন্যে দৃষ্টিতে নিজেকে দেখুন দেখবেন আপনি অনেক সুখী । আগুনকে যে ভয় পায় সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারেনা । যদি সন্তুষ্টি নিয়ে ঘুমাতে যেতে চাও তবে একটি লক্ষ্য নিয়ে সকাল শুরু কর । একজন মানুষের অর্জন কত বড় তা বুঝতে হলে দেখো অর্জনের পথে সে কত বড় বাধা পার করেছে ।


 
খারাপ হওয়ার জন্য ভালো কাজ না করে হাত গুটিয়ে বসে থাকাটাই যথেষ্ট ।সব ধরনের অনিশ্চয়তা হতাশা আর বাঁধা থাকা সত্ত্বেও নিজের সবটুকু দিয়ে সফল হওয়ার চেষ্টায় শক্তিমান মানুষকে দুর্বলদের থেকে আলাদা করে । অন্ধরা দেখতে না পেলেও আলো আলোই থাকে সে অন্ধকার হয়ে যায় না । যদি সত্যি মন থেকে কিছু করতে চাও তাহলে পথ পাবে । আর যদি করতে না চাও তাহলে অজুহাত পাবে । যে তোমাকে খুব সহজেই পেয়ে যাবে সে কখনোই বুঝবে না তুমি কতটা মূল্যবান । বুদ্ধিমান নারী কখনোই তার স্বামীকে অপমান বা মনে কষ্ট দিয়ে কিংবা কারো সামনে ছোট করে থা বলে না । কারণ সে জানে তার স্বামী এই দুনিয়ার সুখ দুঃখের সাথী এবং পরকালের জান্নাতের সঙ্গী । কিছু ভালোবাসা এলোমেলো জীবনটাকে ধ্বংস করে দেয় আর কিছু ভালোবাসা গুছানো জীবনটাকে ধ্বংস করে দেয় । স্বপ্ন কারো সাথে বেঈমানী করে না, বেঈমানী করে স্বপ্ন দেখানো মানুষ গুলোই । যেইদিন দেখবে রাগ করা ছেড়ে দিয়েছি সেইদিন বুঝবে ভালোবাসাটাও ছেড়ে দিয়েছি ।
-------------------------------------

ভুলতে পারিনা তোমায়

আমি ছিড়ে ফেলেছি সেই ডায়রির পাতা যেখানে লেখা ছিলো হাজারো স্বপ্নের কথা । শুধু শুনতে পায় আমার মনের ব্যথা যেখানে জমে আছে অনেক ব্যথা । জীবনে যতটা বিপদে পরবে ততটা তোমার কাছের মানুষ গুলোকে চিনতে পারবে । দুঃখ সবার মাঝেই থাকে কিন্তু সবাই কি তা সইতে পারে । কেও স্বয়ংভাবে কেও বা জমা রাখে হাসির সুরে কেও বা সইতে না পেয়ে হারিয়ে যায় অনেক দূর । আপন মানুষ কখনও পর হয়না যদি পর হয় তাহলে বুঝে নিও সে কখনও তোমার আপন ছিলো না ।


 
সে তার সময় কাটানোর জন্য আপন সেজে ছিলো । কাওকে না পেলে জীবন কখনো শেষ হয়না কাওকে পেয়ে আবার হারালে জীবনে আর কিছু বাকি থাকেনা । কষ্ট করে কি ভালোবাসা হারিয়ে যায় কখনই না যে ভালোবাসতে জানে হাজার কষ্টের মাঝেও ভালোবাসা যায় যা কখনও হারাবার নয় । কারো কাছ থেকে কিছু কেঁড়ে নিয়ে সুখী হওয়া যায় কিন্তু সেটা প্রকৃত সুখ নয়, নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে যাকে খুশি করা যায় সেটাই হচ্ছে প্রকৃত সুখ । আমাকে কষ্ট দেখেওনা আমায় কেন ছারিস না উত্তরে সে আমাকে বলল ছেড়ে যেতে পারিনা । জীবন থেকে মুক্তি নিয়ে কখনও যদি হারিয়ে যায় চোখের জল ফেরেনা, মনে করবে আমি তোমার স্বপ্ন ছিলাম আর ঘুম ভাঙ্গতে আমি চলেও গেলাম ।

------------------------------------------------------

বাস্তব জীবন নিয়ে কিছু কথা

আমি সেদিন টাকাকে জিজ্ঞেস করে ছিলাম হে টাকা তুই তো এলি আগে কেন এলিনা ? আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেল ভালোবাসার মানুষটা । টাকা তখন উত্তরে বলল আমাকে দিয়ে জীবনের সব কিছু কেনা যায় তবে ভালোবাসেনা, আমি না থাকলে যদি কেউ হারিয়ে সেটা বেঈমান ছিল ভালোবাসেনা । একটা মেয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে কান্না করতে করতে বাবার বাড়ি গিয়ে মা কে বলে মা আমার স্বামী এতটাই খারাপ ব্যবহার করে, এতটাই অত্যাচার করে আমি আর টিকে থাকতে পারছিনা আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে মেরে ফেলবো তুমি কি আমাকে কোন সাহায্য করতে পারবে । তখন তার মা বলে তুই যদি তাকে এভাবে মেরে ফেলিস তাহলে তো তোর জেল হয়ে যা বে ফাঁসী হয় যাবে, তখন কি তুই ভালো থাকতে পারবি ? বরং তোকে আমি একটা বুদ্ধি দেই একটা মেডিসিন দেই এই মেডিসিনটা তুই আজ থেকে তিন মাস পর্যন্ত তাকে প্রতিদিন খাওয়াবি তিন মাস খেলে সে অটোমেটিকলি মারা যাবে আর এই তিন মাসের মধ্যে তার সাথে তুই এমন সুন্দর আচরণ করবি এতো ভালো আচরণ করবি যাতে আশেপাশে কেউ তোকে সন্দেহ না করে । তারপর মেয়েটি খুশি মনে চলে যায় আর বাসায় গিয়ে


 
প্রতি রাতে দুধের সাথে মিশিয়ে সেই মেডিসিনটি খাওয়াতে থাকে । দুই মাস পর মেয়েটি কান্না করতে করতে আবার মায়ের কাছে আসে এসে বলে মা আমার স্বামীকে আমি মারতে চাইনা না সে এতটাই ভালো হয়ে গেছে আর এতটাই ভালোবাসে আমায় তাকে ছাড়া আমি বাঁচতেই পারবো না । তখন তার মা বলেন আরে তর স্বামী ভালো হয়নি ভালো হয়ে গেছিস তুই, কারো কাছ থেকে ভালোবাসা পেতে হলে তাকে আগে ভালোবাসতে হয় কারো কাছ থেকে সুন্দর ব্যবহার পেতে হলে তার সাথে আগে সুন্দর ব্যবহার করতে হয় । একটা ছেলে সারাদিন কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকে হাজারটা টেনশন মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, বাড়িতে এসে সে যদি ভালোবাসা না পায় সে তো খারাপ আচরণ করবেই এখানে দোষটা তোর স্বামীর নয় দোষটা ছিল তোর । তাড়াতাড়ি যা অতীতের ভুলের জন্য এখনই গিয়ে ক্ষমা চা আর হে ওটা কোন মানুষ মারার মেডিসিন ছিলো না ওটা জাস্ট ময়দা ছিলো তোকে বুঝানোর জন্য ।

------------------------------


অভিমান

আমি অভিমান করি তুমি আমার কষ্ট বুঝবে বলে আমি দূরে থাকি তুমি আমাকে মিস করবে বলে । ভালোবাসা দিয়ে যাকে বাঁধতে পারিনি চোখের জল দিয়ে তাকে কখনো বাঁধতে পারবোনা তাই বৃথা চোখের জল ঝরিয়ে লাভ নেই । নিজের অজান্তেই তাকে এতটা ভালোবেসে ফেলেছি কখন নিজেও জানি না । অল্পতেই রাগ করি রাগ ভাঙ্গাবে বলে তাই বলে ভুলে যাবে এটা কখনো ভাবিনি । আজ আমি কেঁদেছি কাল হয়তো তোমাকে অনুতপ্ত হতে হবে কারণ কাল আমি আর তোমার রইব না । যদি জানতাম জীবনের সব চাওয়া পূরণ হয় না তাহলে কখনো তোমাকে চাইতাম না কারণ আজ তোমাকে পাওয়ার চেষ্টায় নিজেকে কোথায় যেন হারিয়ে ফেলেছি । আজ পৃথিবীর কোন এক পাসানী মানুষের জন্য মনটা খুব কাঁদছে আপন মানুষ কিভাবে ভোলা যায় যদি তা জানতাম । শুধু হাত ধরে কিছু পথ


 
চলার নামই সম্পর্ক নয় তাকে আঁকড়ে ধরে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সুখে-দুখে পাশে থাকার নামই সম্পর্ক । ঠকায় তো তারা যাদের আমরা মন থেকে বিশ্বাস করি । ভালোবাসা মানে কাউকে জয় করা নয় বরং নিজেই কারো জন্য হেরে যাওয়া ।। তুই আমার মনের ক্যানভাসে ধাক্কাটা প্রথম প্রেমের তুলে তুই নিজেই বল তোকে কিভাবে এত সহজে মন থেকে মুছে ফেলি ।। অভ্যাস হয়ে গেছিলো সে আমার ! তাকে ছাড়া চলতৌই না ! শুধু একটাই স্বপ্ন ছিল । তার সাথে পুরো লাইফ টা তার হাত ধরে কাটিয়ে দেওয়া ! মন খারাপ গুলোকে হাসির আড়ালে লুকিয়ে রাখার অভ্যাস টা আজও ছাড়তে পারলাম না । তুমি ভুল করেও ভুল করোনি তাই আমি অপরাধী তুমি পথ দেখিয়ে পাশে হাঁটুনি তাই এখন আমি একলা হাটি । রিসিভ না করা প্রতিটা কল উত্তর না দেয়া প্রতিটা ম্যাসেজ আর এড়িয়ে যাওয়া প্রতিটা কথা মন কে জানান দিচ্ছে যে সব শেষে আমি কতটা মূল্যহীন হয়ে গেছি । কথা হয়েছিল সেই দিন বন্ধ হয়েছিল সেই দিন দুঃখ কষ্ট পাবো সেই দিন ভুল বুঝবে সেই দিন আমি ভুলে যাব সেইদিন মরে যাব সেইদিন । plz dont belive me... জলের কোন মূল্য হয়না মূল্য হয় তেষ্টার মৃত্যুর কোনো মূল্য নেই মূলত হয় নিশ্বাসে ভালোবাসার কোন মূল্য নেই মূল্য তো হয় বিশ্বাসে । যেদিন তুমি বুঝবে ভুলগুলো তোমার ছিল সেদিন আমাকে পাগলের মত খুঁজবে আর চোখের জলের পরিমাণটা আমার থেকেও বেশি হবে । আমাদের জীবনটাও তো ওই চাঁদের মতো যা সুন্দর অথচ একা ।। মানুষকে ভালোবাসবে মন দেখে চেহারা দেখে নয় সে দেখতে যেমনই হোক তার মনটা হলো আসল ।। সেদিন খুব খারাপ লেগেছিল যেদিন বলেছিলে তোমার মাঝে কি প্রতিভা আছে যে তুমি আমাকে ভালোবাসবে ? কথাটা মনে পড়লে শুধু কষ্ট লাগে ভালো আছো জানি ভালো থাকো । কিছু কিছু কথা আছে বলতে পারিনা এমন কিছু কষ্ট আছে সইতে পারিনা এমন কিছু ফুল আছে তুলতে পারি না আর এমন একটা মনের মানুষ আছে ভুলতে পারিনা । চুপি চুপি বলি তোমায় প্রিয়তমা আমায় ছেড়ে যেন দূরে যেওনা আজ তুমি আমার হৃদয়ের একদম গহীন বনে তোমায় ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না এই ভুবনে । পাথর চাপা কষ্ট বুকে কষ্টের কথা বলি কাকে যার কারনে নিঃস্ব হলাম সেই তো আছে বেশ সুখে আর আমার কথাগুলো ভুলেই গেছো । তোমার শহরের কোথাও আমি নেই অথচ আমার পুরো শহরটাই তুমি, তুমি আমার ব্যস্ততা আর আমি তোমার অবসর । আমি যখন তোমার নাম মাটিতে লিখলাম বৃষ্টিতে ভিজে গেল আকাশে লিখলাম আকাশ মেঘে ঢেকে গেল কিন্তু যখনই হৃদয় লিখলাম ঠিকই তখন তুমি আমায় ভুলে গেলে । বুকে কষ্ট চেপে একলা থাকি কান্নার নোনা জল অধরে মাখি মনে কষ্ট চেপে আয়না ফিরে তুই আমারি বুকে । হাসতে ভুলে গেছি কাঁদতে ভালো লাগে অভিনয়টা ভালো জানো বুঝিনি আগে, ভুল মানুষের হাত ধরেছি নিজের মানুষ করে পর । যদি তুমি জানতে কতটা প্রেম জমেছে বুকে রোদেলা সময় হয়েছে মেঘ তোমারি নামে পুড়ছে আবেগ । অভিমানের জীবন কেন থামে না কান্না ভরা এই মন কিছু জানেনা কষ্ট ভরা এই বুকে সীমাহীন বেদনা আর যার জন্য এই মন কাঁদে সে তো বোঝেনা । প্রপোজালটা সে করলেও, ভালো টা আমি একাই বেসেছিলাম । হাজার বাঁধা এসেছিলো অবশ্য ! কম মার খাইনি তার জন্য তাও ভালবাসতাম খুব ! কম অবহেলা সহ্য করিনি তার, অনেক অপমানও করতো ! তাও তার সাথে কাটানো ভালোদিন গুলোর কথা ভেবে সব ভুলে যেতাম ! অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম তাক নিয়ে কখনো ভাবিনি সে আমার সাজানো স্বপ্ন এইভাবে ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে । প্রেম ভালোবাসা বিশ্বাস ভরসার কাছে অভিমান অর্থহীন । আবার অভিমানের সময় পাড় হতে না হতেই সমস্ত মনের মেঘ ছাপিয়ে কপালে আদর মেখে বুকে টেনে নেওয়াটাই ভালোবাসা !! আজ সেই তুমি ই আমাকে মাঝপথে ফেলে অন্য কাউকে পথ দেখাতে ব্যস্ত ! তাও এই টুকুই চাই, যেখানেই থাকো ভালো থেকো । একটা মানুষ কখনো তার প্রিয়জনের উপর রাগ করে না যা করে তা হচ্ছে অভিমান আর অভিমান কখনো-ই রাগ থেকে হয় না কষ্ট থেকে হয় ।।। ভালোবাসার নামে যারা ধোঁকাবাজি করে তাদেরকে মানুষ ক্ষমা করলেও সময় কখনো ক্ষমা করে না ।। ভালোবাসার শুরুতে সবাই প্রতিজ্ঞা করে আমি তোমাকে ছেড়ে যাব না কিন্তু সময়ের সাথে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে যায় ।

-------------------------------


মায়া একটা কঠিন জিনিষ

মানুষ অপমান ভুলে যায়, অধিক অত্যাচার ভুলে যায়, অধিক ভালোবাসাও ভুলে যায় কিন্তু কারোর মায়ায় পড়ে গেলে তাকে ভুলে যায় না । বেশিরভাগ মানুষ প্রথমবার ভালোবেসে ঠকে গিয়েও দ্বিতীয় কাউকে ভালবাসতে পারে, তবে কিছু মানুষই প্রথম মানুষটির স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকে । শুধুমাত্র মায়া থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারার কারণে, ভুলে যেতে না পারার কারণে । মানুষের জীবনে প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় যত মানুষই আসুক না কেনো, এসব কোন বিষয় নয় যদি কারো প্রতি মায়ায় আটকে না যায় । বরং সেই মানুষটাই ভাগ্যবান কিংবা ভাগ্যবতী যদি ভালোবেসে কেউ তার উপর মায়ায় পড়ে যায় । মানুষ সবকিছু থেকে বেড়িয়ে আসতে পারলেও যদি একবার কারোর মায়ায় আটকে যায়, তবে সেই মায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনা । মানুষ কয়েক বছরের সম্পর্কও সহজে ভুলে যেতে পারে মায়া না থাকার কারণে, আবার কয়েকদিনের সম্পর্কও ভুলতে পারেনা মায়ায়ডুবে গেলে । কে তোমাকে কতটা ভালোবাসে কিংবা তোমাদের সম্পর্ক কতদিনের এসব থেকেও

বেশি গুরুত্বপূর্ণ কে তোমার কতটায় মায়ায় পড়ে আছে । কাউকে ভালোবেসে মায়ায় ফেলতে পারলে সেখানে ভালোবাসার গভীরতা কিংবা সম্পর্কের বয়স নির্ণয় করার দরকার পরেনা, এমনিতেই মানুষটা থেকে যায় । হুট করে ভালোবাসা যায়, হুট করে নতুন সম্পর্কে জড়ানো যায়, হুট করে সম্পর্ক থেকে বেড়িয়েও আসা যায় কিন্তু হুট করে কারোর মায়ায় পড়া যায় না । কিংবা হুট করে কারো মায়া থেকে বেড়িয়েও আসা যায় না,যদি মন থেকে না চায় । স্মৃতি মানুষকে যতবেশি কষ্ট দেয় তার থেকে বেশি কষ্ট দেয় মায়া । মায়া এমন এক অদৃশ্য খুন যা দেখা যায় না, ছোঁয়া যায় না শুধুমাত্র ভেতর থেকে অনুভব করা যায় । পৃথিবীর সব থেকে বড় অদৃশ্য খুনের নাম মায়া । একটা নির্দিষ্ট মানুষের জন্য মন খারাপ হলে ঐ মানুষটা ব্যতীত পৃথিবীর আর কেউ মন ভালো করে দিতে পারে না, কেনো যেনো ঐ মানুষটাকে ম্যাজিশিয়ান মনে হয় । যে মানুষটাকে দেখলে মনের ভেতর হাজারো অনুভূতি অনুভব হয়, সেই মানুষটা ছাড়া আর কাউকেই কোনো কিছুতে অনুভব করা যায় না । সেই মানুষটাকে এতটাই আপন মনে হয়, জেন সকল অনুভূতি ঐ মানুষটার জন্যই রয়েছে । যে মানুষটার উপর একবার মায়া জন্মে যায়, সেই মানুষটার মায়া থেকে বেড়িয়ে আসা যায় না । প্রথম দেখায় একবার জাকে ভালো লাগে কিংবা জার উপর চোখ আটকে যায় সেই মানুষটা যেমনই হোক না কেনো তাকে ব্যতীত পৃথিবীর আর যত সুন্দর মানুষই আসুক না কেনো ভালো লাগেনা । বেশিরভাগ মানুষই এতসব ভালোবাসা, মায়া,অনুভূতি উপেক্ষা করে চলে যায় ।


-------------------------------



কিছু মানুষ ভালোবাসে ঠিকই কিন্তু সম্মানটা ধরে রাখতে পারে না

তুমি যতই চেষ্টা করো না কেন একজনের পক্ষে কোনো সম্পর্কই খুব বেশিদিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়, যদি অপর মানুষটা সম্পর্কের মূল্যটা একটুও বুঝতে না পারে । বন্ধুত্ব কিংবা প্রেম যে কোনো সম্পর্কই গড়া সহজ কিন্তু ধরে রাখাটা কঠিন, ধরে রাখার জন্য দুজনেরই চেষ্টা থাকতে হয় । ইচ্ছা থাকতে হয় । একজন খুব বেশি প্রায়োরিটি দিয়ে যাচ্ছে আর অপরজন একটুও দিচ্ছে না, তাহলে সম্পর্কটাও বেশিদিন গড়াবে না । সম্পর্ক ধরে রাখতে দুজন মানুষকে সমানে আগাতে হয় , দুটো মনের ইচ্ছাও ধরে রাখতে হয় । সেক্রিফাইস, কম্প্রোমাইজ, গুরুত্ব কিংবা রেস্পেক্টও দুজন মানুষকে সমানভাবে করতে হয় । খুব বেশি এদিকওদিক কিংবা এলোমেলো হলে সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব আসবেই । একসাথে চলার জন্য দুটো হাতের দরকার হয়, একসাথে থাকার জন্য দুটো মনের দরকার হয় । যদি দুইজনের ইচ্ছা মন থেকে না আসে তাহলে একসাথে চলা কিংবা থাকা যায় না । সম্পর্ক হলো নৌকার


মতো, দুপাশেই সমান ভর থাকতে হয় কমবেশি হলে যে বিপদ !! কেও তোমাকে ভালোবাসে তার মানে এই নয় যে সবকিছুই তাকেই করতে হবে, দায়বব্ধতা কিংবা দায়িত্ব তার যতটুকু তোমারও ঠিক ততটুকুই । কেও প্রতিনিয়তই তোমাকে প্রায়োরিটি দিচ্ছে কিংবা সেক্রিফাইস কম্প্রোমাইজ সবকিছুই অপর মানুষটা করছে , আর তুমি কিছুই করছো না তাহলে তুমি তাকে ভালবাসতে পারোনি । কেও তোমার জন্য সবটা বিলিয়ে দিবে আর তুমি শুধু বসেই সব উপভোগ করে যাবে এমনটা নয় । ঐ মানুষটারও ব্যক্তিত্ব আছে , তারও ইগো কিংবা আত্মসম্মান আছে । তোমার জন্য সবকিছু বিলিয়ে দিবে আর তুমি কিছুই করবে না এমনটা ভাবা বোকামি , সময় থাকতেই কাছের মানুষটাকে মূল্য দাও । তাকে অবহেলা দিয়ে নয়, ভালোবেসে মূল্য দিয়ে তাকে আপন করে নিতে শিখো । নয়তো মানুষটা ধীরে ধীরে তোমার উপর থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে । একটুখানি এড়িয়ে চললে আগ্রহ বাড়ে, কিন্তু যদি অনবরত এড়িয়ে চলতে থাকো, তাহলে মানুষটা আগ্রহটাও ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায় । কথায় আছে, লোহা গরম থাকতেই বাড়ি দিতে হয়, নয়তো শক্ত হয়ে গেলে তখন কিছু করার থাকে না । তেমনিভাবে মানুষটার মন নরম থাকতেই তাকে কাছে টেনে নাও, মন শক্ত হয়ে গেলে তখন চাইলেও তুমি তাকে আর কেছে পাবে না । "প্রিয় মানুষটার থেকে ভালোবাসা পাবার চেয়ে সম্মান পাওয়াটা বেশি জরুরী । আপনাকে ভালো অনেকেই বাসবে, কিন্তু সবাই আপনাকে সম্মান করতে পারবে না !! কিছু মানুষ ভালোবাসে ঠিকই কিন্তু সম্মানটা ধরে রাখতে পারে না, সামান্য কিছু হলেই রাগের মাথায় আজেবাজে কথা বলে দেয় । এই বাজে রাগের জন্যই তারা কারো সাথে বেশিদিন থাকতে পারেনা । সম্পর্কে রাগ, ঝগড়া, অভিমান হবে কমন ব্যাপার । অথচ এই বিষয়গুলো অধিকাংশ মানুষই সঠিকভাবে সামলাতে পারে না । একটু উনিশ থেকে বিশ হলেই শুরু করে দেয় বাজে ব্যবহার । রাগ, ঝগড়া কিংবা অভিমান আজ আছে কাল থাকবে না কিন্তু রাগের মাথায় আপনি যা বলে দিবেন সেটা সারাজীবনের জন্য অন্তরে গেঁথে থাকবে । সেই সাথে আপনি নিজেও তার কাছে মনের দিক থেকে ছোট হয়ে থাকলেন । যে মানুষটাকে আপনি ভালোবাসেন অনুভব করেন, ছেড়ে গেলে থাকতে পারেন না । তাহলে সেই মানুষটার সাথে অযথা বাজে ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করে কোন লাভ নেই । প্রিয় মানুষটার সাথে নমনীয় ভাবে কথা বলুন । এতে আপনারাই ভালো থাকবেন । প্রিয় মানুষটার কাছে নমনীয় হয়ে থাকলে ছোট হয় না, বরং এতে আপনার বেক্তিত্ব শোভা পায় । কাওকে ছোট করে নিজেকে বড় করা যায় না । আপনাকে বড় হয়ে থাকতে হলে অবশ্যই আপনাকে আগে ছোট হতে হবে, নমনীয় হতে হবে । সম্পর্ক ধরে রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে ধৈর্যশীল ও নমনীয় হতে হবে । অপর মানুষটাকে সম্মান করাটা জানতে হবে । নয়তো একের পর এক সম্পর্ক করে যাবেন ঠিকই, কিন্তু কারো সাথে বেশিদিন থাকতে পারবেন না । হারিয়ে যাওয়ার আগেই মানুষটাকে ধরে রাখুন । নিজের ভুলগুলো যদি বুঝতে পারেন তাহলে মানুষটার কাছে ইগো না দেখিয়ে ভুলগুলো স্বীকার করুণ । নয়তো একদিন দেখবেন আপনার কাছে সবকিছুই আছে, শুধু ঐ মানুষটা আর নেই !!"


--------------------------


ব্যর্থ আখ্যান
কবি : সুমন মুস্তাফিজ


হারিয়ে যদি যাই কখনো খুঁজে পাবেনা মোরে;
বুকে চেপে রেখে দহন জ্বালা পাড়ি দেবো বহুদূরে ।
শীতল অশ্রু শুকিয়ে যাবে চোখের মণিকোঠায়;
তারপরও ফেরা হবেনা আর চিরচেনা বাস্তুভিটায় ।
সীমাহীন জিজ্ঞাসা প্রশ্নের বানে যদি হও বিদ্ধ তোমরা
জনে জনে বলো ছিলাম খুব বাউন্ডুলে , বিকারগ্রস্ত নোংরা ।
সবাই যখন জীবন সাজাতে সদা ছিল ব্যস্ত;
তথাকথিত জীবনবোধে হতে পারিনি ন্যস্ত ।
ক্ষমা করো শুধু ব্যর্থ মানুষের জীবনের আখ্যান;
তোমাদের ঘিরে থাক প্রাপ্তির জোোয়ার , বিলাসী জয়গান ।


------------------------

মায়া

যদি আমার কারনে তোমার জীবনে
অশান্তি নেমে আসে,
বলে দিও তবে চলে যাবো আমি
দূরের কোন দেশে ।।
তোমার প্রেমেতে মত্ত আমি যে
কেন যে বোঝনি তুমি,
তোমায় ভালোবাসতে গিয়ে
মরতে বসেছি আমি ।।
তোমার মায়ায় জড়িয়ে আমায়
কেন যে দিলে ধোকা,
তোমার প্রেমের অভিনয়ে আজ
হয়েছি আমি বোকা ।।
ভালোবাসার চোখে বৃষ্টি পড়ে
ঝড় আসে বুকে ধেয়ে ।।

-------------------------


যদি সুখী হতে চান
বৃষ্টি থেমে গেলে ছাতাটাকেও বোঝা মনে হয় । কালি ফুরিয়ে গেলে কলমটাও আবর্জনা্র ঝুড়িতে জমা হয় । বাসি হয়ে গেলে প্রিয়জনের দেয়া ফুলটাও পরদিন ডাস্টবিনে পাওয়া যায় । পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম সত্য হলো- আপনার উপকারের কথা , মানুষ বেশিদিন মনে রাখবে না । জীবনের সবচেয়ে নিদারুণ বাস্তবতা হলো- কার কাছে আপনি কতদিন প্রায়োরিটি পাবেন সেটা নির্ভর করবে, কার জন্য কতদিন কিছু একটা করার সামর্থ্য আপনার আছে । এই বাস্তবতা আপনি মানলেও সত্যি না মানলেও সত্যি ।

আজ সকালে যে পত্রিকার দাম ১০ টাকা, একদিন পর সে একই পত্রিকার ১ কেজির দাম ১০ টাকা ।
হাজার টাকা খরচ করে একাডেমীক লাইফে বছরের শুরুতে যে বইগুলো গুরুত্ব দিয়ে কিনেন, বছর শেষে সেই বইগুলোই কেজি মাপে বিক্রি করে দেন । সময় ফুরিয়ে গেলে এভাবেই মূল্য কমতে থাকে সবার, সবকিছুর । আমরা আপাদমস্তক স্বার্থপর প্রাণী । ভিখারিকে ২ টাকা দেয়ার আগেও মানুষ চিন্তা করে, কতটুকু পুণ্য অর্জন হবে । বিনা স্বার্থে কেউ ভিক্ষুককেও ভিক্ষা দেয় না । এতকিছুর পরও চলুন একটু হেসে কথা বলি । রাগটাকে কমাই । অহংকারকে কবর দেই । যদি সুখী হতে চান তবে প্রত্যাশা কমান । আপনি কারো জন্য কিছু করে থাকলে, সেটা চিরতরে ভুলে যান । কারণ সেটা যতদিন আপনি মনে রাখবেন, ততদিন সেটা আপনাকে অহংকারী করে তুলবে । আবার কেউ যদি আপনার জন্য খুব ছোট কিছুও করে থাকে, তবে সেটা আজীবন মনে রাখবেন । কারণ এটা আপনাকে বিনয়ী ও কৃ্তজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখবে । তাই, পরিশেষে একটা কথাই বলবো যদি সুখী হতে চান, প্রত্যাশা কমান ।

----------------------

ভালবাসার গল্প
এক প্রেমিক তার প্রেমিকাকে চ্যালেঞ্জ করে বসল, খুব সহজ একটা চ্যালেঞ্জ । তুমি যদি আমাকে সত্যিই ভালোবাস তাহলে তুমি আমার সঙ্গে একটা সম্পূর্ণ দিন কোনরকম যোগাযোগ করতে পারবে না । যদি তুমি টানা চব্বিশ ঘণ্টা যোগাযোগ না করে থাকতে পারো তাহলে বুঝবো তুমি আমাকে সত্যিকারে ভালোবাস এবং আমি তোমাকে আজীবন ভালোবাসব । মেয়েটা রাজি হল । সে সারাদিন একবারো যোগাযোগ করল না ছেলেটার সাথে । কোন ফোন কল বা কোন এস এম এস কিছুই করল না । পরে তো মেয়েটা দৌড়ে ছেলেটার বাসায় গেলো । মেয়েটা তো জানতোনা ছেলেটার ক্যান্সার ছিল।

আর তার আয়ু ছিল মাত্র চব্বিশ ঘণ্টা । মেয়েটার চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি পরলো । যখন সে দেখতে পেলো ছেলেটা কফিনে শুয়ে আছে আর তার পাশে একটা চিঠি , সেখানে লেখা আছে তুমি একদিন আমাকে ছাড়া থাকতে পেরেছ প্রতিদিন থাকতে পারবে না ?
----------------------------

হৃদয় কাঁদানো ভালোবাসা
জানিনা কি ভাবে ভালোবাসতে হয় ।

তবে তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।
সেটা বুঝতে পারি ।
এখনো তোমাকে কাছে পাবার ইচ্ছে হয় ।
তবে সময়ের সাথে সাথে প্রকাশ
ভঙ্গিতে পরিবর্তন চলে এসেছে ।
ইচ্ছে হলেও বলতে পারিনা তোমাকে
ছাড়া বাঁচব না ।
কারণ এত দিন তো বেঁঁচে ছিলাম ।
তবে এই বেঁঁচে থাকা অনেক কষ্টের ।
প্রতিটা মুহূর্তে মৃত্যু্র স্বাদ
তুমি সত্যি কারের ভালবাসার
মুল্য দিতে চাওনি ।
হয়ত যোগ্যতা , কিংবা চেহারায় আমি
পরাজিত হতে পারে সবার কাছে ।
তবে তোমাকে ভালবাসায়
হাজারো বার জিতবো ।

তোমাকে ভালোবাসি , তোমাকে ভালবাসতাম
ভালবাসব চিরকাল !!!

---------------------------------


দাজ্জলের ক্ষমতা প্রদর্শন করবে
হযরত মুগীরা ইবনে শো 'বা ( রা ) কর্তৃ্ক রেওয়ায়েত , তিনি বলেন , দাজ্জাল সম্পর্কে হযরত নবী করীম (স)-এর নিক্ত আমার চেয়ে অধিক প্রশ্ন আর কেউ করেনি । তিনি আমাকে বলেছেন , তার দ্বারা তোমার কি ক্ষতি হবে ? আমি উত্তরে বললাম, যেহেতু লোকেরা বলাবলি করছে তার সাথে রুটির পাহাড় ও পানির ঝর্ণা থাকবে । তখন হযরত নবী করীম (স) বললেন , বরং এটা তো আল্লাহর পক্ষে তার চেয়েও সহজ । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদীসঃ ৬৬৩৭

ইবনে উমর (রা) থেকে রেওয়ায়েত যে, আবু আবদুল্লাহ (রঃ) বলেন, আমার মনে হ্য় তিনি হাদীসটি নবী (সঃ) থেকেই বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেন , দাজ্জালের ডান চক্ষুটি কানা হবে, যেন তা ফোলা আঙুরের ন্যায় । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদীসঃ ৬৬৩৮



মোনাফেক দাজ্জলের সঙ্গী হবে


হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) কর্তৃ্ক রেওয়ায়েত, তিনি বলেন , হযরত নবী করীম (স) বললেন, দাজ্জাল অবশ্যই আগমন করবে এবং মদীনার নিকটবর্তী কোন এক স্হা্নে শিবির স্থাপন করবে । অতঃপর মদীনা শহর তিন বার ভূমিকম্পে প্রকম্পিত হবে , ফলে প্রত্যেক কাফের এবং মোনাফেক তার নিকট চলে আসবে । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদীসঃ ৬৬৩৯


মদীনার প্রবেশদ্বারে ফেরেশতা নিযুক্ত থাকবে


হযরত আবু বাকরা (র) কর্তৃ্ক রেওয়ায়েত, তিনি বলেন , হযরত নবী করীম (স) বলেছেন, দাজ্জালের কোন প্রকার ভয়ভীতি ও সন্ত্রাস মদীনার অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না । সে সময় মদীনার সাতটি প্রবেশদ্বার থাকবে, প্রত্যেক দ্বারেই দু'জন ফেরেশতা ( পাহারায় ) নিয়োজিত থাকবেন ।
( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদীসঃ ৬৬৪০

------------------------------


জীবন বৃত্তে
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

যদি বোধের জায়গাটা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে
তবে বৃথাই কেন পাড়ি দাও পথ, জীর্ণ উটের পিঠে ।
কেনইবা করো ফিকে লেন্দেন ধূসর বালুচরে ;
শুধু বুনে চলো চেতনার বীজ , মনের গহীন ঘরে ।
জনে জনে ফেরে কত যে ব্যথা , আবেগের বেচাকেনা ;
ফিরে আসে , নৈঃশব্দের জীবন বোধ , সময় চিরচেনা ।
তারচেয়ে ঢের হয়ে যাও স্হির লক্ষো , দৃঢ়চিত্তে;
স্বার্থক করো মানব জনম , যাপিত জীবন বৃত্তে ।


----------------------------------


আপনার সন্তানকে "অভাব"শেখান॥

আপনার প্রচুর সামর্থ্য থাকলেও
আপনার সন্তানকে "অভাব" শেখান..

যা চাইবে তাই যদি হাজির করেন,
আপনার বাচ্চার "মানুষ" হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

ক্ষুধা নিবারন করার জন্য মানুষকে যে পরিমাণ ব্রেইন ব্যবহার করতে হয়,তাতেই একজন মানুষ যা অর্জন করে এটা দিয়ে সে জীবন পার করে দিতে পারবে।





সন্তানকে এমনভাবে প্রস্তুত করেন

যে আপনি না থাকলে সে কিভাবে চলবে তার ট্রেইনিংটা সে পায়।

তাকে কোন কিছু করতে না দিয়ে ঢেকি বানালে,
সে আপনার অবর্তমানে কষ্টতো পাবেই,
আপনাকেই সবচেয়ে বেশি দোষারোপ করবে।

অনেকেই একটা আলাপ করেন পরে এমনিতেই সব শিখে যাবে।

একটা মানুষ হঠাৎ করেই মানুষ হয় না,আস্তে আস্তে মানুষ হয়!

কারন আপনি যখন থাকবেন না
দুনিয়ার কঠিন পথ তাকে একা চলতে হবে।
সেই একা চলার ট্রেইনিংটা তাকে শক্ত করবে,আপনিও দেখবেন হাল্কা ফিল করবেন!আপনার সন্তানকে শেখান চাইলেই সব কিছু পাওয়া যায় না।

সব কিছু পাওয়ার দরকারও নাই...
কষ্টের মাধ্যমে অর্জিত জিনিসের মূল্য বোঝান...
তাকে বোঝান সবকিছু ছাড়াও জীবন চলে ,দৌড়ায় ,উড়ে।
-----------------------------------


বিশ্বাস করো প্রিয়তমা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

বিশ্বাস করো প্রিয়তমা ,
আমি বৈষয়িক সংগতি বিবেচনায় কোন মানুষকে পরিমাপ করতে শিখিনী ।
মানুষের ব্যক্তিত্ব , রুচিবোধ
জ্ঞান , প্রজ্ঞা ও মানবিক গুণাবলিই আমাকে আকৃষ্ট করে প্রতিক্ষণ ।
কত বিত্তবান মানুষদের দেখেছি ভেতরটা কুৎসিত কদাকার , আবার কত
হতদরিদ্র দীনহীন মানুষকে দেখেছি নিজে ক্ষুধার্ত থেকেও ফুটপাথে অনাহারী
কুকুরকে সযত্নে খাওয়াতে ।
এই আরবান এলিট সোসাইটি যে মানুষগুলোকে মানুষই মনে করে না , অথচ
তাদের মনুষত্ব বোধকে বেচে দিচ্ছে ডিপ্লোম্যাটদের কাছে সস্তায় নির্দ্বিধায় ,
আমি সেই হেরে যাওয়া মানুষগুলোকেইভালোবাসি আজন্ম ।
তাদের কথাই বলতে চাই আমরা , কবিতায় , গানে ও সিনেমার প্রতিটি ন্যানো
ফ্রেমে ।
মহাকালের স্রোতে খড়কুটার মত হারিয়ে যাবে এই ভোগতান্ত্রিক জীবনের
ঝলমলে ছবি । আমাদের চারপাশের কত জীবনের কত না বলা গল্প , চিরায়ত
বাসনা , কত কত সভ্যতা , অবাধ যৌনতা , ব্যাভিচার , লোভ হিংসা-বিদ্বেষ ,
সব-সবকিছুই হারিয়ে যাবে কৃষ্ণগহবরের মহাজাগতিক আঁধারে ।
আমাদের আদি পুরুষেরাও হারিয়ে গিয়েছে ইতিহাসের পাতা থেকে ।

কিন্তু বিশ্বাস করো প্রিয়তমা ,
আমাদের অনেক কবিতা আছে যা কোন দিন হারাবার নয় , তার চেতনা ও
দ্যুতি বিস্তৃত প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ।
আমাদের অগণিত গান আছে যে সুর শত বছরেও ফিকে হয়নি এতটুকু ।
আমাদের কালজয়ী অনেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পদযাত্রা আছে যা আমাদের
নিয়ে যাবে অধুনা সভ্যতার সীমান্তরেখা অবধি ।
তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে প্রিয়তমা ,
আমরা এবং এই আমি ভোগতান্ত্রিক প্রাপ্তির সম্ভাবনাকে
নির্বিঘ্নে দূরে ঠেলে দিয়েছি,
শুধু সুন্দর একটা কবিতার জন্য , শ্রুতি মধুর একটি গানের জন্য , নান্দনিক
একটি চলচ্চিত্র ও কালজয়ী কোন সাহিত্যকে ভালোবাসে ।
অবনিত চিত্তে মেনে নিয়েছি সকল ব্যর্থতার দায়ভার;
স্বার্থকতার বিপরীতে যে সফলতার সংজ্ঞা তোমরা প্রতিষ্ঠা করেছো , আমি তার
প্রথাবিরোধী স্রোতে মিশে ভেসে গিয়েছি ত্রিমাত্রিক মোহনায় ।

তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে প্রিয়তমা ,
সেই শতাব্দী প্রাচীন কাল থেকে এই একবিংশ শতাব্দীর যত কালজয়ী ও
বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে , বিজ্ঞানের যে অভাবনীয় উৎকর্ষ , শিল্প সাহিত্য ,
দর্শনের চর্চার নিরন্তর অগ্রযাত্রার নিমিত্তে , রাষ্ট্র , সমাজ ও প্রতিটি পরিবারের ,
প্রতিটি জীবনের আত্নোপলব্ধিতে , যে প্রশান্তির ছোঁয়া তুমি অনুভব করো , তার
পেছনে হাজার বছর ধরে নির্মোহ ও সৃজনশীল মানুষের সৃষ্টির উন্মাদনা , এবং
কুসংস্কা্রাছন্ন মানুষকে আলোর পথযাত্রি করতে অহর্নিশ প্রচেষ্টাই আমাদের
ফেলে আসা অতীতের সোনালী ইতিহাস ।

তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে প্রিয়তমা ,
পুঁজিবাদ , সামন্তবাদ ও বেনিয়াদের কোন সোনালী ইতিহাস নেই , শুধু পণ্যের
কারবারি ছাড়া , নির্মম বাস্তবতার কষাঘাতে জর্জরিত মানুষের মানবিক
মুূল্যবোধকে হরণ করা ছাড়া ।

এই সামাজিক বিভাজন ,
শ্রেণি বৈষম্য , সাম্প্রদায়িকতা , অসুস্থ প্রতিযোগিতা , আত্নকেন্দ্রিকতা ,
স্বার্থবাদিতা , অপসংস্কৃতির চর্চা সবকিছুই এই ভোগতান্ত্রিক পুঁজিবাদী
আগ্রাসনের প্রতিচ্ছবি ।

তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে প্রিয়তমা ,
সামাজিক সৌহার্দ্য , মানুষে মানুষে সম্প্রীতি এবং আলোকিত জীবনকে সম্মুখে
তুলে ধরার মননশীল মানুষের অন্তহীন প্রচেষ্টা ।
সীমাহীন অপূর্ণতা থাকা সত্ত্বেও নির্ভুল সত্য ,
শিল্পীর হাত দিয়েই সৃষ্টি হয় সুন্দর ও সমৃদ্ধ আগামী ।


--------------------------------------------------
 
আমার প্রিয় মানুষটি। হ্যাঁ সে আমার ভালোবাসা যাকে আমি নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসতাম।তাঁকে ছাড়া আমার একটা মুহূর্তও কাটতো না। কিন্তুু আজ সে আমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে নিয়ে বেশ সুখী আছে। আমাকে সে ভুলেই গেছে। আমার কথা এখন আর তার মনে পড়ে না।সে যে নতুন কাউকে পেয়ে গেছে। আসলেই নতুন কাউকে পেয়ে গেলে প্রিয় মানুষদের অবহেলাও ভেরে যায়। আমার বেলায়ও তাই হলো।সে আমার কাছ থেকে প্রতিদিন দূরে সরে যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি। আমার প্রতি অবহেলা দিনদিন ভেরেই চলছে।না নিজেকে আর সামলাতে পারছি না।কেমন অগোছালো হয়ে গেছে জীবনটা যাকে নিয়ে কতো রঙিন স্বপ্ন দেখেছি আজ সে সব স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।

হয়তো আমি তার মনের মতো হতে পারিনি বলে সে আমার কাছ থেকে সরে গেছে। আমাকে সে হয়তো মন থেকে ভালোবাসেনি। যদি মন থেকে ভালোবাসতো তাহলে এইভাবে আমাকে একা মাঝ রাস্তায় পেলে চলে যেতোনা এইটা জানার পরও যে আমি আর বাচঁবো না। হ্যাঁ আমি এক মরণবেদি রোগে আক্রান্ত আমার কাছে বেশি সময় নেই। আমার এই শেষ অধ্যায়ে তোমাকে পাশে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমার পাশে থাকলে না। এই সময়টায় তোমাকে বেশি প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু তুমি যে নেই আজ আমার পাশে।কথা দিয়েছিলে আমার পাশে থাকবে। তবে কেনো আজ এমন পরিস্থিতিতে তোমাকে আমি পাশে পেলাম না।

শুনো.. তোমার প্রতি আমার ভীষণ অভিমান জমেছ এই অভিমান নিয়েই চলে যাচ্ছি। অনেক দূরে আর কোনো দিন দেখা বা কথা হবে না আমাদের।ভালো থেকো তুমি এইটাই চাইবো। আমি না হয় দূর থেকে ভালোবেসে গেলাম তোমাকে। যতদিন বেঁচে থাকবো তোমাকেই ভালোবেসে যাবো।
----------------------------------


কেয়ামতের আলামতসমূহের বর্ণনা
হযরত আবু হোরায়রা ( রা ) কর্তৃক রেওয়ায়েত , হযরত নবী করীম ( স ) বলেছেন , কেয়ামত কায়েম হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত দু'টি বৃহৎ দল পরস্পর তুমুল যুদ্ধে লিপ্ত হবে । অথচ তাদের উভয় দলেরই মূল দাবী হবে এক অভিন্ন । আর যতক্ষণ পর্যন্ত না ( প্রায় ) ত্রিশ জন মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে , তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে আল্লাহর নবী বলে দাবী করবে । আর যতক্ষণ পর্যন্ত না ধর্মীয় এলেম উঠিয়ে নেয়া হবে , ভূমিকম্পের সংখ্যা বেড়ে যাবে । সময়ের পরিধি সংকীর্ণ হয়ে আসবে । ফেতনা-ফাসাদ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে । খুন-খারাবি, হত্যাকাণ্ড, মারামারি হানাহানি অত্যধিক বৃদ্ধি পাবে । এমন কি তোমাদের মধ্যে ধন-সম্পদের এমন প্রাচুর্য দেখা দেবে যে, সম্পদশালী ব্যক্তি ধন সম্পদের জন্য পেরেশান হয়ে পড়বে- কে তার সদকা গ্রহণ করবে ? এমন কি যার নিকটই সে মাল উপস্হা্পন করা হবে, সে বলে উঠবে, আমার এ মালের কোন প্রয়োজন নেই । আর যতক্ষণ না জনগণ সুউচ্চ ও কারুকার্য খচিত ইমারত নির্মাণকার্যে পরস্পর প্রতিযোগিতা করবে ।


আর যতক্ষণ না একব্যক্তি অপর এক মৃত ব্যক্তির কবরের পাশ দিয়ে গমনকালে বলবে, হায় ! আমি যদি তার স্থানে হতাম এবং যতক্ষণ না পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে । অতঃপর সূর্য শ্চিম দিক হতে উদিত হলে জনগণ তা প্রত্যক্ষ করে সকলেই আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে, কিন্তু তখনকার ঈমান কোন উপকারে আসবে না । যে ব্যক্তি ইতিপূর্বে ঈমান আনেনি, কিংবা ঈমানদার অবস্হায় কোন সৎকাজ ন্যায় কাজ করেনি । আর কেয়ামত এমন পরিস্হিতি ও এমন অবস্হায় কায়েম হবে যে, বিক্রেতা ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশে ক্রেতাদের সন্মুখে কাপড় ছড়িয়ে বসবে, কিন্তু সে কাপড় ক্রয় বিক্রয় বা ছড়ানো কাপড় ভাঁজ করারও অবসর পাবে না ।


আর কেয়ামত এমন পরিস্হিতি বা পরিবেশে অবশ্যই কায়েম হবে, এক ব্যক্তি উট দোহন করে নিয়ে আসবে, কিন্তু সে তা পান করারও সময় সুযোগ পাবে না । আর কেয়ামত অবশ্যই এমন অবস্হায় কায়েম হবে, এক ব্যক্তি তার পশুর জন্য চৌবাচ্চা নির্মাণ করতে থাকবে, কিন্তু তাতে সে পশুকে পান পান করাবার সময় সুযোগ পাবে না । আর কেয়ামত এমন পরিস্হিতি ও পরিবেশে অবশ্যই কায়েম হবে যে, এক ব্যক্তি খাদ্য গ্রাস তার মুখ পর্যন্ত উত্তোলন করবে; কিন্তু সে তা খাওয়ার বা গলধঃকরণ করার সময় সুযোগ পাবে না । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ৬৬৩৬


---------------------------------


'আপা মেয়ে বিয়ে দেননি এখনো?

'পাশের বাসার আন্টি এসেছিলেন এক কাপ চিনি নিতে...আমি তখন ভার্সিটির জন্য রেডি হয়ে মায়ের কাছে এসেছিলাম "যাচ্ছি বলতে" হঠাৎ পাশের বাসার আন্টি এসে উপরোক্ত কথাটি বললেন।

"আম্মু ওনার কথার উত্তর না দিয়ে আমাকে বললেন,

" যা মা। সাবধানে যাস। আমি মুচকি হেসে মাথা নেড়ে বললাম, 'আচ্ছা মা।

"আমি দরজার সামনে এসে জোতা পড়ছিলাম। আমার কানে স্পষ্ট এলো, মা আন্টিটাকে বলছে,

"আপা আমার মেয়ের যথেষ্ট অধিকার আছে তার ইচ্ছে প্রকাশ করার। আর তার ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা করে কিছু একটা করা। আর বাবা মা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ছিলো শুধু মেয়েকে সাপোর্ট করা। আমরা শুধু এতটুকুই করছি। আর এছাড়াও আমার ছেলে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ অব্দি বাবার খেয়ে পড়ে মানুষ হতে পারলে আমার মেয়ে কেনো পারবেনা? তাও কিনা..আমার মেয়ে তার পড়াশোনার খরচ সে নিজেই চালাই টিউশনি করে।

" মায়ের কথাগুলো শুনে চোখ দুটো ঝলমল করে উঠলো। এই ঝলমল খুশির। যা কখনো বলে বুঝানো সম্ভব নয়।

"ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে হঠাৎ পেছন থেকে ফিসফিস ভাবে এলো " মেয়েটা আরেকটু উজ্জ্বল হলে ভালো লাগতো। গায়ের রংটা ময়লা..নয়তো আমার আবিরের বউ করে আনতাম।

"কথাটা শুনে পেছনে তাকালাম না। কারণ আমি জানি সকালের ওই আন্টিটার মতোই হয়তো কেউ এইসব সমালোচনা করছে। বাসায় ফিরে খেয়ে দেয়ে শুয়েছিলাম..হঠাৎ কাজিন ভিডিও কল দিয়েছে, "কল ধরতেই কাজিন হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় বললো, " কিরে মেঘ কেমন আছিস? আমি হেসে বললাম আলহামদুলিল্লাহ। তারপর ওহ ভেঙ্গ স্বরে বললো, "কিরে চিকন হয়ে যাচ্ছিস কেনো? ফুপি খাবার টাবার খাওয়াই না নাকি? কথাটা শুনে আর ভালো লাগছিলোনা কল কেটে ফোন অফ করে শুয়ে পড়লাম।


"বিকেলে ঘুম থেকে উঠতেই দেখলাম একজন আন্টি আর একজন আংকেল এসেছে। আম্মু ইশারায় কিছু একটা বলতেই বুঝতে সক্ষম হলাম যে ওনারা হঠাৎ আমাকে দেখতে এসেছে। আমি সাধারণভাবে সালাম দিলাম। আন্টিটা আংকেলকে আস্তে করে বলছে, " না এই মেয়ে চলবেনা তেমন একটা সুন্দর না। এইবার আর সহ্য হচ্ছিলোনা। ঠান্ডা মাথায় বললাম,

"আন্টি আমি সুন্দর না আমি জানি, তাই বলে ফিসফিস করে সমালোচনা করার কি দরকার? সাহস থাকলে আমার সামনে সমালোচনা করুন৷ আপনাদের সমস্যা কোথায় জানেন? আপনাদের সমস্যা হলো, " আপনারা.. নিজেদের থেকে অন্যের সমালোচনা বেশি করেন। তাতে ওই মানুষটার কষ্ট হয় নাকি সুখ.. তা আপনারা ভেবেই দেখেন না। আমি অসুন্দর আপনাদের চোখে হতে পারি আমার ফ্যামিলির চোখে নয়। একটা মেয়েও মানুষ৷ তারও মন আছে। গায়ের রং কালো কিংবা একটু ময়লা হলেই যে কথা শুনাতে হবে তা কেনো বলুনতো? আপনাদের যিনি সৃষ্টি করেছেন,একজন কালো মানুষকেওতো তিনিই সৃষ্টি করেছেন। কালো মেয়ে নিয়ে ভার্চুয়াল লাইফে কতো কতো গল্প, কতো প্রশংসা দেখি, আর সেই প্রশংসাগুলো আপনার ঘরের মেয়ে অথবা ছেলেটিই করে। অথচ বাস্তবে তাদের চাওয়া সম্পূর্ণ আলাদা। একটা মেয়ে বিয়ের আগে কাজ পারে কিনা তা আপনারা মেয়ে দেখতে গিয়ে বলেন, অথচ বিয়ের পর ওদের রান্নায় একটু খামতি হলেই বলবেন, "মা বাবা কিছু শিখাইনি? আমার মতো অনেক মেয়ে আছে যারা অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হয়৷ কিন্তু মুখ খুলে কিছু বলতে পারেনা হয়তো সংকোচে। কিন্তু আমি একটা কথা বলছি, " আমরা মেয়ে কোনো জিনিস নয়, যে সুন্দর, ভালো, দামী হতে হবে। আমি কেমন তা আপনাদের না ভাবলেও চলবে। আমি অসুন্দর হলেও আমার ব্যাপার । লাইফটা আমার আপনাদের নয়।


-------------------------


আমার এক বন্ধু বিশাল শিল্পপতি। ১০ টার উপর ফ্যাক্টরি, শত কোটি টাকার উপর ব্যাংক লোন। এক মুহূর্তের জন্য শান্তি নেই। সারাদিন ব্যাস্ত দুনিয়ার পেছনে। একদিন তাঁর অফিসে বসে গল্প করছিলাম, এমন সময় তাঁর এক কর্মচারী আসল। তার কোন কারণে কিছু টাকার দরকার। সে ইনিয়ে বিনিয়ে বলল, সে অত্যন্ত অভাবি ব্যক্তি, তাঁকে সাহায্য করার জন্য।

আমার বন্ধু হেসে বলল ''যদি অভাবের কথাই বলতে হয়, এই পুরো অফিসে আমার চেয়ে অভাবি আর কেউ নেই। আমরা একটু থতমত হয়ে গেলাম। আমি বললাম 'আমাদের সবার মিলিয়ে যত সম্পদ আছে তোর একারই তার বেশি আছে।'

সে বলল তোদের একটা গল্প শুনাই। তাহলেই আমার অভাবের রহস্য বুঝবি।
এক বিশাল ব্যবসায়ি, তাঁর সবই আছে খালি শান্তি নেই। খালি হাহাকার আর টেনশান। চিন্তায় মাথার চুল একটাও বাকি নেই। সে একদিন দেখল তাঁর অফিসের পিয়ন টেবিল মুছছে আর গুনগুন করে গান গাচ্ছে।

সে পিয়নকে দেকে বলল এই যে তুমি মনে মনে গান গাও, তোমার কি অনেক সুখ, তোমার মনে কি কোন দুঃখ নেই, কোন হতাশা নেই?।

পিয়ন বলে না, হতাশা কেন থাকবে স্যার, আপনি যা বেতন দেন তাদিয়ে আলহামদুলিল্লাহ আমার ভালই চলে যায়। আল্লাহর রহমতে কোন অভাব নেই।
ব্যবসাইতো আরো টেনশানে পড়ে গেলেন। ওনার ম্যানেজারকে ডেকে বললেন, আমার সব আছে কিন্তু শান্তি নেই, আর ওই লোককে আমি সামান্য কয়টা বেতন দেই, সে আছে মহা সুখে, এর রহ্স্যটা কি?

ম্যানেজার বলল , রহস্য বললে বুঝবেননা। সত্যই যদি বুঝতে চান তাহলে, ওই পিয়নকে প্রমোশান দিয়ে একটা বড় পোস্টে দিন। আর তাঁকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে দিন। এরপর দেখুন।

ব্যবসায়ি তাই করল। এতোগুলো টাকা, আর এতবড় চাকরি, পেয়ে পিয়ন আনন্দে আত্মহারা। বাসায়ও সবাই খুশি। যেহেতু এখন অফিসার হয়ে গেছে, এখন তো আর টিনের ঘরে থাকা যায়না। কলিগরা কি মনে করবে।

প্রথমেই বাসা পরিবর্তন করে আরেকটু অভিজাত এলাকায় এপার্টমেন্টে উঠলো। দেখল, বিল্ডিং এর সবাই সন্তানকে বড় স্কুলে পাঠায়, তাই বাচ্চার স্কুলও চেঞ্জ করতে হল। কিছুদিন পড় বউ ঘ্যনঘ্যন শুরু করলো সবার বাসায় কত দামি আসবাব, ফ্রিজ, টিভি, আর আমাদের বাসায় কিচ্ছু নেই। ওগুলোও কিনতে হোল। এরপর শুরু হোল বাচ্চার প্রাইভেট টিউশান, নানা রকম দাবি দাবা। আগে ঈদে একজোড়া জুতা পেয়েই সবাই কত খুশি হত, আর এখন প্রতি মাসে একজোড়া দিলেও তৃপ্তি নেই।

যেহেতু সে এখন বড় চাকরি করে , পরিবারের সবার তাঁর কাছে প্রত্যশাও অনেক। সাধ্যমত চেষ্টা করে, তাও সবার চাহিদা মেটাতে পারেনা। আত্মীয় স্বজন বন্ধু গন তাঁকে অহংকারি ভেবে দুরে সরে গেলো।

এদিকে অফিসের সবাই ফলটা/ প্লট এ বুকিং দিচ্ছে। বৌ সারাদিন বাসায় খোটা দেয় , তোমাকে দিয়ে কিছুই হবেনা। ছেলেমেয়র ভবিষ্যৎ অন্ধকার। সে চাকরির ফাকে একটা দুইটা টিউশানি করা শুরু করলো। তাতেও কিছু হয়না। নানাবিধ টেনশান আর দুশ্চিন্তায় তারো মাথার চুল আসতে আসতে কমতে লাগলো।
ব্যবসায়ি লক্ষ করলেন ব্যপারটা। উনি বললেন কি ব্যপার , তোমাকে এতো বড় প্রমোশান দিলাম, এতো টাকা দিলাম, আর এখন দেখি তুমি আগের মত আর প্রাণবন্ত নেই। ঘটনা কি?

সে বলল স্যার , কিছু দুনিয়াবি সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু তাঁর সাথে যে এতো চাহিদা আর অভাব আসবে তাতো আর বুঝিনি। আগে আমার কিছুই ছিলনা, অভাবও ছিলনা। আর এখন যেদিকেই তাকাই , খালি নাই আর নাই। আগে আমার অভাব পড়লেও সেটা ছিল এক দুই হাজারের ব্যপার। কোন ভাবে মেটান যেত। আর এখন আমার অভাব লক্ষ কোটি টাকার। এটা কিভাবে মেটাবো সে চিন্তায় আমার এখন আর রাতে ঘুম আসেনা স্যার।

ব্যবসায়ি বলল, এতদিনে বুঝলাম, আমার মুল অসুখ। একটাকার সম্পদের সাথে ২ টাকার অভাব আসে। যতই দুনিয়ার পিছনে ছুটি কবরের মাটি ছাড়া এই অভাব আর অন্য কিছু দিয়েই পূর্ণ হবেনা।
----------------------


অসময়ের তীব্র ভাঙ্গন
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

নির্ণয় করে দেখেনি কখনো
এ ভুপৃষ্ঠে শুদ্ধতার মাত্রা ,
সময়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে
অসময়ের গল্পপাত ।
দূরদ্বীপ থেকে আনা অচেনা কোন পণ্যের দাম ,
অনেক শুনেছি অচেনা পাখির শিষ
প্রকৃতিকে উজার করে দেয়া মূ্র্ছনা ,
যেখানে গড়েছি ভিত্তির দেয়াল
সেখানেই ধরেছে অচিরেই ফাটল ।


শ্রেণিহিন-বর্ণহীন মানুষের ভূগোল দেখি
প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতায় , টিভির স্ক্রিনে ,
সভ্য সমাজ তাদের নিয়ে অনেক কিছু রচনা করে
কিন্তু সত্যিকারে কি উপলব্ধি করে তাদের ভেতরকার অপূর্ণতা ?

অনেকের কাছে যা সময়ের ডাক
আমার কাছে তা অসময়ের তীব্র ভাঙ্গন ।


বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গের মত ঝলসানি দিয়ে জেগে ওঠে সচেতন মস্তিষ্ক ,
মানবতার আবেদন , রুখতে হবে দাঁড়াতে
সেসব মানুষের পাশে ।

সেই আক্রোশের সূর্য অস্তমিত হয় ক্ষণকাল পরেই ,
টিভির পর্দায় ও জাতীয় দৈনিকের পাতায় ,
হেডলাইন হওয়ার মধ্য দিয়ে ।

-------------------------------------


ইতিকথা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

সেই উপংহারের ইতিকথা আমি;
শ্রেণিহীন-বর্ণহীন মানুষের , রোদঝলসানো ভূগোল ।
যাকে তোমরা অবজ্ঞাভরে ফেলে গিয়েছো;
তপ্ত পিচঢালা শ্লোগান মুখর রাজপথে ।
আমাকে ভুলে যেও না বন্ধু-
তোমাদের সকল বিপ্লব , বিদ্রোহে ,
চেতনার অপার গ্রহে,
দিন বদলের গানে গানে , মিলিয়েছি কণ্ঠ আমি ,
তুলেছি সুর নৈবেদ্য , এই দেহ মন প্রাণে ।
সেই উপসংহারের ইতিকথা আমি;
শ্রেণিহীন-বর্ণহীন মানুষের , রোদ ঝলসানো ভুগোল ।

-------------------------------------




"এখন আমি বসে আছি আমার আম্মা আর শুশুর বাড়ির সব মানুষদের সামনে৷ সবাই থাকবেনা! থাকবেইতো আজ আমাকে নিয়ে মজলিস বসেছে৷ যাকে খাঁটি কথায় বিচার বলে। আমার আম্মা আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে আমার শাশুড়ী মাকে বললেন,

" বেয়াইন বলুন..আমার মেয়ে আবার আপনাদের কোন পাকা ধানে মই দিয়েছে?

'আম্মার কথা শুনে আমার শাশুড়ী কিছুটা গর্জে বললেন,

"বেয়াইন মুখে লাগাম দিয়ে কথা বলুন। আপনার মাইয়া মুখে মুখে তর্ক আর কথায় কথায় আমার ছেলেকে সন্দেহ করে ঝগড়াঝাটি করে এই রোজগার অশান্তি আমাদের আর ভালো লাগছেনা।

" আমি তখন আম্মাকে বললাম,

"আম্মা আমি কখনো মুখে মুখে তর্ক করিনি আর না...ওনার ছেলেকে সন্দেহ করেছি।

" চুপ করো বেয়াদব মেয়ে। এইসব আবার কেমন বেয়াদবি? বড়দের কথার মাঝে ঢুকে পড়া।

'শাশুড়ী মায়ের কথায় চুপসে গেলাম।

"আমার আম্মা আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,

" তা বেয়াইন কোনটাকে তর্ক বলছেন? আপনারা খেয়ে দেয়ে শুয়ে বসে থাকবেন আর আমার মেয়ে দিন রাত কাজ করে যাবে এই সংসারে? এই সংসারটা কি আমার মেয়ের একা? বাড়ীর বউ কি মানুষ না? তাদের কি ক্লান্তি নেয়? নাকি তাদের দেহ আছে কোনো অনুভব নেই?

আম্মা এইসব কথা বলতেই আমার স্বামী ফারুক বললো,

"দেখুন মা..আপনার মেয়ে সারাদিন কাজ কিভাবে করে? ছোট সংসার। কাজই বা কই? খেয়ে দেয়েতো শুয়েই থাকে। আর বাড়ির বউদেরতো এইসবই কাজ। আপনার মেয়ে এইটুকু কাজ করেই যদি নাম উঠে, যে সারাদিন আমরা তাকে খাঁটিয়ে মারি তা খুব বেশি কথা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়না?

" আমার স্বামীর কথা শুনে আমি কিছু বলতে যাবো আম্মা আমাকে থামিয়ে দিয়ে শাশুড়ী মায়ের উদ্দেশ্যে বললেন,

"তা বেয়াইন একটু আগে আমার মেয়ে কথার মাঝে কথা বলাতে সে হয়েছে বেয়াদব, আপনার ছেলেও বুঝি তাই?

" আমার আম্মার কথাটা যে আমার শাশুড়ী মায়ের খুব একটা পছন্দ হয়নি তা ওনার চেহারায় ভাসমান।

"আমার আম্মা এখন আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

" তুমি তর্ক করোনা তা আমি জানি। কারণ আমিইতো তোমাকে পেটে ধরেছি। আর এইটাও জানি আমার সন্তান কেমন।

"বেয়াইন আপনার ছেলে যে খুব একটা ধোঁয়া তুলসি পাতা তা কিন্তু নয়। আপনার ছেলেকে আমি কালও একটা রেস্টুরেন্টে একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলা, এমন কি হাতে হাত ধরা দেখেছি। এইটা আশা করি কোনো বিবাহিত ছেলের লক্ষণ নয়। আর সবচেয়ে বড় কথা আমার মেয়ে আমার সাথে ছিলো। মেয়েকে বলেছিলাম ফারুক কে কল দিয়ে বলতে যে সে কোথায়? ফারুক কল ধরতেই উত্তর দিয়েছে অফিসে।

" আম্মার কথা শুনে শাশুড়ী মা আর ফারুক চুপসে যায়।

"দেখুন মা আপনার মেয়ে আপনি নিয়ে যান। আমি এমন বউ ঘরে রাখতে চায়না যে স্বামীকে অবিশ্বাস করে। আর তাছাড়া আপনার মেয়ের থেকে ভালো জায়গায় বিয়ে করার ক্ষমতা আমার আছে। অবশ্য ধনী পরিবারের।

" আম্মা চেয়ার থেকে উঠে বললো,

"চলো মেঘ। আর ফারুক, আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি বলে এই না যে, তার সম্মান, আমাদের মর্যাদা বিক্রি করেছি। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি কোনো পণ্যকে নয়। পণ্য দাম দেখে কিনে মানুষকে দাম দিয়ে কেনা যায়না। আর এই যে ধনী-গরীবের পার্থক্যটা দেখালেনা? আশা করি তুমি জানো যে, আমাদের বাসায় সবই আছে। কিন্তু কথা ওইটা না কথা হলো এইটা যে, মেয়ের সাথে যদি ফার্নিচারের থেকে শুরু করে শোয়ার খাট অব্ধি দিতে হয়, তাহলে আমার মেয়ে তোমার কাছে ফেলে রাখবো কেনো? আমার বাড়িতেই থাকুক। দু-মুঠো খাওয়ার জন্য? ডাল ভাত আমার ঘরে আছে... আমরাতো না খেয়ে নেই, আমার মেয়েরো ঠিক ওতেই হয়ে যাবে।

--------------------------------------




ছেলেটি জানে না যে নীচে একটি সাপ রয়েছে। মেয়েটিও জানে না যে ছেলেটির পিঠের ওপর একটি পাথর চাপ দিয়ে আছে।

মেয়েটি ভাবছে, আমি নীচে পড়ে যাচ্ছি এবং আমি বেয়ে উপরে উঠতে পারব না কারণ সাপটা আমাকে কামড়ে দেবে। কেন সে আরেকটু শক্তি দিয়ে আমাকে টেনে তুলছে না?

ছেলেটি ভাবছে, আমি খুবই ব্যথা অনুভব করছি। তথাপি আমি তাকে আমার সাধ্য মতো টেনে তুলছি। কেন সে নিজে চেষ্টা করে আরেকটু উঠছে না?

#শিক্ষাঃ
অপরপক্ষ কতোটা চাপে আছে তা আপনি কখনো জানবেন না এবং আপনি কতোটা চাপে আছেন তা অপরপক্ষও কখনো জানবে না। এটাই জীবন। আপনার কাজ, পরিবার, অনুভূতি, বন্ধু যাই হোক না কেন একে অন্যকে বোঝার চেষ্টা করা উচিত। তাই ভিন্ন ভাবে ভাবতে শিখুন। একে অপরকে বুঝতে চেষ্টা করুন এবং সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন।

সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক, সুন্দর হোক সবার জীবন।


-----------------------------





এক বুড়ি ময়মনসিংহের বাসে উঠেছে !


বাসে উঠেই সে হেল্পারকে বলল, ভালুকা আইলে আমারে কইয়েন !
হেল্পার তাকে আশ্বস্ত করে বললোঃ ঠিক আছে,ঠিক আছে। বাস চলতে শুরু করলো।
বুড়ি দুই মিনিট পরেই হেল্পারকে বললোঃ ভালুকা আইছে? হেল্পার উত্তরে ‘না’ বলল !
কিন্তু বুড়ি দুই মিনিট পর পর হেল্পারকে এই প্রশ্ন করতে লাগল! হেল্পার ও বাসের যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে বুড়িকে ধমক দিল! বুড়ি তখন ভয়ে চুপ।
এদিকে বাস চলতে চলতে ভালুকা ছাড়িয়ে সামনের স্টপেজের মাঝামাঝি চলে এলো।
তখন হেল্পারের মনে পড়লো যে, বুড়িমা তো ভালুকার কথা বলে রেখেছিল!
বাসের সব যাত্রী তখন হেল্পারকে বকাঝকা করে বাস ঘোরাতে বললো।
তো বাস আবার ঘুরিয়ে ভালুকায় এলো।
হেল্পার বুড়িকে বললোঃ বুড়িমা, ভালুকা আসছে !
আপনে নামেন !
বুড়ি চোখ কুঁচকে জবাব দিলঃ নামমু কে?
আমি যাইয়াম মমিসিং (ময়মনসিংহ) ডাক্তার আমারে ডাহাত্তন (ঢাকা থেকে) একটা ট্যাবলেট খাওয়াইয়া কইছে ভালুকায় গিয়া আরেকটা খাইতে !
আমি এখন ট‍্যাবলেট খাইবাম! পানি দে !

------------------------------





রাতে মায়ের হাতে রান্না করা খাবার খুব মজা করে খেয়ে রাত ১০টায় ঘুমিয়ে গেলাম...!!!
সকাল গেলো ঘুম থেকে উঠলাম না...!!! আরামে ঘুমাবো বলে মা ডাকলো না...!!!
দুপুর হয়ে গেলো ঘুম থেকে উঠলাম না...!!!

এবার মা অনেক ডাকলো আমি উঠলাম না।
মা চলে গেলো।
একটু পর আবার আসলো।
এবার অনেক ডাকার পরেও না উঠায় মা অনেক বকলো আমি তাও উঠলাম না। এইবার মা একটা থাপ্পড় দিলো।
তাও উঠলাম না।

এবার মা হাত ধরে টান দিলো কিন্তু আমার হাত পুরো শরীর নিয়ে নড়ে উঠলো।
শরীর আমার পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে গেছে।
মা কিছু না বলে চুপ করে রুম থেকে বেরিয়ে বাবাকে ডেকে নিয়ে আসলো।
কিন্তু বাবা অনেক ডাকার পরও আমি উঠলাম না।
এইবার বাবা চোখের জল ফেলে বলছেঃ উঠে আয় তোকে আর কোন দিন কিছু বলবো না।
যেমন করে থাকতে চাস থাক।
তাও উঠে আয়।
তোকে আজকেই ল্যাপটপ কিনে দিবো।

আমি অবাক হয়ে দেখছি বাবা এতো করুণা করে কোনোদিন আমাকে বলে না অথচ আজ বলছে।
আমি উঠে আসতে চাচ্ছি কিন্তু কিছুতেই উঠতে পারছি না।
এদিকে বাবা নানান রকম লোভ দেখিয়ে বলছে উঠে আসতে।
একটু পর আমার বাড়িতে অনেক মানুষ চলে আসলো।

ওদিকে মা কাঁদছে কেউ মাকে স্বান্ত্বনা দিচ্ছে কেউবা বাবাকে কেউ ভাই বোনকে নানান কথা বলে বুঝাচ্ছে।
একটু পরেই কয়েকজন এসে আমাকে খুব যত্ন করে বিছানা থেকে নামিয়ে লোহার শক্ত খাটিয়াই শুইয়ে দিলো।

আমি কাঁদছি আর বলছি আমার পিঠে খুব ব্যাথা লাগছে নামাও এখান থেকে।
কেউ আমার কথা শুনলো না।
একটু পর ঐ মানুষ গুলো গরম পানি নিয়ে এসে আমার শরীরে কিছুটা পানি ডেলে দিলো।
ঈশ আমার শরীর পুড়ে গেলো বলে চিৎকার করছি কেউ কথা শুনছে না আমার। আমাকে পরম যত্নে গরম পানি দিয়ে খুব সুন্দর করে ডলে ডলে ধুঁইছে।

আমি কাঁদছি আর বলছি আমাকে আর গরম পানি দিয়ো না,শরীর পুড়ে যাচ্ছে। আমায় আর ডলা দিয়ো না।
খুব ব্যাথা লাগছে কেউ শুনলোনা।
অনেক সময় নিয়ে গোসল করিয়ে আমার শরীর ভালো করে মুছে নিয়ে আসলো আমার বসার জায়গাতে।

আমি খুব খুশি হলাম ভাবলাম আমাকে এইবার এখানে বসাবে।
কিন্তু ওরা আমাকে না বসিয়ে কাঠের শক্ত একটা খাটে শুইয়ে দিলো।
একটা চাদরও নিচে দিলনা।
একটু পরে মা,বোন আরো কয়জন মিলে আমাকে একটা সাদা কাপড় পড়ালো।
মা অনেক আদর করে আমার মুখে হাত বুলাচ্ছে আর কাঁদছে।
এতো আদর কোনোদিন করেনি মা আমাকে।

আমি অনেক করে বললাম কান্না থামাতে কিন্তু কিছুতেই কান্না থামাচ্ছে না।
আমি এতো করে বলছি কেঁদো না।
মা কিন্তু কিছুতেই শুনছে না আমার কথা । একটু পর কয়েক জন এসে আমার পা আর মাথাটা বেঁধে দিলো কত বললাম একটু খুলে দাও বাঁধন কেউ শুনলো না।

মাকে সরিয়ে দিয়ে আমাকে নিয়ে যেতে লাগলো।মা কিছুতেই নিতে দিচ্ছে না আমাকে।
ভাই বোন সব চুপ হয়ে কাঁদছে আর কিছু বলছে না।
কত করে বলছি ডিস্টার্ব করিস না আমাকে একজনও শুনলো না।
কেঁদেই চলেছে।
একটু বেশি ঘুমালে বাবা বকা দিতো।
কিন্তু এখন বাবা চুপ করে দাঁড়িয়ে চোখের পানি মুছতেছে।
একটা বকাও দিলো না আমাকে।

মাকে জোর করে সরিয়ে দিয়ে কয়েক জন আমাকে নিয়ে অনেক মানুষের সামনে শুইয়ে দিলো একটা ছায়ায়।
তার পরেই জানাজা পড়লো আমার। জানাজা শেষেই নিয়ে গেলো আমায়। একটু দূরেই একটা মাটির গর্ত করে রাখছে।
বাবা আর ভাই, ২ জন মিলে মাটির গর্তে নেমে আমাকে কোলে তুলে নিয়ে ঐ ছোট মাটির গর্তে শুইয়ে দিলো।

একটা বালিশ, চাঁদর কিছু দিলো না।
একটা লাইটও দিলো না।
আমার পা আর মাথার কাছের বাঁধন গুলো খুলে দিয়ে আমার উপর খুব তাড়াহুড়া করে কিছু কাচা বাঁশ দিয়ে ঢেকে দিলো।
তার উপর আরো কি কি দিলো আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
যতই সময় যাচ্ছে মাটির গর্তটা অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।

আমি চিৎকার করছি আর বলছি এখান থেকে আমাকে বের করো।
আমার খুব ভয় করছে।
কিছু দেখতে পাচ্ছি না।
একটু পরেই আমার উপর মাটি চাপা দিয়ে সবাই চলে যাচ্ছে।
আমি ডাকছি আর বলছি আমাকে একা রেখে যেওনা।
না কেউ শুনল না।
স্বার্থপরের মত সবাই চলে গেলো...!!!

কি ভাবছেন...???
মৃত্যুবরণ করবেন না...???
আরো রং তামাশা করার বাকি আছে...?

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে ঈমানের সহিত মৃত্যু দান করুন..
আল্লাহুম্মা আমিন ।


----------------------------







ডা. তুমি পাগল হলে কীভাবে ?
পাগল: পাগল হইছি কি সাধে?
আমি এক বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে ছিলাম!
তার এক যুবতী মেয়ে ছিল। তাকে বিয়ে করল আমার বাবা!!

আমার মেয়ে হয়ে গেল আমার মা!!! আমি হয়ে গেলাম আমার বাবার শশুর!!!!

তার ঘরে হল একটা মেয়ে,সে হলো আমার বোন!!!!!কিন্তু আমি তার নানীর জামাই!!!!!!
সেদিক থেকে সে আমার নাতনীও!!!!!!!
এভাবে আমার একটা পোলা হল!!!!!!!

আমার পোলা হইল আমার বাপের শালা।
আর আমি আমার পোলার ভাগিনা!!!!!!!
ডা. চুপ কর শালা,তুই আমারেও পাগল বানাইয়া ফেলবি ।
------------------------------




ঘটনা - ১


ইন্টারভিউ টেবিলের স্যার কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন । তারপর, ভারী গলায় বললেন - বাহ ! তোমার সার্টিফিকেট তো বেশ ভালো ! তোমাকে আর প্রশ্ন করতে চাচ্ছি না ! ধরে নাও তুমি চাকরিটি পেয়ে গেছো ! কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বড় স্যারকে উপহার হিসেবে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে ! এক সপ্তাহের মধ্যে টাকাটা জমা করে দাও ! তারপর তোমার নিয়োগ হবে ! ছেলেটি ইন্টারভিউ রুম থেকে বের হয়ে বাড়িতে এসে তার বাবাকে জানালো, ৫ লাখ টাকা না হলে তার চাকরিটা হবে না ! গ্রামের সহজ সরল বাবা নিজের ছেলের চাকরির জন্য ভিটা বাড়ি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা জোগাড় করলেন ! তারপর বড় স্যারকে উপহার হিসেবে ৫ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেটি চাকরি পেয়ে গেলো !
ঘটনা - ২
আজ বড় স্যারের ছেলের জন্মদিন ! বাড়িতে বিশাল পার্টির আয়োজন করা হয়েছে ! তিনি বাড়িতে ঢুকেই তার ছেলের নাম ধরে ডাকতে শুরু করলেন ! ছেলে কাছে আসতেই বড় স্যার “হ্যাপি বার্থডে মাই সান” বলতে বলতে ছেলের হাতে ৫ লাখ টাকার বাইকের চাবি তুলে দিলেন ! বাইক পেয়ে ছেলেটি খুশিতে আত্মহারা হয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে বললো - আমার বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা !
ঘটনা - ৩
বড় স্যারের ছেলে আজ বাইক নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে রাজপথে ছুটে চলেছে বাইক ! হঠাৎ ট্রাকের সাথে ধাক্কা সবকিছু থেমে গেলো ! বড় স্যারের ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলো হাসপাতালের বড় ডাক্তার সাহেব জানালেন আপনার ছেলের অবস্থা ভালো না, খুব জটিল একটা অপারেশন করাতে হবে, কাউন্টারে ১০ লাখ টাকা জমা করে দিন ! বড় স্যার কোনও উপায় না দেখে মেয়ের বিয়ের জন্যে ব্যাংকে জমিয়ে রাখা টাকাটা কাউন্টারে জমা করে দিলেন !
ঘটনা - ৪
বড় ডাক্তার সাহেব আজ খুব খুশি ! ৩-৪ লাখ টাকার অপারেশনের জন্য ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন, পুরোটাই লাভ ! খুশিতে তিনি তার একমাত্র মেয়ের জন্য স্বর্ণের নেকলেস কিনে বাসায় ফিরলেন ! বাসায় ঢুকেই তিনি তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে মামুনি মামুনি বলে ডাকতে শুরু করলেন ! ডাক্তার সাহেবের বউ কাঁদতে কাঁদতে বললেন, তাদের মেয়ে এখনও বাসায় ফেরেনি ! বড় ডাক্তার সাহেব তার মেয়েকে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেন, কোথাও কোনও খোঁজ না পেয়ে তিনি যখন দিশেহারা হয়ে পড়লেন, ঠিক তখনই অপরিচিত এক নাম্বার থেকে ফোন এলো ! ফোনেও ঐ প্রান্ত থেকে জানালো, আপনার মেয়ে আমাদের কাছে, মেয়েকে ফেরত পেতে হলে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লক্ষ টাকা দিতে হবে ! কথাটা শুনে বড় ডাক্তার সাহেবের স্ত্রী স্ট্রোক করলেন !
শিক্ষাঃ আপনি অতীতে যা করেছেন, বর্তমানে যা করছেন, ভবিষ্যৎ তার চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপে আপনার কাছে ফিরে আসবেই !!
প্রত্যেক ক্রিয়ার-ই একটা সমান ও বিপরীতমূখী প্রতিক্রিয়া আছে! (নিউটনের গতিবিষয়ক তৃতীয় সূত্র)
সুতরাং সময় থাকতেই সৎ পথে চলার অভ্যাস করতে হবে। ভালো কাজে অংশ গ্রহন ও মানুষের উপকারে আসতে হবে ।

----------------------------------


মন খারাপ থাকলে, কথা গুলো একা পড়ুন






কারোর সময় টা হয়তো অতীত হয়ে যায়, কিন্তু মানুষের খারাপ ব্যাবহার টা কখনো অতীত হয়ে যায় না । শুধু নিজে থেকে কথা বলা বন্ধ করে দেখ, দেখবে অনেক আপনজন পর হয়ে যাবে । আসলে কেউ আপন হয় না । যারা তোমার ক্ষতি চায় তাদের আঘাত করবে না, তাদের সামনে একটু হাসিমুখে বাঁচবে । দেখবে তুমি আঘাত করলে যা কষ্ট পেত ওরা তার থেকেও বেশি কষ্ট পাবে । যত মিশবে ততই মানুষ চিনবে । অভিনয় যে কত প্রকার হয় তা বুঝতে পারবে । সবাইকে তোমার সত্যতা জানানোর দরকার নেই, যে যা ভাবে তা নিয়ে সমালোচনা করতে থাকুক । বেঈমান মানুষ গুলো কখনো অপরিচিত মানুষ হয়না , খুব কাছের মানুষ গুলোই বেঈমান হয় । পাতা ঝরার আগেই পাতার রং বদলে যায়, আর মানুষ বদলানোর আগেই কথা বলার ধরণ বদলে যায় । মন কখনো ভাঙ্গেনা, যেটা ভাঙ্গে সেটা হল বিশ্বাস । কেউ যদি তোমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয় তাহলে বুঝেনিও তোমার পিছনে তারা তোমায় নিন্দা করা শুরু করে দিয়েছে । ভুল মানুষের কাছে প্রত্যাশা রাখি বলে আমরা দুঃখ পাই বেশি । আপনি যতই নরম মনের মানুষ হবেন ততই আপনি অন্যদের কাছ থেকে ক্ষতবিক্ষত হবেন । মানুষ চেনা শুরু করলে এমনিতেই বন্ধুর সংখ্যা কমে যাবে এটাই বাস্তব । স্ত্রী চেনাজায় স্বামীর দারিদ্রতায়, স্বামীকে চেনাজায় স্ত্রীর অসুস্থতায় । খাবার যতই দামী হোকনা কেন, পঁচে গেলে যেমন টা দাম থাকেনা । ঠিক তেমনি শিক্ষা যতই থাকুক না কেন মনুষত্য না থাকলে সেই শিক্ষার কোন দাম থাকেনা । তিনটি কথা মনে রাখবেন- যে তোমাকে সাহায্য করে তাকে কখনো ভুলে যেওনা, যে তোমাকে ভালোবাসে তাকে কখনো ঘৃণা করোনা, যে তোমাকে বিশ্বাস করে তাকে কখনো ঠকিওনা । ধোঁকা একজনই দেয় কিন্তু বিশ্বাস সবার উপর থেকে উঠে যায় । পৃথিবীতে কেউ যদি আপন বলে থাকে, তিনি হচ্ছে মা । যে ধোকা দেয় সে চালাক হতে পারে, তবে যে ধোকা খায় সে বোকা নয় সে বিশ্বাসী । কাউকে যদি ভালবাসতে হয় তাহলে হৃদয় থেকে ভালোবাসো, নিজের স্বার্থের জন্য তার কাছে ভালোবাসার অভিনয় করবেন না । আপনার অভিনয় হয়তো একটি মানুষের জীবনটাই পুরো এলোমেলো করে দিতে পারে । মানুষ চিনতে শুধু মন নয় সঠিক পরিস্থিতির দরকার হয় । তুমি যখন বিপদে পরবে দেখবে রক্তের সম্পর্কের মানুষ গুলয়ই সবার আগে দূরে চলে যায় । সমস্যা কখনো এড়িয়ে যেতে নেই, বরং সমস্যা এলে তার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় । মনেরেখো সমস্যা বিহীন সাফল্য কোন আনন্দ নেই, সব সমস্যার সমাধান আছে । গরীব হোক বা ভিখারি তাদের সাথে কখনো খারাপ আচরণ করবেন না, কারণ গরীব হতে বেশি সময় লাগে না । একবার ফ্যামিলি সমস্যায় পরে দেখুন দেখবেন দুনিয়ার কোন কিছুই ভালো লাগবেনা । পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর মানুষ তো সেই, যে তার নিজের প্রয়োজনে অন্যকে বেব্যহার করে আর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে তাকে দূরে সরিয়ে দেয় । সুখ মানুষের জীবনে অহংকারের পরীক্ষা নেয় আর দুঃখ মানুষের জীবনে ধর্যের পরীক্ষা নেয় । চিনি আর লবণ দেখতে একি রকম কিন্তু পার্থক্য শুধু স্বাদের । তেমনি মানুষ আর অমানুষ দেখতে একি রকম কিন্তু পার্থক্য শুধু আচরণে । সময়ের সাথে বোঝা যায় কে আপন কে পর, কে বন্ধু আর কে স্বার্থপর । মানুষ বরই অদ্ভুত, ভদ্র আচরণকে দুর্বলতা ভাবে আর বদ মেজাজ কে ভাবে বেক্তিত্ব । দুনিয়া আপনার সম্বন্ধে কি ভাবছে তা ভাবতে দিন, আপনি আপনার লক্ষ্যগুলোতে অটুট থাকুন । দেখবেন দুনিয়া একদিন আপনার পায়ের সম্নুখীন হবে । বিশ্বাস আর ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যে তার মর্যদা সবাই দিতে পারেনা । সততা একটি মূল্যবান গুণ, যা আপনে সস্থা লোকের কাছ থেকে কখনোই আশা করতে পারবেন না । জীবনে ঝুকি নাও জিতলে তুমি অন্যদের নেতৃত্ব দিবে আর যদি হেরে যাও তাহলে তুমি অন্যদের সঠিক পথ দেখিয়ে দিবে । কেও এত ধনি নয় যে পেরিয়ে যাওয়া সময়কে কিনতে পারবে, আর কেও এত গরীব নয় যে সামনে আসার সময়কে পাল্টাতে পারবে । জীবনে আনন্দ সেই দিনে তুমি পাবে যে দিন তুমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে । ছোটো বেলায় শিখেছে, তুমি কখনো ক্ষতি না করলে কেও তোমার ক্ষতি করবে না । বাস্তবে যা শিখেছে তুমি যার ভালো চাইবে সেই সবার আগে তোমার ক্ষতি করবে । যতদিন না নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে ততদিন কেও পাশে থাকবেনা, যতই বলুক পাশে আছি সবসময় । মানুষ কখনো ইচ্ছে করে বদলায় না । কিছু মানুষের অভহেলা, কিছু স্মৃতি এবং কিছু খারাপ পরিস্থিতির সময় মানুষকে বদলে দিতে বাদ্ধ করে । আমি বিশ্বাস করি যা কিছু তোমার প্রাপ্য তা তুমি পাবেই, এ জগতের কোন শক্তিই তোমাকে তা থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না । কখনো কাউকে নিজের সাথে তুলনা করতে নেই, কারণ কেও কারর মত নয় সবাই সবার জগতে সেরা । তুমি যদি মনে কর তুমি সঠিক তা সত্ত্বেও মানুষ তোমার সমালোচনা করছে, কটুক কথা শুনাচ্ছে, তাহলে তাতে কান দিও না । শুধু মনে রেখো যে কোন খেলায় শুধু্ মাত্র দর্শকরাই চ্যাঁচামেচি করে খেলোয়াড়রা নয় , তাই খেলোয়াড় হয়ে ওঠুন । চকচক করলেই সোনা হয় না ঠিক তেমনি দামী পোশাক আর কথায় কথায় ইংরেজি বললেই ভালো মানুষ হওয়া যায়না । সৎ হও অবশ্যই সুখী হবে । মোমবাতির ভেতরের সুতাটা মোমবাতিকে বলে জলছিত আমি কিন্তু তুমি কেন কাঁদছ, মোমবাতি বলল যাকে হৃদয়ের মাঝে যায়গা দিলাম সে যদি জ্বলে যায় তবে অশ্রুত ঝরবেই । ভালোবাসা বড়ই অদ্ভুত অল্প সময়ে যতটুকু সুখ দেয় পরবর্তীতে সব আনন্দ কেঁড়ে নেয় । নিজের মন খারাপ নিজেকেই ভালো করতে হবে কারণ তোমার তুমি ছাড়া আর কেও নেই ।

---------------------------------------

মন পুড়ে হয় ঋদ্ধ
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

কত উল্লাসে উঠছো মেতে , হুল্লোড় চারিদিকে ;
কারো হৃদয়ে অমানিশা আঁধার , স্পপ্নের রং ফিকে ।
কত ভাবনা তোমাদেরকে কখনো করে না বিদ্ধ ;
কেউ কেউ শুধু দহনে জ্বলে , ম্ন পুড়ে হয় ঋদ্ধ ।
ভোগতান্ত্রিক বাসনা তোমাদের , নিয়ত করে তাড়া
কেউ হতে চায় সদা নির্মোহ, নিছক ছন্নছাড়া ।
তোমরা বলো যে জীবনের কথা , তপ্ত রাজপথে ;

কেউ খুঁজে ফেরে বোধ আর দর্শন , ঘাতে অপঘাতে ।
তোমাদের চোখে নিয়তই যারা , আশাহত কোন মানুষ ;
জনে জনে তারা সুধায় যে ব্যথা , আকাশে উড়িয়ে ফানুস ।
মধ্যাহ্নের ঝাঁঝালো রোদে বেপরোয়া তোমাদের ধনতন্রের গাড়ি;
তোমরা জানোনা কত মানুষের রোজ উনুনে ওঠে না হাড়ি ।

তোমরা ব্যস্ত নীলাভ আলোতে উৎসব রাজসিকে;
কত প্রাণ আজও নাঙ্গা-জীর্ণ , ক্ষুধার্ত চারদিকে ।
বঞ্চনার ঘেরাটোপে , যাদের রেখেছো ঘিরে ;
ঠিক তারা একদিন ছড়াবে ক্ষোভ , অস্থিমজ্জা জুড়ে ।


-----------------------------


বাবা

তোমার বাবা হয়তো রাজার রাজা
আমার বাবা খুব সাধারণ
রোজ খেঁটে খাওয়া প্রজা ।

তোমার জন্য তোমার বাবা
চাঁদ পেড়ে দিতে পারে
আমার বাবা তো হত দরিদ্র
খালি হাতে ঘরে ফেরে ।
তোমাদের বাবা খুব ফিটফাট
গাঁয়ে সুট হাতে ঘড়ি
আমার বাবা টা ভীষণ অগোছালো
মুখ ভরা পাকা দাঁড়ি ।
তোমাদের হাতে নুন পড়া ডালেও
বাবা খাঁয় চেঁটে বাটী
আমি তো দারুণ রান্না করি
তবু বাবা বলে মোটামুটি ।
তোমাদের জন্মদিনে বাবা দারুন উপহার দেয়
আমার বাবা এত আনমনা দিনটায় ভুলে যায় ।
তোমার বাবা হাত ধরিয়ে নাস্তা করায় প্রায়
আমার বাবা নিজেই পারেনা আমি হাত ধরি তার ।
তোমাদের বাবা তোমাদের হাতে
খরচের টাকা দেয়
আমি টিওশন করে মাস হারা বেতন পেলে
বাবার ঔষধ কিনতে হয় ।
তোমার বাবা রাখতেই পারে তোমায় ভীষণ সুখে
আমার বাবাও চেষ্টা করে আগলে রাখতে বুকে ।
হতে পারে তুমি রাজ কন্যা
আমি হয়ত বা দাসী
তবুও দিন শেষে আমি
আমার বাবাকে ততটাই ভালোবাসি ।
তোমরা বাবা শব্দের যে সজ্ঞা দাও
সারা ফেইসবুক জুড়ে
ঐ চিরাচরিত্র বাবার উপমা
আমায় বড় বিরক্ত করে ।
আমার বাবা তোমাদের করা ব্যাখ্যার উত্তর নয়
তাই ওগুলো দেখলে নিজের উপর বড় অভিমান হয় ।
তোমাদের বাবা নিজে না খেয়ে
তোমাদের মুখে ধরে
ঐ দিকে আমার জন্য তুলে রাখা লিচু
বাবা খেয়ে নেয় চুরি করে ।
বুঝেই না উনি এত শত কথা, বড্ড সরল যেন
তাইতো এমন জটিল সমাজে , ভীষণ বেমানানও
শাসন যদিও করেনা তেমন
তবুও খুব খুত ধরে
অথচ বন্ধু মহলে আমার পেছনে
আমারি তারীফ করে ।
আমি নিজেও উনাকে বকাঝকা করি
ভুল করলেও অকুতসাত
আবার উনার দিকে আঙ্গুল তুললে
ভাঙ্গতে পারি সেই হাত ।
বাবা পরীক্ষার আগে সংশয় বলে, পাস করবি তো বল ?
রেজাল্ট বেরুলে ভালো ফলাফল হলে, তার দুচোখেই জল ।
কিছুই করিনা তবুও
আমায় সারাদিন ধরে বঁকে
কিন্তু যখন সবাই বিরুত
ঠিক তখনই পাশে থাকে ।
জীবনে খালি আমার দ্বারা
কিছুই হবেনা নাকি
তাকেই আমার সাফল্য আমি
দামামা বাঁজাতে দেখি ।
সবচেয়ে বেশি অশান্তি করি
যেই লোকটির সাথে
আমার বিয়ের পাকা কথা হলে
সেই হাওমাও করে কাঁদে ।
অথচ যখন জিজ্ঞেস করি, পারবে থাকতে ছেড়ে ?
উত্তরে বলে বিদায় হত, আমি বাঁচব হাত পা ছেড়ে ।

অনুতাপ জন্মে বুকের গহনে অভিমান জন্মায়
সময়ের সাথে যদিও আবার সে বরফ গলে যায় ।

---------------------------


জীবনের কথা বলা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

একটা কাব্য , একটি কবিতা
একটি শব্দ চয়ন
কখনো কখনো ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ে
দহনের অবসায়ন ।
একটা ভাবনা , একটি চেতনা
অফুরান জীবনবোধ
ঘনীভূত হয় মনোজগতে
বয়ে যায় মৃদু স্রোত ।
একটা গল্প , একটা গান
একটি চিত্রকলা
ফিরে এনে দেয় প্রশান্ত বিকেল
স্নিগ্ধ ভোরবেলা ।
একটা জীবন , শত আয়োজন
অবিরত ছুটে চলা
জনে জনে ফিরি , দুর্গমগিরি
জীবনের কথা বলা ।

----------------------------------

মুখোশ
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

মুখোশের মুখে যাচ্ছে ঢেকে করোনাক্রান্তি জীবন ,
সে মুখে এখন আর প্রশান্তি দেখা যায় না তেমন ।
দৈন্যতা আঁকড়ে ধরে রাজপথ থেকে জনপদ
পুঁঁজিপতিদের তীক্ষ্ণ দৃ্ষ্টি প্রণোদনা , আর আমোদ ।
তীব্র শীতে কেঁপে ওঠে যখন বৃদ্ধ জীর্ণ দেহ
চারপাশ ঘিরে শত আশ্বাসে পথভ্রান্ত কেহ ।
হারিয়ে ফেলেছে কিশোর ছেলেটি প্রিয় গিটারের সুর তাল
ধনতন্রের গহীন স্রোতে উঠে যায় অশ্ববৃক্ষের ছাল ।
উজান ভাটির গাঙপাড়ে দাঁড়িয়ে যারা দেখেছিল আকাশ
তাদের মননে অপছায়া ঢোকে ভাবনাকে করে গ্রাস ।
ভালো নেই আমি , ভালো নেই কত স্বজন আর প্রিয়জন ,
আত্নকেন্দ্রিক গোলক ধাঁধাঁয় মুচকি হাসে জীবন ।

------------------------------


একদিন
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

একদিন আমি সব এনে দেব
শরীরের বসন থেকে শুরু করে
বসতভিটা অট্টালিকা গড়ে দেব ।
তাচ্ছিল্যের হাসি হেসো না তুমি
বৃষ্টির রাত জেগে বিছানায় বসে
তোমাকে বাসন পেতে পানি ধরতে হবে না আর
আঙ্গুল গুনে গুনে দিন হিসেব করতে হবে না আর
অত সুন্দর নিষ্পাপ মুখে
অযত্নের ছাপ দেখতে ইচ্ছে করেনা আমার,
সুরম্য প্রাসাদ , শ্বেত পাথরের মহল
গড়ে দেব তোমায় ।
ঝাড়বাতির আলোয় স্নান করবে তুমি
লাল গালিচার ওপর রাখবে তোমার ঐ
বেড়ালের মত তুলতুলে নরম পা ।
তোমার সেবায় মত্ত থাকবে অসংখ্য দাসদাসী ।
কতদিন আসে-কতদিন যায়
আমার শুধু একটা দিন ,
ঈশ্বরের-কৃপায় ।

------------------------------------

প্রিয়
কবি : সুমন মুস্তাফিজ

ভালোবাসা জানবে প্রিয়
জীবনটা হয়ে উঠুক দীপ্তিময় শুদ্ধ স্বর্গীয় ।

পিছে ফেলে আকাশ সমেত ব্যথার প্রান্তর;
আমাদের কথা হোক অন্তর থেকে অন্তর ।
আমাদের যত ক্লেশ হৃদয় দগ্ধতা;
শুভ্র আলিঙ্গনে ফিরে পাক পূর্ণতা ।
নিকষ কালো রাত আর শুন্যতা মাড়িয়ে;
সোনাঝরা রোদ থাক হৃদয় জড়িয়ে ।
বহুদিন গত হয়, স্মৃতি থাকে পড়ে;
আবার ঠিকই হবে দেখা, বৃষ্টিস্নাত ভোরে ।
গত জনমের যত জমেছিল ভ্রান্তি;
এ জনমে রবে না তার ছিটেফোঁটা ক্রান্তি ।

শুভ্র সমীরণে ভেসে যাবো ভহুদূরে;
হৃদয় হৃদয় ছুঁয়ে স্বপ্নীল সুরে । ।

------------------------------


প্রত্যাশা
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
প্রত্যাশা কমিয়ে ফেলো , হতাশা ক্ষীণ হয়ে যাবে অনায়াসে
যদি কেউ ঘুমোয় শ্বেতপাথরের মহলে
তাতে কি এমন যায় আসে
তুমিও দিব্যি বেঁচে আছো
এই কাঁদামাটি জল , ভালোবাসে ।
প্রতিদিন যখন সূর্য ওঠে , তোমার জীর্ণ শিয়রে
জানালার পাশে বুনোফুলব ফোটে
আগমনী সুধা দুয়োরে ।
এই প্রকৃতি বৃক্ষরাজি নদী মাটি জল আকাশ
অপরূপ শোভায় মাতিয়ে রাখে জীবনের বহিঃপ্রকাশ ।

 -------------------------


যদি তুমি আশ্বাস দাও
কবি : সুমন মুস্তাফিজ


আমি বিস্মিত হই
তোমার চোখের শীতল দৃষ্টি দেখে ।
আমি হতবাক হয়ে যাই
তোমার চঞ্চলতা, ব্যস্ততা দেখে ।
আমি নির্বাক হয়ে পড়ি
তোমার দৃঢ় চাহনির অন্তরালে ।
আমার মস্তিষ্কে নতুন অনুভূতির
সঞ্চার করেছো তুমি,
অস্পর্শনীয় সুখ অনুভূতি

এখন আমার স্নায়ু প্রকোষ্ঠে ।
অনেক দুস্বপ্নের রাত কাটিয়ে
কল্পনার গায়ে নগ্ন পায়ে
হেঁটেছি অনেক কাল ।
অগণিত আশার জলজ্যান্ত
মৃত্যু দেখেছি,
অভাব বোধ দেখেছি,
দেখেছি আপনজনের অশ্রু ।
হতাশার মধ্যাকর্শণ টানে
দোদুল্যমান আমার নিজস্ব স্ব্কীয়তা ।
তবে আর নয় এই অনিশ্চিত যাত্রা
বিতৃষ্ণা অনীহা, অবহেলার নাগপাশ কাটিয়ে,
সোনালী ঊষার মত জেগে উঠতে চাই আমি ।
অনন্তিকা শুধু তুমি একটু আশ্বাস দাও
তবেই মধ্যাহ্ন সূর্যের চনমনে আলোতে
ব্যস্ত হব নিজেকে সাজানোর প্রচেষ্টায় ।
আমি আবার সতেজ প্রাণবন্ত হব
শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের মত ।

অনন্তিকা যদি তুমি-

একটু আশ্বাস দাও ।

-----------------------------

ভালো শুধু তোমাকেই বাসি
কবি : শবনম মাহমুদ

ভালো শুধু তোমাকেই বাসি,
প্রতিদানে ভালোবাসবার
নেই বুঝি অবসর?
থাকনা তবে, তাড়া নেই অতো!
একদিন জানি আমার কাছেই
ফিরবে অতঃপর!
নেই হারানোর কোনো ভয়,
ভেজা অভিমানে করবোনা
তাই করুণ প্রতিবাদ!
উদাস চোখে তাকিয়ে পথে
মৃদু হাসি হেসে ক্ষমা করে দেবো,
হেলায়ভরা নিরব অপরাধ!
শেষ হলে পথ ওগো পথিক
ক্লান্ত শ্রান্ত বেশেই নাহয়
ফিরে এসো এই দ্বারে!
মনে রেখো শুধু এই কথাটুকু,
আমিই তোমার শেষ ঠিকানা
এপার কিংবা সুদূরের ঐ পারে! 

-------------------------------

আশাবাদ
কবি : সুমন মুস্তাফিজ
দেখে নিও, এই সমাজের যে মানসিক বৈকল্য
তাকে পদদলিত করে, ঠিকই জেগে উঠবে
আলোর পূর্ণভুমি পথে পথে ছড়িয়ে থাকবে
পুষ্পাঞ্জলি ।
আশাহত হওয়ার কোন কারণ দেখি না আমি,
শুধু সময়কে অতিক্রম করে যাওয়ার শুদ্ধ চে্ষ্টা ছাড়া ।
কালে কালে আমাদের আদি পুরুষেরাও
কত জরাজীর্ণতাকে দূরে ঠেলে দিয়েছে, সুভ্র স্বপ্ন বিনির্মাণে ।
মেঘে ঢেকে থাকা আলোক রশ্মিকে করেছে জয়,
দৃঢ় আত্নবিশ্বাসে, মনোবলে ।
চারপাশে ঘিরে থাকা যে বৈরী গল্পের প্রতিচ্ছবি,
লীন হবে, ঝরে যাবে লোনাধরা দেয়ালের মত । 
-------------------------------
তুমি
কবি : শবনম মাহমুদ
তুমি চেয়ারটা তে বসবে
সামনে সাজানো কত কিছু
তোমার ব্যবহারের
বই খাতা কলম ।
আমি অবাধ্যতায় তাকিয়ে
তোমার নামের মধ্যেও ভালোলাগা
তুমি নেই তবুও আমি

তোমার স্পর্শ চতু্র্স্পর্শে ।
-------------------------------

"ইবলিশের আগে কোন শয়তান ছিলো না। তাহলে ইবলিশকে আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার জন্য কে ধোঁকা দিলো?"
সম্প্রতি এই ধরনের প্রশ্নের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই প্রশ্নটার কারণে অনেকের মনে সংশয় সৃষ্টি হতে পারে এবং নাস্তিকতরা এই ভিডিওটি বেশ ফলাও করে শেয়ার দেওয়া শুরু করেছে - সুতরাং উত্তরটা জানা প্রয়োজন।
তাছাড়া, দ্বীন সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখার জন্য এই প্রশ্নটার উত্তর আমাদের জানা দরকার আছে বলে আমি মনে করি।
প্রথমেই সরাসরি উত্তরে চলে যাই-
ইবলিসকে তাঁর নিজের নফস আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার জন্য প্ররোচিত করেছিলো। তাঁর নফস তাঁর মধ্যে অহংকার সৃষ্টি করে এবং এই অহংকারের দ্বারাই সে আল্লাহর অবাধ্য হয় এবং তাঁর বিচ্যুতি ঘটে। (সূরা বাকারার ৩৪ নং আয়াত ও সূরা সোয়াদের ৭৪,৭৫ ও ৭৬ নং আয়াত পড়ুন)।
সাধারণত আরবি “নফস" শব্দটির অর্থ হলো প্রবৃত্তি; তাছাড়া এই শব্দটির অনেক অর্থের মধ্যে আরেকটি অর্থ ‘অহং' বা 'অহংবোধ'। আর প্রবৃত্তি ও অহং( আমিত্ব) পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আর উপরের আয়াতগুলো পড়লে এটা স্পষ্ট যে, ইবলিশ এই অহংবোধের কারণেই, আমিত্ব নামক প্রবৃত্তির কারণেই আল্লাহর অবাধ্য হয় এবং কাফিরে পরিণত হয়।
আবার নফস বলতে সরাসরি প্রাণকেও বোঝানো হয়েছে। যেমন সূরা আল ইমরানের ১৮৫, সূরা আনকাবুতের ৫৭ ও সূরা আম্বিয়ার ৩৫ নং আয়াতে - “প্রত্যেকটি নাফসিনকে ( প্রাণকে) মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে" সেই কথায় বলা হয়েছে।
অর্থাৎ, প্রত্যেকটি মানুষ ও জিনের মধ্যে নফস আছে।
ইবলিশ জিন সম্প্রদায়ের। সুতরাং তাঁর মধ্যেও নফস ছিলো, অর্থাৎ আমিত্ব ছিলো, প্রবৃত্তি ছিলো। সূরা ইউসুফের ৫৩ নং আয়াত অনুযায়ী নফসের কাজ- “মানুষকে খারাপ কাজের প্রতি প্ররোচিত করা", সুতরাং ইবলিশের আগে কোনো শয়তান না থাকা সত্ত্বেও তাঁর নফস তাকে অহংকারে, অহংবোধে ফেলেছিলো। এর ফলেই সে আল্লাহর অবাধ্য হলো, কাফিরে পরিণত হলো।
আমাদের শিক্ষা-
মূলত, নফস সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা নেই বলে আমরা মনে করি যে, আমাদের সব পাপ শয়তানের প্ররোচনায় সংঘটিত হয়। আসলে কিন্তু এমনটি নয়; শয়তান যেমন আমাদের ধোঁকা দেয়, তেমন আমাদের নফসও আমাদের প্ররোচিত করে। তাই সব পাপের ভার শয়তানের কাঁধে দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা নিজেরাই নিজেদের পাপে প্ররোচিত করি নফসের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে। সুতরাং নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করুন, নফসের বিরুদ্ধে লড়াই করুন, পরিশুদ্ধতা অর্জন করুন।
মনে রাখবেন, মহাবিশ্বের প্রথম পাপটিই হয়েছিলো নফসের প্ররোচনায়; কোনো শয়তানের প্ররোচনায় না। সুতরাং নফসকে নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি অবজ্ঞা, উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সূরা নিসার ১৩৫ নং আয়াত ও সূরা সোয়াদের ২৬ নং আয়াতসহ কুরআনের অনেক আয়াতে আমাদের অভিভাবক আল্লাহ তা'আলা স্পষ্টভাবে, কঠোরভাবে নফসের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আর ইবলিশ তো নফসের প্ররোচনায় পড়ে কাফিরই হয়ে গেলো। সুতরাং, নফসের প্ররোচনা, নফসের অনুসরণ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন। শয়তানের ধোঁকার থেকেও শক্তিশালী ধোঁকা হলো নফসের ধোঁকা যা মহাবিশ্বে প্রথম পাপ ঘটিয়েছে, একজন আল্লাহওয়ালাকে ইবলিশে, কাফিরে পরিণত করেছে।
নফসের ধোঁকার প্রথম হাতিয়ার হলো আমিত্ব বা অহং। কেননা, মহাবিশ্বের প্রথম পাপটিই ছিলো অহংবোধ, আমিত্ব যার কারণে ইবলিশ কাফিরের পরিণত হলো। সুতরাং অহংকার থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন; আত্মতুষ্টি, আমিত্ব থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।
আরো একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, ইবলিশ কিন্তু আগে অনেক আল্লাহ ওয়ালা বান্দা ছিলো এবং তাঁর দাসত্ব, ইবাদত তাকে অনেক উঁচু পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু সে নফসের ধোঁকায় পড়ে, অহংবোধে শয়তানে পরিণত হলো, কাফির হয়ে গেলো। সুতরাং, নফস ও অহংকারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক হোন।
আল্লাহ তা'আলা সূরা নাযিয়াতের ৪০ ও ৪১ নং আয়াতে বলেছেন- “ যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করে এবং প্রবৃত্তির ( নফসের) চাহিদা থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত।"
বরকতময় ও সুমহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়েত দিন, ক্ষমা করুন এবং জান্নাতবাসী করুন। ( আমিন)...
( বিঃ দ্রঃ উপরের উল্লেখিত নফসটি নফসে আম্বারাহের অন্তর্ভুক্ত। নফসে আম্বারাহ মানুষ ও জিনকে পাপের দিকে প্ররোচিত করে এবং কোনো অনুশোচনার ধার ধারে না।
এছাড়াও নফসের আরো প্রকার আছে। যেমন, এক ধরনের নফস আছে - যে নফস পাপ করলে অনুশোচনায় ভোগে এবং আরেক ধরনের নফস আছে- যে নফস সকল পাপ থেকে পরিশুদ্ধতা লাভ করতে পারে, আর সেটাই হলো প্রশান্ত আত্মা)।

রাস্তায় মদ ঢেলে দেওয়া
হযরত আনাস ( রা ) থেকে রেওয়ায়েত, তিনি বলেন, একদিন আমি আবু তালহার বাড়িতে লোকজনকে শরাব পান করাচ্ছিলাম । সে সময় লোকেরা ফাযীখ শরাব ব্যবহার করতেন । হযরত রাসুল ( স ) এক ব্যক্তিকে আদেশ করলেন, যেন সে এ মর্মে ঘোষণা দেয় যে, সাবধান ! এখন থেকে শরাব হারাম করে দেওয়া হয়েছে । আবু তালহা ( রা ) আমাকে বললেন, বাইরে গিয়ে সমস্ত শরাব ঢেলে দাও । আমি বাইরে গেলাম এবং সমস্ত শরাব রাস্তায় ঢেলে দিলাম । আনাস ( রা ) বলেন, সে দিন মদীনার অলিগলিতে শরাবের প্লাবন বয়ে গিয়েছিল । তখন এ আয়াত নাযিল হলঃ "যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারা পূর্বে যা কিছু পানাহার করেছে তার জন্য তাদের কোন গুনাহ হবে না ।" (৫ঃ ৯৩) ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ২৩০২


ঝগড়া বিবাদকালে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ( রা ) বলেন, হযরত রাসুল ( স ) বলেছেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকবে সে মুনাফেক । অথবা যার মধ্যে এ চারটি স্বভাবের যে কোন একটা থাকবে, তার মধ্যে মুনাফিকের একটা স্বভাব বিদ্যমান থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা পরিহার করে । ( স্বভাবগুলো হল ) (১) যখন সে কথা বলবে, মিথ্যা বলবে, (২) যখন ওয়াদা করবে, তা ভঙ্গ করবে, (৩) যখন চুক্তি করবে, বিশ্বাসঘাতকতা করবে, (৪) যখন ঝগড়া-বিবাদ করবে, অশ্লীল কাব্য প্রয়োগ করবে । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ২২৯৭
খাদ্য না দিতে পারার ভয়ে সন্তানকে হত্যা করা
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রা ) বলেন, একদা আমি আরজ করলাম ওগো আল্লাহর হযরত রাসুল ( স ) ! সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ কোনটি ? তিনি বললেন, কাউকে আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার করা । অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন । পুনরায় প্রশ্ন করলাম, তারপর কোনটি ? হযরত রাসুল ( স ) বললেন, তোমার সাথে খাদ্য ভাগ বসাবে, এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা । আবার প্রশ্ন করলাম, তারপর কোনটি ? হযরত রাসুল ( স ) বললেন, আপন প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যেনা করা । অতঃপর মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত রাসুল ( স )-এর উক্ত কথার সত্যতা প্রতিপন্ন করে আয়াত অবতীর্ণ করলেন, অর্থ- আর যারা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে না । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৫৫৭৫


ইয়াতীম লালন পালন করার ফযীলত
হযরত সাহল ( রা ) বলেন, হযরত রাসুল ( স ) বলেছেন, আমি এবং ইয়াতীমদের তত্ত্ববধানকারী বেহেশতে এরূপ কাছাকাছি থাকব; যেমন দুটি আঙ্গুলের দুরত্ব । হযরত রাসুল ( স ) তখন স্বীয় শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করে দু'জনের দুরত্ব দেখান । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৫৫৭৯


কেয়ামতের দিন মানুষকে পিতার নামে ডাকা হবে
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ( রা ) হতে রেওয়ায়েত, যরত রাসুল ( স ) বলেন, কেয়ামতের দিন চুক্তি বা অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর জন্য পতাকা তোলা হবে এবং বলা হবে, এ পতাকা অমুকের পুত্র অমুকের চুক্তি ভঙ্গের নিদর্শন ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৫৭৪৪
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ( রা ) হতে রেওয়ায়েত, হযরত রাসুল ( স ) বলেছেন, ওয়াদা ভঙ্গকারীর জন্য কেয়ামতে একটা পতাকা তোলা হবে । আর বলা হবে যে, এটা অমুকের পুত্র অমুকের বিশ্বাসঘাতকতার আলামত । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৫৭৪৫

অযথা ঢিল ছোঁড়া নিষেধ
আবদুল্লাহ ইবনে মোগাফফাল মুযানী ( রা ) বলেন, হযরত রাসুল ( স ) অযথা ঢিল ছুঁড়তে বারণ করেছেন এবং বলেছেন, তা কোন শিকারও মারে না এবং দুশমনকেও আহত করে না, তবে চোখ ফুঁড়ে এবং দাঁত ভেঙ্গে দেয় । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৫৭৮৭

মোরগের ডাক
হযরত আবু হুরায়রা ( রা ) হতে বর্ণনা, হযরত রাসুল ( স ) বলেছেন, যখন তোমরা মোরগের ডাক শুনবে তখন তোমরা আল্লাহর নিকটে তাঁর অনুগ্রহ চেয়ে দু'আ কর । কেননা, এ মোরগ ফেরেশতাদের পায় । আর যখন গাধার আওয়াজ শুনবে তখন শয়তান থেকে আল্লাহর নিকটে সাহায্য প্রার্থনা করবে, কেননা, এ গাধাটি শয়তানকে দেখতে পায় । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৩০৭১


রক্ত চোষা দেখলে হত্যা করতে হবে
হযরত উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা ( রা ) হতে বর্ণনা, তিনি বলেন- হযরত রাসুল ( স ) গিরগিট বা রক্তচোষা টিকটিকিকে নিকৃষ্টতম প্রাণী বলে আভিহিত করেছে । আমি তাঁকে এগুলো হত্যা করার আদেশ দিতে শুনেছি । আর সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস ( রা ) বলেন, হযরত রাসুল ( স ) একে হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৩০৭৫



পিঠে সাদা রেখা বিশিষ্ট সাপ হত্যা করতে হবে
হযরত উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা ( রা ) হতে বর্ণনা করেন যে, হযরত রাসুল ( স ) বলেছেন, পিঠে সাদা রেখা বিশিষ্ট সাপকে মেরে ফেল । কেননা এ জাতীয় সাপ দৃষ্টি শক্তিকে নষ্ট করে আর গর্ভপাত ঘটায় । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৩০৭৬




অলীক ও অবাস্তব জিনিস
হযরত আয়েশা সিদ্দীকা ( রা ) বলেন, একদা কতিপয় লোক হযরত রাসুল ( স )-এর কাছে গণকদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ও কিছু না । লোকেরা আরজ করল, ইয়া হযরত রাসুলাল্লাহ ! তারা তো কখনো এমন এমন কথা বলে- যা মাঝে মাঝে সঠিক হয় । তখন হযরত রাসুল ( স ) বললেন, যা ঠিক হয়ে থাকে তা তো আল্লাহর পক্ষ হতে ( আসমানে এ সম্পর্কে আলোচনা হয় ) । ( গোপন কথা চুরিকারী ) জ্বিন তা হঠাৎ লুফে নেয় এবং নিজ বন্ধুর কানে তুলে দেয়, যেভাবে এক মোরগ অন্য মোরগের কানে পৌছে থাকে । এটা ঠিক করে । অতঃপর সেই গণক ঠাকুর বা জ্যােতিষী এ কথার সাথে শতাধিক মিথ্যা জড়িয়ে মানুষের কাছে বর্ণনা করে । ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৫৭৮০









মহান আল্লহর কাছে অধিক প্রিয় যিকর
নবী করীম (স) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কালাম চারটি, তার যে কোনোটি দিয়েই তুমি শুরু করোনা, তাতে তোমার কিছু আসে যায় না । কালাম চারটি হলো- সুবহানাল্লহি, ওয়াল হামদু লিল্লাহি, ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার ।



ছোঁয়াচে বলতে কিছু নেই

হযরত আবু হুরায়রা ( রা ) বলেন, হযরত রাসুল ( স ) ইরশাদ করেছেন, ছোঁয়াচে বলতে কোন রোগ নেই । সফর মাস এবং পেঁচার মাঝেও অমঙ্গল বলতে কিছু নেই । তখন এক বেদুঈন বলল, ওগো আল্লহর হযরত রাসুল ( স ) ! তা হলে আমার উটগুলোর এ অবস্হা হয় কেন ? এগুলো থাকে চারণভূমিতে । দেখতে বন্য হরিণের মত সুন্দর ছিল। অতঃপর সেখানে চর্মরোগে আক্রান্ত একটি উট আমার উটগুলোর মাঝে ঢুকে পড়ে । এরপর সেগুলোও চর্মরোগ আক্রান্ত হয়ে পড়ে । তখন আল্লহর হযরত রাসুল ( স ) বললেন, তা হলে প্রথম উটটির মাঝে রোগ সৃষ্টি ক্রল কে ? ( সহীহ্ বোখারী শরীফ ) হাদিসঃ ৫৩০৮








উপযুক্ত বয়সে সন্তানকে বিয়ে দিতে হবে
"আল্লাহ যাকে সন্তান দান করেছেন তার কাজ হলো, তার ভালো নাম রাখা, তাকে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া এবং যখন সে বালেগ হবে তখন তার বিয়ে দিয়ে দেয়া । বালেগ হবার পর যদি সে সন্তানের বিয়ে না দেয় এবং কোন গুনাহতে লিপ্ত হয় তাহলে তার শাস্তি পিতার উপর আরপিত হবে ।" ( বায়হাকী )
অন্য এক স্হানে নবী করীম (স) ইরশাদ করেছেন, তাওরাতে লিপিবদ্ধ আছে, " যে ব্যক্তি কন্যার বয়স ১২ বছর হলো এবং সে কোন খারাপ কাজ করে বসলো তাহলে তার সে খারাপ কাজের শাস্তি পিতার উপর আরপিত হবে ।"





ধর্মভীরু স্ত্রী অমূল্য নেয়ামাত
সমাজ সভ্যতার মূল ভিত্তি হচ্ছে পারিবারিক ব্যবস্হা । পরিবার থেকে মানুষ শিশু বয়সে যা শেখে, যে ধরনের শিক্ষা লাভ করে আমৃত্যু মানুষের জীবনে তা ক্রিয়াশীল থাকে । আর শিশুর প্রথম শিক্ষা তার মা । এ কারণে নেপো্লিয়ন বলেছেন, " আমাকে একটি ভালো মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি ভালো জাতি উপহার দেবো ।" মায়ের স্বভাব চরিত্র যদি উত্তম হয়, মা যদি ধার্মিক হয় তাহলে তার কোলে যে সন্তান লালিত হবে, সন্তান কিছুটা হলেও মায়ের গুণের অংশীদার হবে । সুতরাং বিয়ের সময় পাত্রীর যে সমস্ত গুনাবলী দেখা জরুরী, তার মধ্যে পাত্রী ধার্মিক কি না সেটা দেখাই জরুরী । পাত্রীর মধ্যে অন্যন্য গুনাবলী অল্প মা্ত্রায় যদি থাকে আর সে পাত্রী যদি আল্লাহ ভীরু হয় তাকেই বিয়ে করতে হবে । বিশ্ব নবী (স) বলেন, "চারটি গুণের কারণে একটি মেয়েকে বিয়ে করার কথা বিবেচনা করা হয়ঃ তার ধন-মাল, তার বংশ গৌরব- সামাজিক মানমর্যদা, তার রূপ ও সৌন্দর্য এবং তার দ্বীনদারী । কিন্তু তোমরা দ্বীনদার মেয়েকেই গ্রহণ কর ।"









স্বপ্ন দেখলে আপনে কি করবেন

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আালইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নেক স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর বিভ্রান্তিমূলক স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে, অতএব যখন তোমাদের মধ্যে কেউ স্বপ্নে এমন কিছু দেখে যা তার কাছে ভালো লাগে সে যেনো তা তার প্রিয় ব্যক্তি ছাড়া অপর কারো কাছে ব্যক্ত না করে । আর সে যদি স্বপ্নে এমন কিছু দেখে যা সে অপছন্দ করে, তখন সে যেনো তা কারো কাছে না বলে । বরং তার বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলে বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে, আর আশ্রয় প্রার্থনা করে ঐ অনিষ্ট হতে যা সে দেখেছে । (আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে তিনবার ) সে যেনো তা কারো কাছে না বলে । এরপর যে পার্শ্বে সে শুয়েছিলো তা পরিবর্তন করে । ( বোখারী, মুসলিম )

-------------------------------------------------------------------------------

অনুগল্প
ছেলেটি ছড়া শুনাচ্ছিলো মেয়েটিকে -
বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর
নদেয় এলো বান
শিবঠাকুরের বিয়ে হবে
তিন কন্যা দান। ।
মেয়েটি বলল তিন কন্যা অসম্ভব । । । ছেলেটি বলল সম্ভব সম্ভব। । । কারণ মানব চরিত্র বিচিত্র আর দেবতা চরিত্র আরো বিচিত্র । বুঝলেন দেবী । । আজও হাঁটছে মেয়েটি। । । ঐ যে দূরে হাঁটছে ছেলেটি । পাশে এক নতুন কন্যে। ছেলেটি ছড়া শুনাচ্ছে মেয়েটিকে- বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর............



মায়ের সম্মান নিয়ে হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হৃদয় বিদারক ঘটনা :
একদিন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নবীজি (সা.) এর নিকট এসে কাঁদছেন। নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হুরায়রা তুমি কেন কাঁদছ? জবাবে আবু হুরায়রা বললেন, আমার মা আমাকে মেরেছেন। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কেন তুমি কি কোন বেয়াদবি করেছ?
আবু হুরায়রা বললেন, না হুজুর কোন বেয়াদবি করিনি। আপনার দরবার হতে বাড়ি যেতেআমার রাত হয়েছিল বিধায় আমার মা আমাকে দেরির কারণ জিজ্ঞেস করায় আমি আপনার কথা বললাম। আর আপনার কথা শুনে মা রাগে আমাকে মারধর করল আর বলল, "হয়ত আমার বাড়ি ছাড়বি আর না হয় মোহাম্মদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবার ছাড়বি।"

আমি বললাম, "ও আমার মা। তুমি বয়স্ক মানুষ। তোমার গায়ে যত শক্তি আছে তত শক্তি দিয়ে মারতে থাকো। মারতে মারতে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দাও। তবুও আমি আমার রাসুলকে ছাড়তে পারবো না।"
তখন রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "তোমার মা তোমাকে বের করে দিয়েছেন আর এজন্য আমার কাছে নালিশ করতে

এসেছ? আমার তো এখানে কিছুই করার নেই।"
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেন, "হে রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি আমার মায়ের জন্য এখানে নালিশ করতে আসিনি।"
রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, "তাহলে কেন এসেছ?"
আবু হোরায়রা বললেন, আমি জানি আপনি আল্লাহর নবী। আপনি যদি হাত উঠিয়ে আমার মায়ের জন্য দোয়া করতেন, যাতে আমার মাকে যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন।
আর তখনই সাথে সাথে রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত উঠিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, "হে আল্লাহ! আমি দোয়া করি আপনি আবু হোরায়রার আম্মাকে হেদায়েত করে দেন।”
রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেন আর আবু হোরায়রা বাড়ির দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। পিছন থেকে কয়েকজন লোক আবু হোরায়রার জামা টেনে ধরল এবং বললো, হে আবু হোরায়রা! "তুমি দৌড়াচ্ছ কেন?"
তখন আবু হোরায়রা বললেন, "ওহে সাহাবীগণ তোমরা আমার জামা ছেড়ে দাও। আমাকে দৌড়াতে দাও।"
"আমি দৌড়াইতেছি এই কারণে যে, আমি আগে পৌঁছলাম নাকি আমার নবীজির দোয়া আগে পৌঁছে গেছে।"
হযরত আবু হুরায়রা দরজায় ধাক্কাতে লাগলো। ভেতর থেকে তার মা যখন দরজা খুললো তখন আবু হুরায়রা দেখলেন তার মার সাদা চুল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে। তখন মা আমাকে বললেন, "হে আবু হুরায়রা! তোমাকে মারার পর আমি বড় অনুতপ্ত হয়েছি, অনুশোচনা করেছি। মনে মনে ভাবলাম আমার ছেলে তো কোন খারাপ জায়গায় যায়নি। কেন তাকে মারলাম? আমি বরং লজ্জায় পড়েছি তোমাকে মেরে। হে আবু হুরায়রা! আমি গোসল করেছি। আমাকে তাড়াতাড়ি রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে নিয়ে চল।"
আর তখনই সাথে সাথে আবু হুরায়রা তার মাকে রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে নিয়ে গেলেন। আর তার মাকে সেখানেই কালিমা পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন।
"পিতা মাতা জান্নাতের মাঝের দরজা। যদি চাও, দরজাটি নষ্ট করে ফেলতে পারো, নতুবা তা রক্ষা করতে পারো।" সুবাহান আল্লাহ! [তিরমিজি
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
বছর দশ এক আগে; আত্মীয়দের ১০-১২ জনের একটা দল ঘুরতে গিয়েছিলাম বসুন্ধরা-বসুমতি দেখতে!!! এখনকার মতন ছিলোনা তখন বসুন্ধরা; যতদূর চোখ যায় শুধু বালি আর বালি, মাঝে মাঝে কাশফুলের ঝাড়!!! পিচঢালা ঝকঝকে রাস্তা একেবেকে চলে গেছে বহুদূর; এতই পরিষ্কার যে চাইলে দিব্বি শুয়ে পরা যায়!!! বড় একটা গাছের নিচে এক বয়স্ক লোক আঁখ বিক্রি করছিলেন; আমরা মজা করে আঁখ খেলাম সবাই। আমাকে আর আমার বোন কে কাছে ডেকে দুজনকে ৫ টাকা করে দিলেন চকলেট খেতে!!! আশ্চর্যের বিষয় হল তিনি আমাদের থেকে এক পয়সাও দাম নিলেন না আঁখের!!!

আজব না বিষয়টা???
তার ছেলের চেহারা নাকি অবিকল আমার মতন ছিল; পানিতে ডুবে মরে গিয়েছিল ছেলেটা!!! আমাকে দেখে তার ছেলের কথা মনে পড়ল; ছেলের থেকে আঁখের দাম কিভাবে নেবে সে ???
এমন ঘটনা আমার জীবনে ফিরে ফিরে এসেছে বহুবার!!!
পুরনো বইর এক দোকানদার একবার অনেক গুলো বই এমনি এমনি দিয়ে দিয়েছিলেন আমাকে, আমার কথা বলার ধরন তার এক্সিডেন্টে মরে যাওয়া ভাইর মতন বলে!!!
এক ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকানদার চায়ের দাম নেয়নি; আমার হাঁসি তার মেয়েটার মতন তাই!!!
আমি কি তবে জাতিস্মর???
অনেক গুলো মানুষ মিলে সাইদ হয়ে জন্মেছি??
মাঝে মাঝে চিন্তা করে অবাক হই!!!
----------------------------------------------------------------------

ভারতের কেরালায় সাহলা নামের এক যুবতীর বিয়ে ঠিক হয়েছে; দুই পরিবারেই খুশির আমেজ :) কিন্তু ঝামেলা বেঁধে গেল বিয়ের মোহরানা নির্ধারণ করার সময়; কারণ সবাই টাকা বা স্বর্ণ মহরানা হিসেবে দিয়ে এবং নিয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু সাহালা মোহরানা হিসেবে চাইলেন তার পছন্দের ৫০ টি বই!!!! হাতে লিস্ট ধরিয়ে দিয়ে বই না পেলে সে বিয়ে করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিল!!!
বিয়ে হচ্ছে তার; অথচ মোহরানা দেয়া নেয়া হবে পরিবারের খুশি মতো, এটা কেমন কথা!!!

অগত্যা লিস্ট ধরে অনেক খুঁজে খুঁজে সেই ৫০ টি বই মোহরানা হিসেবে দিলেন ছেলের পরিবার; অবশেষে বিয়ে হল সাহলার
সাহলা নতুন জামাইকে কবিতা পড়ে শুনায়; নতুন একটা সুন্দর বুকশেলফ কিনে দিয়েছে তার বর, এক তাক নতুন বই নিয়ে সুখের সংসার সাহলাদের
__________________________
আমরা সবাই কেন এমন কিউট হইনা???

----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন,লেখকের এই একটা Request:
সুমি এবার নবম শ্রেণীতে পড়ে, প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় ১টা ছেলে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।
সে লক্ষ করে,ছেলেটির নাম মুরাদ।
.
মুরাদ প্রায় ১ বছর ধরে ভালবাসে সুমিকে,কিন্তু
বলতে পারে না।
কারণ সুমি খুব ধনী পরিবারের মেয়ে।আর মুরাদ গরিবের ছেলে!
.
আজ ১৪ ফ্রেব্রয়ারি।মুরাদ সাহস করে বললো,
"আমি আপনাকে ভালবাসি"!
জানি আপনি আমায় ভালবাসতে পারবেন না।
কারণ আমি গরিব" কথাগুলো বলে মুরাদ চলে গেল।
.
এই ভাবে ১টা বছর চলে গেল।এখন দশম শ্রেণীতে
সুমি।সে লক্ষ করে আজও মুরাদ তার জন্য রাস্তায়
অপেক্ষা করে।সুমি আস্তে আস্তে মুরাদের প্রেমে পড়ে যায়!
তাই সুমি বলে দিলো তার মনের কথা।
দুজনের প্রেম চলতে লাগে ১ বছর।এই ১ বছরের মাঝে দু'জন কখনো একাকি দেখা করেনি,
কেউ কারো হাত ধরে রাস্তাতেও চলেনি।
S.S.C পরীক্ষার পড়ে সুমির বিয়ে ঠিক হয়ে যায়।
কিন্তু সুমি বিয়েতে রাজি না।কারণ সুমি মুরাদকে ছাড়া আর কাউকে নিজের স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে না।
.
সুমি ফোন দিলো মুরাদ কে,
-হ্যালো মুরাদ?
-হ্যা বলো!
-তুমি আজ রাতে আমাকে পালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে?
-কেন? হঠাৎ করে কি হল?
-আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,এই বলে সুমি কেঁদে
দিলো।
-কেঁদোনা সুমি আমি তোমাকে নিয়ে যাব!
.
ওরা ঠিক তাই করলো। সকালে দুজন বিয়ে করে মুরাদের বাসায় আসলো।
.
এদিকে সুমির পরিবার সব জেনে গিয়ে মুরাদ এর
নামে ও তার পরিবারের নামে মামলা করলো!
সুমির জবানবন্ধির কারণে কোন কিছু হলো না মুরাদ ও তার পরিবারের।সুমির বাবা সুমিকে উদ্দেশ্যে বলল, "আজ থেকে আমার কোনো মেয়ে নেই। ".
সুমির নামে ব্যাংকে ২ লক্ষ টাকা ও জমি ছিল,
তা সব তার বাবার নামে করে দিল।মুরাদ সুমিকে
বলল যে,সুমির বাবার টাকার প্রতি তার কোন লোভ নেই।
.
ভালো যাচ্ছিলো তাদের জীবন।সংসার ৭ মাস।সুমি গর্ভবতীভ তার পেটে ৩ মাসের বাচ্চা।একদিন তার কাকা এসে বলে, "মুরাদ,সুমির মা খুব
অসুস্থ সুমিকে দেখতে চাইছে,আমি দু'দিন পর ওকে দিয়ে যাব।
সুমি বলল, "আমি মুরাদ কে ছাড়া যাব না!"
মুরাদ বলল,"যাও দুদিন পরই তো চলে আসবে।"
অনেক বুঝিয়ে রাজি হয় সুমি।
সুমি অনেকক্ষণ ধরে মুরাদকে জরিয়ে ধরে।
মুরাদ সুমির কপালে চুমা দিয়ে বলে, "পাগলী বউ আমার।"
তারপর সুমি বাপের বাড়ি এসে যা হলো তা কল্পনা
করা যায় না।সুমির বাবা সুমিকে দিয়ে জোর করে
মুরাদ কে ছাড়াছাড়ি করিয়ে দেয়।জোর করে
ডাক্তারের কাছে নিয়ে অজ্ঞান করে তার বাচ্চা
নষ্ট করে দেয়।ডাক্তার তার মা-বাবাকে বলে যে
তাকে রেষ্টে রাখতে।
.
আজ দুদিন সুমি কারো সাথে কথা বলে না,একা একা কাঁদে!
সুমির ভাই,বাবা কেউ বাসায় নেই।সুমির মা পাশের বাসায় গেছে।সুমি বাসায় একা নিজের রুমের দরজা দিয়ে হাত কেটে রক্ত দিয়ে লিখলো, "এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে একজন আছে সে আমার মুরাদ।
মা তুমি একটা মেয়ে হয়ে আমার স্বামীর ঘর ছাড়া
করলে? তুমি এক মা হয়ে আমাকে মা হওয়া থেকে
বঞ্চিত করতে পারলে? এতটুকু লিখেই সুমি আত্মহত্যা করে!!!
.
হয়তো গল্পটি পড়ে আপনার অদ্ভুদ একটা অনুভূতি হবে,আর হ্যা এটা সত্যিকারের গল্প।





Woodland Tree Peel and Stick Giant Wall Decals

  RoomMates Patina Vie Woodland Tree Peel and Stick Giant Wall Decals                 Product Description Walls instantly come...